বিল্টু চৌধুরী নদিয়া (Nadia) জেলার ধুবুলিয়া জন্মস্থান। কর্মসূত্রে শিলিগুড়িতে (Siliguri) আসা। বর্তমানে শিলিগুড়ির রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই বিল্টু পিরিয়ড ও মেয়েদের নানান রোগ নিয়ে সচেতনতা করেই চলেছেন। করোনাকালেও দমেননি বিল্টুবাবু। পাশে স্ত্রীকে রেখে তিনি একটু লক্ষ্যে স্থির ছিলেন। এদিকে শিলিগুড়ির এই ছেলের কৃতকার্যে খুশি গোটা শহর। বিল্টুবাবুর কথায়, 'আমরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে রয়েছি। আর তার মূল উদাহরণ হল পিরিয়ড। মা-বোনেরা আজও খোলামেলা ভাবে এবিষয়ে আলোচনা করতে দ্বিধাবোধ করেন। যেখানে সাধারণ সর্দি-কাশি-পেট ব্যাথার থেকে আলাদা কিছু না এই পিরিয়ড।' তিনি বলেন, 'সমাজ এখনও মেয়েদের বিষয়ে পিছিয়ে। কাজ করতে গিয়ে উপলব্ধি করেছি। আমাদের শহরতলী ছাড়িয়ে গ্রামগুলিতে এখনও সেই শিক্ষা বা সচেতনতার আলো পৌঁছাতে পারেনি। তাই আমি এই উদ্যোগ নিয়েছি।'
advertisement
বিল্টুবাবু নিউজ ১৮ লোকালকে বলেন, 'আমি এখনও পর্যন্ত গোটা শিলিগুড়িতে ২৩টি পাবলিক টয়লেটে মা-বোনেদের জন্যে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন প্যাডবক্স (pad box) বসিয়েছি। এরপরই আমাকে এই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ভীষণ ভালো লাগছে।' তিনি আরও বলেন, 'ছোট-বড় অনেক সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানেই আমাকে অনেক সম্মানিত করা হয়েছে। অনেক স্বীকৃতিও দেওয়া হয়েছে। তবে এযাবৎকালের আমার কাছে সবচাইতে বড় স্বীকৃতি হল এটি।'
বিল্টুবাবুর স্ত্রী তনুশ্রী চৌধুরী নিউজ ১৮ লোকালকে (News 18 local) বলেন, 'আমার স্বামী এর আগেও বহু জায়গা থেকে সম্মানিত হয়েছেন। তবে এই সম্মানটির পরিসরটা অনেকটাই বড়। তাই ভালোও অনেকটা লাগছে।' তনুশ্রীদেবী আরও বলেন, 'আমরা মধ্যবিত্ত ঘরের। তাই আমাদের পরিসরটাও যথেষ্ট কম। সংসার চালিয়ে সেভিংসের খাতায় জমানো অর্থটাও অনেকটাই কম। সেইটুকু দিয়ে সমাজের জন্য আমার স্বামী বিশেষ করে মহিলাদের জন্য যা করছে তাতে আমি ওর সঙ্গে আছি। যেমনটা প্রথম থেকে ছিলাম। ওর এইসব কর্মকাণ্ডে আমি যেমন গর্বিত, তেমনই ওর সহযোদ্ধাও আমি।'
প্রসঙ্গত, করোনাকালে বন্ধ হয়ে যাওয়া চা-বলয়ের আর্ত পরিবারের পাশেও খাওয়ার নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ির প্যাডম্যান (pad man) বিল্টু চৌধুরী। শিলিগুড়ির অদূরে সুকনা চা-বাগান এলাকার মহিলাদের হাতে র্যাশনের পাশাপাশি স্যানিটারি প্যাড ও মাস্ক তুলে দেন বিল্টুবাবু।
ভাস্কর চক্রবর্তী