অন্ডালের কাজোড়া গ্রামের বাদ্যকর পাড়ার বাসিন্দা অনিতা বাদ্যকর। বিয়ে হয়েছে অন্যত্র। একমাস আগে ঘুরতে এসেছিলেন বাবার বাড়িতে। সঙ্গে এনেছিলেন নিজের একরত্তি মেয়েটাকেও। বাবার বাড়িতে একদিন কাটানোর পরেই দৃষ্টি হারান অনিতা। সকালে ঘুম থেকে উঠে আর দুচোখের সামনে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলেন না। চারদিকে শুধুই অন্ধকার। বিষয়টি বাড়িতে জানান অনিতা। মধ্যবিত্ত পরিবারের কেউই সেসময় বুঝতে পারছিলেন না কি করবেন। এরপর যোগাযোগ করা হয় স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে।
advertisement
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা অনিতার কাজোড়ার বাড়িতে তাকে দেখতে আসেন। প্রথমে সকলেই ভেবেছিলেন চোখের সমস্যায় দৃষ্টি হারিয়েছেন তিনি। সেইমতো প্রথমেই তাকে দুর্গাপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে সমস্যা বুঝতে না পেরে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তারপর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা অনিতাকে নিয়ে তিন চারটি হাসপাতাল ঘোরেন। এমআরআই রিপোর্টে ধরা পড়ে, অনিতার চোখের সমস্যায় নয়। স্নায়বিক সমস্যার কারণেই চোখের সামনে অন্ধকার নেমে এসেছে অনিতার জীবনে।
যদিও চিকিৎসকরা জানান, অস্ত্রপচার ও চিকিৎসার মাধ্যমে দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার আশা রয়েছে। কিন্তু সেই চিকিৎসা ব্যয়বহুল। সেসময় এগিয়ে আসে রজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে অনিতার চোখের চিকিৎসা হয়েছে। প্রায় চার লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে তার চোখের চিকিৎসার জন্য। যার পুরোটাই দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকে। অবশেষে অপরেশনের ১২ দিন পরে দৃষ্টি ফিরে পেয়েছেন অনিতা। চোখের সামনে আবার রঙিন জগত দেখতে পেয়ে খুশি তিনি।
দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার পরে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বেচ্ছেসেবী সংস্থার ‘দাদাদের’ সম্মান জানিয়েছেন অনিতা বাদ্যকর। ‘বোনের’ চোখে আলো ফিরে আসায় খুশি সংস্থার কর্মীরাও। একইসঙ্গে মাকে আবার আগের অবস্থায় ফিরে পেয়ে খুশি অনিতার একরত্তি মেয়ে। চিন্তামুক্ত হয়েছেন তার পরিবারের সকলেই। একযোগে সবাই কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের এই জনকল্যাণমুখী প্রকল্পকে। ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদেরও।