এমন এক স্কুল হল শিলিগুড়ির ব্রাইট আকাদেমি। এই প্রি-স্কুলের তরফে কখনও 'সবুজবন্ধু ও সবুজ দিনের' মাধ্যমে গাছ ও সবুজায়ন সম্পর্কে সচেতনতা, কখনও আবার 'রং দিবসের' মাধ্যমে বিভিন্ন রং সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি আবার কখনও 'সাণ্ডউইচ ডে'র মাধ্যমে মজার ছলে নিজের অভিভাবকদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে বাড়িতে অল্প সময় ভাগ করে নিচ্ছে এই খুদেরা।
advertisement
এ দিন ব্রাইট আকাদেমির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষাল বলেন, 'একজন শিক্ষক হিসেবে আমরা সবসময় চাই আমাদের ছাত্রছাত্রীরা সুস্থ সুন্দর সতেজ থাকুক। ওদের প্রতিদিন গতানুগতিক ধারায় পড়াশোনাতে বিতৃষ্ণা চলে এসেছে তা আমরা উপলব্ধি করতে পারছিলাম। তাই আমরা ক্লাসের মাঝে এরম অ্যাক্টিভিটির মাধ্যমে শিশুগুলো মানসিক চাপ ও অবসাদগ্রস্ত যাতে না হয়ে পড়ে তার চেষ্টা করে চলেছি।'
সন্দীপবাবু আরও বলেন, 'ছোটো শিক্ষার্থীদের জন্য স্যান্ডউইচ তৈরী একটি অন্যতম সেরা রান্নার ক্রিয়াকলাপ। ওঁরা যেমন এটি খেতে পছন্দ করে, তেমনই এটি স্বাস্থ্যকর, সুস্বাদু এবং এটি নিজেই তৈরি করা খুব সহজ। এটি মাথায় রেখে, ব্রাইট আকাদেমির কেজি ক্লাসের শিক্ষার্থীরা শিক্ষিকাদের সহায়তায় স্যান্ডউইচ তৈরি করার একটি নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করে। এই ক্রিয়াকলাপের মূল উদ্দেশ্যটি ছিল শিশুদের রান্নার ক্ষেত্রে একটি নতুন আগ্রহ শেখানো এবং তাদের নিজেদের যেকোনও সময় খাওয়ার প্রস্তুত করার আত্মবিশ্বাস তৈরি করা। বাচ্চারা মুখরোচক স্যান্ডউইচ, মেয়োনেজ, শসা, পেঁয়াজ এবং টমেটোর টুকরো দিয়ে অতি উৎসাহ ও আনন্দের সঙ্গে এটা প্রস্তুত করে। যা দেখে আমাদেরও খুব ভালো লাগে।'
অন্যদিকে, মনোবিদ আভা আগরওয়াল বলেন, 'বর্তমান অতিমারিতে আমরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনওভাবে জর্জরিত। আর সবথেকে বেশি জর্জরিত যদি কেউ হয়ে থাকে তা হল শিশুরা। প্রি-স্কুল বা কিন্ডারগার্টেনে যেসব কচিকাঁচারা পড়াশোনা করত, তাঁরা আজ অনলাইনে ক্লাস করছে। ফলে তাদের মানসিক চাপ যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। সেইসঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে তাদের অভিভাবকদের অতিরিক্ত দায়িত্ব। সুতরাং অনেক সময় আমরা যারা অভিভাবক তারা নিজেদের ওপর সংযত থাকতে পারিনা। আমি সকল বাবা-মাকে একটি কথাই বলব আপনারা একটু নিজের সন্তানের ওপর যত্নশীল হন।'
আভাদেবী আরও বলেন, 'মা-বাবারা একটু তাদের সন্তানের প্রতি যদি ধৈর্যশীল হয়, তবে শিশুরা অনেকাংশে মানসিক চাঙ্গা থাকবে। দ্বিতীয়ত, প্রত্যেক বাবা-মাকে একটি রুটিন বা টাইমটেবিল তৈরি করতে হবে। যার ফলে তাঁরা যেরকম একটু অবসর সময় পাবেন, বাচ্চারাও তেমন পাবে। তৃতীয়ত, ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পড়াশোনার পাশাপাশি একটি বিষয় মনে রাখতে হবে খেলা বা বিভিন্ন এক্টিভিটির মাধ্যমে যদি পাঠদান করা যেতে পারে। এর ফলে শিশুদের মনে পড়াশুনার প্রতি একটি অতিরিক্ত টান কাজ করবে। পড়াশোনা নিয়ে কোনও চাপ বা পড়াশোনাকে কখনোই ভার মনে হবে না।\'