TRENDING:

Durga Puja 2021|| ইংরেজ জেলাশাসক বন্ধ করেছিলেন নবমীর বলি, তাও সোঁয়াইয়ের পুজোয় হয় মহিষ বলি

Last Updated:

Durga Puja 2021: নবমীর দিন এখানে মহিষ বলি দেওয়া হয়। দীর্ঘ ৩২৮ বছর ধরে এই প্রথা চালু রয়েছে। মহিষ বলে দেখতে বহু মানুষ ভিড় জমান এখানে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কাঁকসা: কাঁকসার সোঁয়াই গ্রাম। পশ্চিম বর্ধমানের শেষ প্রান্তে আপাত শান্ত একটি গ্রাম। জেলার অনেক মানুষই হয়ত এই গ্রামের নাম শোনেন নি। কিন্তু বর্ধমানের রাজাও এই গ্রামে পা রেখেছিলেন। এসেছিলেন ব্রিটিশ শাসনকালের এক জেলাশাসক। গ্রামে ৩২৮ বছর ধরে চলে আসছে দুর্গাপুজো। বহু প্রাচীন এই পুজোটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে গ্রামের মুখার্জি পরিবার। সোঁয়াই গ্রামের এই পুজোয় পরপর তিনদিন বলিদান দেওয়া হয় দেবী দুর্গার উদ্দেশ্যে। পুজোর বলিপ্রথা নিয়ে একাধিক কাহিনী প্রচলিত রয়েছে।
সোঁয়াইয়ের পুজো।
সোঁয়াইয়ের পুজো।
advertisement

স্থানীয় ইতিহাস নিয়ে সামান্য আলোচনা করলে জানা যায়, সোঁয়াই গ্রামে ছিল বহু প্রাচীন একটি টোল বা পাঠশালা। এই টোলেই শিক্ষা নিতেন মুখার্জি পরিবারের পূর্ব পুরুষ বাসুদেব মুখার্জি। তাঁর আদি বাড়ি ছিল বর্তমান পূর্ব বর্ধমানের বাকলসার গ্রামে। কিন্তু সোঁয়াই গ্রামে পড়াশোনার পাশাপাশি, গ্রামের মেয়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন বাসুদেব মুখার্জি। তারপর থেকে এই গ্রামেই বসবাস শুরু করেন তিনি। মুখার্জি পরিবারের দুর্গাপুজো বাকলসার গ্রামে হলেও, বাসুদেব মুখার্জি সোঁয়াই গ্রামে দুর্গাপুজো শুরু করেন।

advertisement

পরিবারের সদস্যরা বলেন, যখন বাকলসার থেকে সোঁয়াইয়ে দেবী দুর্গাকে নিয়ে আসা হচ্ছিল, তখন বর্ধমান রাজার সৈন্যরা, পালকি বাহকদের বাধা দেয়। কাঁধে করে দেবীকে নিয়ে আসার সময় বিপত্তি বাঁধে। বর্ধমান রাজার সৈন্যরা পথ আটকে পালকি বাহকদের রাস্তা ছাড়তে প্রত্যাখান করে। অন্যদিকে নাছোড়বান্দা দেবীর পালকি বাহকরাও রাস্তা থেকে সরতে রাজি হয়নি। গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হচ্ছে দেখে তৎকালীন বর্ধমানের রাজা স্বয়ং খোঁজখবর করতে আসেন। ঘটনাস্থলে এসে তিনি সব ঘটনা শোনেন। এরপর দেবীকে প্রনাম করে রাস্তা ছেড়ে দেন তিনি। দেবীর পুজোর জন্য কিছু জমিও দান করেন। তারপর থেকে ৩২৮ বছর ধরে মহা ধুমধামের সঙ্গে সোঁয়াই গ্রামে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে।

advertisement

সোঁয়াই গ্রামের পুজোতে পুজোর তিন দিন বলি প্রথা চালু রয়েছে। যা অন্যপ্রাচীন পারিবারিক পুজোগুলি থেকে, মুখার্জি পরিবারের পুজোকে অনেকটাই আলাদা করে। পুজোর সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী, তিনদিন দেবীর উদ্দেশ্যে বলিদান দেওয়া হয়। সপ্তমীর দিন ছাগ বলি দেওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে এখানে। অষ্টমীর সন্ধিক্ষণেও ছাগ বলি দেওয়া হয়। তবে একরঙা সাদা ছাগ বলি দেওয়া হয়।

advertisement

নবমীর বলিপ্রথার জন্য স্থানীয় অঞ্চলে সোঁয়াই গ্রামের পুজো বিশেষভাবে চর্চিত। কারণ নবমীর দিন এখানে মহিষ বলি দেওয়া হয়। দীর্ঘ ৩২৮ বছর ধরে এই প্রথা চালু রয়েছে। মহিষ বলে দেখতে বহু মানুষ ভিড় জমান এখানে। জানা যায়, পুজোর প্রথম দিকে দুটি করে মহিষ বলি দেওয়া হত। কিন্তু কোনও এক বছর বলিদানের আগে একটি মহিষ গলায় ফাঁস লেগে মারা যায়। তারপর থেকে একটি করেই মহিষ বলি দেওয়া হয় সোঁয়াই গ্রামের পুজোর নবমী তিথিতে।

advertisement

পরিবারের এক প্রবীন সদস্য বলেছেন, পূর্ব পুরুষদের কাছে তিনি শুনেছেন, কোনও এক বছর ব্রিটিশরা এখানে মহিষ বলি প্রথা বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়। সেসময়ের এক জেলাশাসক মুখার্জি বাড়িতে এসে মহিষ বলি প্রথা বন্ধ করে দিয়ে যান। কিন্তু পুজোর সময় মহিষ বলিদানের আগে দিন, ফের ওই জেলাশাসক এসে মহিষ বলি প্রথা চালু রাখার কথা বলেন। তবে কি কারণে এই সিদ্ধান্ত তিনি বদল করেছিলেন, সেবিষয়ে কিছু জানা যায়নি।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
পুরীর রথ এবার রঘুনাথপুরে, থিমে মন কাড়ছে আপার বেনিয়াসোলের দুর্গাপুজো মণ্ডপ
আরও দেখুন

পুজোর সময় তিনিদিন ছাগ ও মহিষ ছাড়াও বিভিন্ন জিনিস বলি দেওয়া হয়। তালিকায় রয়েছে চালকুমড়ো, আখ সহ বিভিন্ন জিনিস। তাছাড়াও সোঁয়াইয়ের পুজোর সপ্তমীতে করা হয় কুমারী পুজো। ষষ্টীতে বোধনের পর, সপ্তমীতে আসে নবপত্রিকা ও দেবীর মঙ্গলঘট। সমস্ত পুজো হয় রীতি মেনে। পুজোর চারদিন গ্রামের মানুষ ও স্থানীয় এলাকার বাসিন্দাদের জন্য নরনারায়ণ সেবার আয়োজন করা হয়। মুখার্জি পরিবারের আট থেকে আশি, সকলেই পুজোর আনন্দে মাতোয়ারা হন। পুজোর আনন্দে শামিল হন স্থানীয় মানুষজনও।

বাংলা খবর/ খবর/Local News/
Durga Puja 2021|| ইংরেজ জেলাশাসক বন্ধ করেছিলেন নবমীর বলি, তাও সোঁয়াইয়ের পুজোয় হয় মহিষ বলি
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল