বর্গী আমলের সময় থেকেই বীরভূমের (Birbhum News) এই গ্রামে এমন বিপুলসংখ্যক দুর্গা পুজোর আয়োজন করা হয়ে আসছে। এখানকার দুর্গাপুজোয় কোনওটি মৃন্ময়ী প্রতিমা, কোনওটি আবার পটের। গ্রামের বাসিন্দারা দাবি সংখ্যাটা ৩০ থেকে ৩২ হবে। দুর্গাপুজো যেখানে এত ব্যয়বহুল সেই জায়গায় মাত্র চার হাজার মানুষের বাসের একটি গ্রামে কেন এত বিপুলসংখ্যক দুর্গাপুজো হয়ে থাকে?
advertisement
আরও পড়ুন Bengal news| Nadia: একটি মাঠকে ঘিরে বিপুল ঝামেলা ৩ পাড়ার মধ্যে
এই বিপুলসংখ্যক দুর্গাপুজো যেখানে হয়, সেই গ্রামটি হল বীরভূমের অজয় নদের চরে অবস্থিত নানুরের চারকল গ্রাম। কয়েক হাজার বছর আগে অজয় নদের বালি জমতে জমতে এই গ্রামের উৎপত্তি হয়েছে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে এখানে বসবাস শুরু করে। গ্রামের লোকসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে দুর্গাপুজোর সংখ্যা (Durga Puja)। তবে এতগুলি দুর্গাপুজো কেন হয়ে থাকে তার কারণ জানতে গেলে নানান মতামত উঠে আসছে।
কৃপাসিন্ধু সেন নামে গ্রামের এক বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি জানিয়েছেন, "একসময় এই প্রতিমা ছিল সোনার। বর্গী আমল থেকেই এই পুজো শুরু হয়। পরে সেই সোনার মূর্তি চুরি হয়ে যায় এবং মৃন্ময়ী মূর্তি রূপে মায়ের পুজো হয়ে আসছে। গ্রামে যে পুজো রয়েছে তার মধ্যে বেশকিছু ক্ষেত্রে রয়েছে মূর্তি আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে রয়েছে পট।"
দীপক রায় চৌধুরী জানিয়েছেন, "অজয় নদের চরে হিন্দু তপশিলি এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে এই গ্রাম। চরের মধ্যে এই গ্রাম হওয়াই নাম চারকল। একসময় এখানে চোর ডাকাতের উপদ্রব ছিল। সেই সময় পূর্বপুরুষেরা এখানে একটি দুর্গা মন্দির তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। তখন থেকেই বংশপরম্পরায় পুজো হয়ে আসছে।"
আরও পড়ুন Bangla News|| স্ত্রী-সন্তানকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে ধর্নায় স্বামী! সাফ 'না' করে স্ত্রী জানালেন...
স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "চারকল গ্রাম হিন্দুপ্রধান গ্রাম হলেও এখানে বিভিন্ন পুজো অনুষ্ঠানে হিন্দু-মুসলিম সকলেই একত্রিত ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এমন নজির অন্য কোন গ্রামে আছে বলে জানা নেই। এই গ্রাম হল ভারতবর্ষের মধ্যে সম্প্রীতির অন্যতম গ্রাম। এমনকি এখানকার গ্রাম্য দেবী কনকেশ্বরী মায়ের পুজোতেও সব ধর্মের মানুষকেই একত্রিত হয়ে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।"
তবে এই গ্রামে একসঙ্গে এত সংখ্যক দুর্গাপুজো (Bengal, Durga Puja) কেন হয়ে থাকে সেই কারণ সঠিকভাবে কারোর পক্ষে বলা সম্ভব হয়নি। অধিকাংশ মানুষেরাই জানিয়েছেন ৫০০-৭০০ বছর আগে থেকে এই ভাবেই এই গ্রামে পুজো হয়ে আসছে। কিন্তু সঠিক কারণ কী তা তাদের জানা নেই। বংশপরম্পরায় রীতি মেনে পুজো করে আসছেন তারা।
মাধব দাস