আরও পড়ুনবীরভূমের মহঃ বাজারের ১৮ পুতুলের দুর্গা
এই দুর্গা পুজো ২০০১ সালে বীরভূমের শান্তিনিকেতন (Birbhum, Bengal News) সোনাঝুরি জঙ্গলে শুরু হয়। পুজো শুরু করেছিলেন শিল্পী বাঁধন দাস। তিনি নিজেই এই পুজোর প্রতিমা তৈরি করতেন। তবে পুজোর উদ্বোধনের পরের বছর অর্থাৎ ২০০২ সালে তাঁর অকাল মৃত্যু হয়। তাঁর অকাল মৃত্যু হলেও পুজো থামেনি, বরং একই রকম ঐতিহ্য বহন করে চলে আসছে। শিল্পী বাঁধন দাসের পর এই পুজো করে আসছেন তার ছাত্ররা এবং স্থানীয় বাসিন্দারা।
advertisement
এখানকার এই দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2021) বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটি বৈশিষ্ট্য হল দেবী দুর্গার (Durga Idol) হাতে কোনরকম অস্ত্র থাকে না। অস্ত্র না থাকার মূলে রয়েছে শান্তির বার্তা দেওয়া। মূলত এই রীতি চালু হয় ২০০২ সাল থেকে। যখন বিশ্বজুড়ে তৈরি হয় অশান্তির বাতাবরণ ইরাক যুদ্ধকে কেন্দ্র করে। তখনই বাঁধন দাসের মধ্যে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এমন চিন্তা ভাবনা তৈরি হয়। তারপর তিনি সবার সাথে আলোচনা করে মায়ের হাতে অস্ত্রের বদলে তুলে দেন ফুল। আর এরপর থেকে এই ভাবেই এই পূজার প্রতিমা তৈরি হয়ে আসছে।
এই পুজোর অধিকাংশ কাজকর্ম করে থাকেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা (Tribal people)। বর্তমানে এই দুর্গা প্রতিমা তৈরি করার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন শিল্পী আশিস ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, "এখানকার দুর্গোৎসব হল বাঙালি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের সবথেকে বড় মিলনক্ষেত্র। এই সময়ে আদিবাসীদের থাকে বেল-বরণ, অন্যদিকে বাঙালিদের রয়েছে শারদ উৎসব। এই দুই উৎসবকে কেন্দ্র করে এখানে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। যে সকল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দূর-দূরান্ত থেকে বাউল শিল্পীরা এবং অন্যান্য শিল্পীরা এসে হাজির হন। পাশাপাশি থাকে আদিবাসীদের নাটক, গান ইত্যাদি। আর এইসবকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর এই দুর্গাপুজোর সময় সব ধরনের মানুষের এখানে ভিড় হয়।"
আরও পড়ুন এবারে পুজোয় 'মন ভোলানোর' জায়গা হতেই পারে লেপচাখা
শিল্পী আশীষ ঘোষ আরও জানিয়েছেন, "আমরা মূলত পাঁচ ধরনের প্রতিমা তৈরি করে থাকি। বাঁধন দাস থাকাকালীন দু'রকমের হয়েছিল। উড কার্ভিং এবং টেরাকোটা। এরপর আমরা আরও তিন রকমের মূর্তির (Durga Puja 2021) কাজ করেছি। একরকম হল লোহার, বাকি দু'রকম বাঁশ এবং মাটির। এই বছর এখানকার দুর্গোৎসব ২১ বছরে পা রাখলো। এবছর এখানকার মূর্তি ফাইবার গ্লাসের। বাকি প্যান্ডেলের সরঞ্জাম তৈরি হয়েছে উড কার্ভিংয়ে। সেখানেও রয়েছে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি, প্রাকৃতিক দৃশ্য ইত্যাদি।"
মাধব দাস