বীরভূমের মধ্যে অবস্থিত সিদ্ধপীঠ তারাপীঠ মন্দিরের আশপাশে যে গ্রামগুলি রয়েছে, তার মধ্যে বর্ধিষ্ণু গ্রাম হিসাবে পরিচিত এই খরুণ গ্রাম। এই গ্রামে মোট পাঁচটি পুজো হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রায় ও কর্মকারবাড়ির পুজো। রায় বাড়ির চণ্ডীমণ্ডপ থেকেই এলাকার সমস্ত বাড়ির পুজো শুরু হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে খরুণ গ্রামে কর্মকারদের বাস ছিল। তখন গ্রামে কোনও দুর্গাপুজোর চল ছিল না। পুজোর দিনগুলিতে মনখারাপ করে থাকতেন গ্রামবাসীরা। তাই হঠাৎ করে গ্রামে পুজোর উদ্যোগ নেন তাঁরা।
advertisement
জানা যায়, সেই সময় মৃৎশিল্পী ছিল না বললেই চলে। সেই কারণে পটে দুর্গা এঁকে শুরু হয় মা দুর্গার আরাধনা। পরবর্তীকালে গ্রামের কয়েকঘর ব্রাহ্মণের বসবাস শুরু হয়। তৎকালীন জমিদার রামনিধি ও রামকানাই রায় দুই ভাই মিলে প্রতিমা গড়ে পুজো শুরু করেন। বর্তমানে পটশিল্প প্রায় বিলুপ্ত। তাই শোলার তৈরি প্রতিমা এই দুই মণ্ডপে স্থান পেয়েছে। রায় পরিবারের প্রবীণ সদস্য বলেন, বছরভর পটে তৈরি প্রতিমা মন্দিরে রেখে মা দুর্গা ও নারায়ণের নিত্যসেবা হয়ে থাকে।
মহালয়ায় দেবীপক্ষের সূচনা লগ্নে সেই পটের প্রতিমা মায়ের নিজস্ব দিঘিতে নিরঞ্জন দিয়ে পুনরায় মাকে আহ্বান জানানো হয়। মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদে ঘট ভরে ফের শুরু হয় পুজো। মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যায় নবপত্রিকা বাঁধা হয় রায়বাড়ির চণ্ডীমণ্ডপে। সপ্তমীর সকালে দোলা এনে বন্দনার পর শুরু হয় সিঁদুর খেলা। সপ্তমী থেকে নবমী চলে বিশেষ পুজো। দশমীর দিন নিয়ম মেনে মা দুর্গার ঘট বিসর্জন দেওয়া হয়।