উত্তরবঙ্গের ধুপগুড়ির এক সাধারণ মেয়ে জ্যোতি মজুমদার। কয়েক মাস আগে যিনি ট্রেনে গান গেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাতারাতি ভাইরাল হয়েছেন। বাবা দীর্ঘদিন ধরে গান করেন, বাবাকে দেখেই দু’বছর ধরে গানের তালিম নিয়ে পেটের দায়ে দূরপাল্লার ট্রেনে গান করেই হয় আর্থিক রোজগার। দাদা ও মা-সহ সংসারে মাত্র চার জন। তবে জ্যোতির সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে, সেই ভিডিও পোস্ট করেন সঙ্গীত শিল্পী কেশব দে।
advertisement
খ্যাতনামা সঙ্গীতশিল্পী কেশব দের সঙ্গে এরপর যোগাযোগ হয়। আর তারপরই যেন ‘মেঘ না চাইতেই জল’। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে স্বপ্নপূরণের হাতছানি। দিন কয়েক আগেও যে জ্যোতিকে দেখা যেত ট্রেনের কামরায় একের পর এক গান গাইতে, এই জ্যোতি এদিন হাবরায় কেশব দে-র স্টুডিওতেই করলেন জীবনের প্রথম গান রেকর্ড।
মেয়ের স্বপ্নপূরণের সাক্ষী থাকতে পেরে, এদিন চোখে জল দেখা গেল বাবারও। বাবার উৎসাহেই গানের জগতে পা রাখা জ্যোতি মজুমদারের। ভাইরাল ভিডিওতে বছর ষোলোর গণ্ডি পেরোন জ্যোতির গলায় একের পর এক গান স্পর্শ করেছিল লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয়। আর ট্রেনের সেই ভাইরাল ভিডিওতেই চোখ আটকে যায় খ্যাতনামা এই সঙ্গীত শিল্পী কেশব দে-র। তারপর থেকেই জ্যোতির পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলা আধুনিক গান থেকে লোক সঙ্গীত, হিন্দি বলিউড নানা গান গেয়ে ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত মুখ হাবড়ার ছেলে কেশব দে। এদিন হাবরার স্টুডিওতে মিউজিকের সঙ্গে তাল মিলিয়েই কেশব দে-র নির্দেশ মতো জ্যোতি প্রথম গান রেকর্ড করলেন। রেকর্ডিং-এর পর সাংবাদিকদের সামনে জ্যোতি বলেন, “আমি কখনও ভাবিনি এমন একটা সুযোগ পাব। কেশব দাদা আমার স্বপ্ন সত্যি করেছেন। আমি চিরকৃতজ্ঞ।”
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা জ্যোতির বাবাও চোখের জল লুকোতে পারলেন না। তিনি বলেন, “এই দিনটার জন্যই এতদিন লড়াই করেছি।” জানা গিয়েছে, গানটি খুব শীঘ্রই ইউটিউব এবং বিভিন্ন মিউজিক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাবে। জ্যোতির এই যাত্রা প্রমাণ করে দেয়, প্রতিভা আর অধ্যবসায় থাকলে সোশ্যাল মিডিয়া শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, তা হতে পারে জীবন বদলে দেওয়ার একটা শক্তিশালী প্ল্যাটফর্মও।
Rudra Narayan Roy