হাওড়ার জলা জঙ্গলে প্রচুর পরিমাণে বসাবস করে বাঘরোল। এই বাঘরোল আবার বাংলার রাজ্য প্রাণী। জলাভূমি তাদের বসবাসের আদর্শ পরিবেশ। হাওড়ার নিম্ন গাঙ্গেয় অঞ্চল বাঘরোলের পাশাপাশি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রাণীরও বাসস্থান। সেখানে বাস করে গন্ধগোকুল, বনবিড়াল, শেয়াল, ইন্ডিয়ান সিবেট, হিমালয়ান সজারু, স্টার কচ্ছপ, তিল কচ্ছপ, বেঙ্গল মনিটর, লেজার্ডের মত বহু প্রাণী।
advertisement
আরও পড়ুন: আজ নবান্নে DA নিয়ে মহাবৈঠক! জট কাটাতে সব কর্মী সংগঠনকেই ডাক, এবার কি মিলবে সমাধান?
নল খাগড়া, ছই বাঁশ ও আগাছায় ভরা জল-কাদাময় স্যাঁতস্যাঁতে বন ওই সব প্রাণীর আদর্শ বাসস্থান। কিন্তু একের পর এক ফ্ল্যাট বাড়ি নির্মাণের ধাক্কায় ধীরে ধীরে বাসস্থান হারাচ্ছে তারা। জঙ্গলের পাশাপাশি জলা জমি ভরাট করে এই জেলায় একের পর এক অট্টালিকা তৈরি শুরু হওয়ায় এই সমস্ত বন্যপ্রাণীর খাবারের উৎসেও টান পড়ছে। তাই মাঝেমধ্যেই তারা বাধ্য হয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ ওইসব বন্যপ্রাণীর বিপদ আরও বাড়িয়েছে। এই গরম হাওয়ার জেরে হাওড়ার বিভিন্ন বনাঞ্চলে আগুন ধরে যাচ্ছে। সেই অগ্নিকাণ্ডে শেষ বাসস্থানটুকু হারিয়ে আরও সঙ্কট বাড়ছে বাঘরোল সহ এই সমস্ত বন্যপ্রাণীর। গত এক মাসে এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে জেলায়। এর মধ্য অন্যতম হল আমতায় দামোদর নদীর বাঁধে অবস্থিত বনের অগ্নিকাণ্ড। অন্য দিকে জেলার উত্তরাংশের পাঁচলা ও জগৎবল্লভপুরের বনেও আগুন লাগার ঘটনা সামনে এসেছে।
পরিবেশ প্রেমী সংগঠনগুলির দাবি, প্রতি বছরই এইভাবে আগুন ধরে যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন বনাঞ্চলে। এই প্রসঙ্গে পরিবেশপ্রেমী শুভজিৎ মাইতি বলেন, আগুন লাগার ঘটনার পিছনে চাষিদের একাংশের হাত আছে। অনেক সময় দেখা যায় জমির শুকিয়ে যাওয়া আগাছা বা গাছের ঝরা পাতা সহজে সাফ করতে আগুন লাগিয়ে দেন চাষিরা। সেই আগুনই অনিয়ন্ত্রিতভাবে জঙ্গলে ছড়িয়ে পড়ে। আর তার ফলেই বাঘরোল সহ বহু বন্যপ্রাণী প্রাণ হারাচ্ছে, তাদের বাসস্থান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে পরিবেশকর্মীরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন। পাশাপাশি বনবিভাগ আরও সক্রিয় হলে এই পরিস্থিতি বদলানো যাবে বলে তাঁদের অভিমত।
রাকেশ মাইতি





