স্থানীয় সূত্রে খবর , গত মঙ্গলবার হাওড়ার ডোমজুড়ে (Domejur) নতুন মসজিদ সংলগ্ন কড়লা সরদারপাড়া - নতুন পাড়া এলাকায় কয়েকজন যুবকের চোখে পড়ে অদ্ভুত এক প্রাণীর । এলাকায় বহুবছর কোন বাঘরোল দেখতে না পাওয়ায় সেই প্রাণীটিকে বাঘ (Tiger) ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সেই যুবকেরা । তড়িঘড়ি সেই স্থান থেকে পালিয়েও যায় তারা । সেই দিন রাত্রিবেলা এলাকার একটি সিসিটিভি ক্যামেরাতেও ধরা পড়ে সেই বাঘরোলের ছবি । বিপন্নপ্রায় এই প্রাণীর হাঁটাচলা প্রায় বাঘের মতোই বলে সিসিটিভিতে দেখা চিত্রে তাকে বাঘ ভেবে ভুল করেন স্থানীয়রাও । এরপরই এলাকায় শুরু হয়ে যায় বাঘের গুজব ।
advertisement
আর এই গুজবের আগুনেই ঘি ঢালার মতো কাজ করে জেলার বেশ কয়েকটি অনলাইন পোর্টাল । তাদের ভিডিওগুলিতে স্পষ্টভাবে প্রাণীটিকে বাঘ বা সিংহের সাথে তুলনা করা হয় । চটকদার ক্যাচলাইন বানানোর উদ্দেশ্যে অনেক জায়গায় প্রাণীটিকে বাঘ বলেও সম্বোধন করা হয় । ফলে আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই এলাকার মানুষ । রাত্রিবেলা লাঠিসোটা নিয়ে জঙ্গলে প্রাণীটিকে খুঁজতেও শুরু করেন তারা । আর এই নিয়েই বেজায় চটেছেন পরিবেশকর্মীরা ।
জেলার পরিবেশপ্রেমী সংগঠন হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের সম্পাদক শুভদীপ ঘোষ এই অনলাইন সংবাদ মাধ্যম গুলি শিরোনামগুলির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন । তিনি বলেন , বন্যপ্রাণী নিয়ে সচেতনতা কম থাকায় , গ্রামীণ এলাকায় এমনিতেই বন্যপ্রাণ রক্ষা করতে গেলে নানান চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় তাদের । তার উপর এই ধরনের শিরোনাম এলাকার মানুষদের ভয়ে আতঙ্কিত করার পাশাপাশি , সেই বিপন্নপ্রায় প্রজাতির বন্যপ্রাণীটির প্রাণ সংশয়েরও সৃষ্টি করছে । এই নিয়ে বনদপ্তরের (Forest Department )কাছে তারা অভিযোগও জানিয়েছেন বলে জানালেন তিনি । বনদপ্তরের তরফ থেকে বাঘরোলটিকে উদ্ধার করার জন্য ইতিমধ্যে এলাকায় একটি খাঁচা বসানো হয়েছে । পাশাপাশি , এলাকার মানুষদের বাঘরোল সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলির পাশাপাশি মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছে বনদপ্তরও । The fishing cat project এর গবেষণা মূলক বুকলেট তুলে দেওয়া হয় মানুষ এর কাছে।
হাওড়া আরবানের রেঞ্জ অফিসার নির্মল মন্ডল জানান, " প্রাণীটি যে বাঘরোল-ই তা প্রমাণ করে দিচ্ছে সিসিটিভি চিত্রে পাওয়া ফুটেজ ও তার পায়ের ছাপ । বাঘের মতোই দেখতে হলেও এটি আকারে অনেকটাই ছোট । প্রাণীটির প্রধান খাদ্য মাছ । প্রাণীটির থেকে মানুষের কোন ক্ষতি হবার সম্ভাবনা তো নেই , উলটে চাষবাসের ক্ষতি করা ইঁদুর ও অন্যান্য ছোটখাটো প্রাণীদের খেয়ে বরং মানুষের উপকারই করে এরা । "
Santanu Chakraborty