পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়াতে পানিফলের চাষ লক্ষ্য করা যায়। তবে বর্তমানে পূর্ব মেদিনীপুরের অন্যান্য জায়গাতেও পানি ফলের চাষ শুরু হয়েছে। নন্দকুমার ব্লকে ধান চাষের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এই পানিফল চাষ। ধান চাষের চেয়ে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কম থাকায় এই পানিফল চাষ লাভজনক। বিঘা প্রতি পানিফল চাষে চাষে লাভের পরিমাণ ধান চাষের চেয়েও বেশি।
advertisement
পানিফল উপকারী ঔষুধীগুণে ভরপুর। প্রচুর পরিমাণে জল থাকায় পানিফল শরীরে জলের ঘাটতি পূরণে গুরুত্ব পূর্ন ভূমিকা রাখে। পানিফল শরীরের রক্তচাপ (Blood Pressure) নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পানিফল প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরি যোগান দেয় শরীরে। ধান চাষের জলা জমি ও জলাশয়ে চাষ হয় বলে একে পানিফল বলা হয়। পানিফলের আরেকটি নাম পানি শিঙাড়া। কারণ শিঙাড়ার মতো দেখতে। ইংরাজিতে একে ওয়াটার চেস্টনাট (water chestnut) বলা হয়। পানিফলের বৈজ্ঞানিক নাম ট্রাপা নাটানস (Trapa Natans)।
নন্দকুমারের বলরামপুর, ইড়খা ও কোলসর সহ বিভিন্ন গ্রামের জলাজমিতে ধানের পরিবর্তে পানিফল চাষ করছেন অনেক চাষি। এরকমই এক চাষি মধুসূদন মাইতি জানায়, "বর্ষাকালে আমন চাষের পরিবর্তে পানিফল চাষ বেশি লাভজনক। বর্ষাকালে অতিবৃষ্টিতে ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে আমন ধানের চাষ করতে সমস্যা হয়।
আবার ধান রোপনের পরও অতিবৃষ্টিতে ধান গাছ পচে নষ্ট হয়ে যায়। ধান চাষের ক্ষতি হয়। কিন্তু পানি ফল চাষে অতিবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বিঘা প্রতি পানিফল চাষে খরচ হয় প্রায় তিরিশ হাজার টাকা। আর ফসল পাওয়া যায় চল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকার। পানিফল চাষে বিঘা প্রতি লাভ হয় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।"
আষাঢ় মাসের শুরুতেই পানিফল চাষ করা হয়। আশ্বিন মাসের শুরু থেকে অগ্রহায়ন মাসের শেষ পর্যন্ত ফসল পাওয়া যায়। নন্দকুমারের বিভিন্ন গ্রামে ধান চাষের পরিবর্তে এই চাষ লাভজনক হওয়ায়। ধীরে ধীরে এই পানিফল চষে জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ধান চাষে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকায় পানিফলের চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে নন্দকুমারের অনেক চাষী।
সৈকত শী