রবিবার ফিনিক্স আর্ট অ্যান্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন, ক্যানভাস ও তসবীরের আয়োজনে শিলিগুড়িতে 'রঙিন তারার দেশ'। শিলিগুড়ির বুকে কচিকাঁচাদের প্রতিভা ও অঙ্কনশৈলীকে কুর্ণিশ জানাতে এবং আগামীতে তাদের উৎসাহ দিতে দু'দিনব্যাপী এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এই প্রদর্শনীতে ৪২জন ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করে। শিলিগুড়ির রামকিঙ্কর প্রদর্শনী কক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন ফাদার লেবলন্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছন্দা দাস, জার্মালস অ্যাকাদেমির প্রধান শিক্ষক এজাজ মহম্মদ সাদিক, জার্মালস অ্যাকাদেমির শিক্ষক সালিম জন সাদিক, প্রপ আর্ট জোনের তরফে লিটন সাহা এবং অন্যান্যরা। দু'দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে কৃতীদের সম্মানিত করা হয় এবং অংশগ্রহণকারীদের শংসাপত্র প্রদান করা হয়।
advertisement
শিলিগুড়ি জার্মালস্ একাডেমির শিক্ষক তথা তাসবির আর্ট এন্ড ক্রাফট স্কুলের প্রধান চিত্রশিল্পী সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় নিউজ ১৮ লোকালকে (News 18 Local) বলেন, 'করোনাকালে সবকিছু বন্ধ হয়ে পড়েছিল। জীবনটাই প্রায় থমকে গিয়েছিল। এই শিশুগুলো তার যে চিন্তা করার মনটাই হারিয়ে ফেলতে বসেছিল। অনলাইনের মাধ্যমে কিছুটা হলেও তাদের মনের ভাবকে আমরা বুঝতে পেরে সেটাকে প্রকাশ করার একটা জায়গা করে দিতে পেরেছিলাম ঠিকই। কিন্তু অনলাইনে সবটা পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই চলতি বছর আমরা তিনটি আর্ট এন্ড ক্রাফটের তরফে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। যাতে ওই ছোট শিশুগুলো ফের নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে।'
একই সুরে শিলিগুড়ি ফাদার লেবলন্ড স্কুলের শিক্ষক তথা ফিনিক্স আর্ট এন্ড কালচার ফাউন্ডেশনের প্রধান অর্ঘ্য ভট্টাচার্য বলেন, 'ছোট ছোট বাচ্চাদের উদ্বুদ্ধ করতেই এই আয়োজন। সম্পূর্ণ অব্যাবসায়িক আয়োজন। করোনাকালে এই বাচ্চাগুলো যে মানসিক কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিনগুলি কাটিয়েছে সেই দিনগুলির ব্যথা ভোলাতেই 'রঙিন তারার দেশ' এই আর্ট এক্সিবিশন।'
অর্ঘ্যবাবু আরও বলেন, 'রঙিন তারার দেশ আদতে আমাদের কাছে শুধু একটা আর্ট এক্সিবিশন নয়। ওই খুদেগুলোর দেখা খোলা চোখের একটা স্বপ্ন। আমরা যখন বড়রা বড় বড় আর্ট এক্সিবিশনের আয়োজন করি, তখন এই খুদেগুলো এসে দেখে ঠিকই। অংশগ্রহণ করতে পারে না। স্বভাবতই মনের মধ্যে একটা কষ্ট তাদের থেকেই থাকে। কিছুদিন আগেও আমাকে আমারই এক ছাত্র বলে বসল, স্যার আপনাদের আঁকা এক্সিবিশন হয় আমাদের আঁকা এক্সিবিশন হয় না কেন? সত্যিই তো এইভাবে তো কখনও দেখিনি! তারপরই বলতে পারেন আমাদের এই চিন্তা ভাবনা!'
এদিন এই আর্ট এক্সিবিশনের সবথেকে খুদে অংশগ্রহণকারী বছর সাতের দ্বিতীয় শ্রেণীর সম্পূর্ণা চট্টোপাধ্যায়। সে আবার ছুটোছুটি করতে করতে আমাদের বলে, 'আমি মধুবনী হাতি আঁকিয়েছি। অনেকদিন আঁকিয়ে খুব ভালো লাগছে। বাড়িতে বসে অনলাইনে শুধু দেখে দেখে আঁকাতে ভালো লাগত না। আজ আবার সকলের সঙ্গে দেখা করে খুব মজা করেছি।'
Vaskar Chakraborty