বীরভূমের মহঃবাজারের ছবিলা খাতুন পড়াশোনা করেছেন সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে। পড়াশোনার পাশাপাশি অসাধারণ অধ্যাবসায় এনসিসি বিভাগের একজন পড়ুয়া হয়েও সকলের দৃষ্টি কেড়ে ছিলেন। পরে তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের একজন কনস্টেবল পদে নিযুক্ত হন।
এক সময় ছবিলা মহঃবাজার থানায় পোস্টিং ছিলেন। সেখানে পোস্টিং থাকাকালীনই মানুষের আপদে-বিপদে ছুটে যেতেন। আর তার এই তৎপরতা দেখে এলাকার বাসিন্দারা তাকে একজন পুলিশকর্মীর থেকে স্বেচ্ছাসেবিকা হিসেবেই বেশি গ্রহণ করতেন। ধীরে ধীরে তার সমাজসেবার প্রতি আগ্রহ আরও বাড়তে থাকে। অতি বৃষ্টিতে ছাদ হারানো হোক অথবা অন্যকোন ভাবে বিপদে পরা মানুষদের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি তার দুহাত উজার করে যতটা সম্ভব সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এছাড়াও একাধিক হোম সহ বিভিন্ন জায়গায় তিনি তার সাধ্যমতো সাহায্য দিয়ে আসছেন।
advertisement
বর্তমানে তিনি বীরভূম জেলা পুলিশের সাইবার সেল থানায় একজন লেডি কনস্টেবল হিসাবে পোস্টিং রয়েছেন। প্রতিনিয়ত তার এই সমাজসেবামূলক কাজ ধীরে ধীরে তাকে প্রচারেও নিয়ে এসেছে। সম্প্রতি তাকে ঘিরে একটি স্পেশাল ভিডিও পোস্ট করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ। এছাড়াও রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে তার এই কর্মকাণ্ডে পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র নাথ ত্রিপাঠী তাঁর ভূয়শী প্রশংসা করেন এবং তাঁকে সংবর্ধনা দেন। এছাড়াও ডিআইজির তরফ থেকে তাঁকে ৫০০০ টাকা অনুদান দেওয়া হয় তার এই মহৎ কর্মকান্ডের জন্য।
বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র নাথ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, "আমরা এমন একজন লেডি কনস্টেবল পেয়ে সত্যিই গর্বিত। এই রকম মানুষ কতজনকে পাওয়া যায় যিনি নিজের বেতন থেকেই এই ভাবে পাশে দাঁড়াচ্ছেন।"
তবে ছোট ছোট ভাবে মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ছবিলা খাতুনের আরও একটি বড় স্বপ্ন হল একটি বৃদ্ধাশ্রমের তৈরি করা। তিনি জানিয়েছেন, 'এটাই আমার জীবনের শেষ স্বপ্ন'। আর তার এই স্বপ্ন পূরণের জন্য বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র নাথ ত্রিপাঠী তাকে আশ্বস্ত করেছেন 'আমরা পুলিশের তরফ থেকেও তাঁর এই স্বপ্ন পূরণের জন্য যতটা সম্ভব সাহায্য করব।'