গ্রামের এই প্রাচীন নিদর্শনগুলি প্রমাণ করে এখানে এক নয় একাধিক জৈন দেউল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, কালক্রমে বর্তমানে সেগুলো বিলীন হয়ে গিয়েছে। গ্রামের লিখিত কোনও ইতিহাসের সন্ধান না পাওয়া গেলেও গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, গ্রামের পত্তন হয় কয়েকশো বছর আগে। তখন বেশিরভাগ এলাকা ছিল জঙ্গলে ঢাকা। আনুমানিক নবম- দশম শতাব্দীতে পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত এই গ্রামে গড়ে ওঠে একাধিক জৈন স্থাপত্য। গ্রামের এক প্রান্তে তৈরি করা হয় ইটের দেউল। বছর কুড়ি আগে এই দেউলটি অক্ষত ছিল। এখন অযত্নে তা ভেঙ্গে পড়েছে। দেউলের পাশাপাশি গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক প্রাচীন প্রস্তর মূর্তি রয়েছে। প্রাচীন এই মূর্তিগুলো বর্তমানে গ্রামবাসীরা গ্রামদেবতা সহ বিভিন্ন দেব-দেবী হিসেবে পুজো করে আসছেন।
advertisement
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
গ্রামবাসীরা জানান, প্রায় সত্তর বছর আগে গ্রামে মাটি খুঁড়তে গিয়ে মাটির তলা থেকে একটি বিশালাকার প্রাচীন জৈন মূর্তি পাওয়া যায়। দীর্ঘদিন সেই মূর্তি খোলা আকাশের নীচেই ছিল। তারপর একটি মন্দির নির্মাণ করে সেই মূর্তিটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। জানা যায় মাটির তলা থেকে পাওয়া ওই মূর্তিতে জৈন স্থাপত্যের লক্ষণ স্পষ্ট। মূর্তিটি সম্ভবত ঋষভনাথের। এছাড়াও গ্রামের উত্তর পাড়ে গাছের তলায় মাটিতে আরও একটি এধরনের পাথরের মূর্তি এবং একটি শিবলিঙ্গ দেখা যায়। এটি কোনও জৈনশাসন দেবতার মূর্তি বলেই মনে করেন গ্রামবাসীরা।
এছাড়াও গ্রামের হরিমন্দিরের কাছে ভগ্ন ষড়ভুজ নিত্যরতা ভঙ্গিমায় এক প্রাচীন দেবী মূর্তিও রয়েছে। এই মূর্তিকে গ্রামবাসীরা গ্রামদেবী হিসেবে নিত্যপুজো করেন। তবে বর্তমানে শাঁকা গ্রামের এই জৈন নিদর্শনগুলি সংরক্ষণের অভাবে ভুগছে। প্রাচীন ঐতিহ্যের নিদর্শনে সমৃদ্ধ এই গ্রামের নিদর্শনগুলি ভারত সরকার দ্বারা উপযুক্ত সংরক্ষণ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
শান্তনু দাস