গ্রাম ছেড়ে অন্য গ্রামে গিয়ে লেখাপড়া করবে এমন মানসিকতা গ্রামের পরিবারের যেমন ছিল না, তেমনই অধিকাংশ অভাবী পরিবারে ছেলেরা যুক্ত হয়ে যেত কাজকর্মে। তার ফলে গ্রামে শিক্ষার আলো সেভাবে জ্বলেনি।
পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্কুল পাঠশালা রয়েছে, তবে এ গ্রামে স্কুল গড়ে উঠবে, তা কখনও ভাবা যেত না । তবে গ্রামে শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে, গ্রামের এক শিক্ষক তাঁর মায়ের কথাকে বেদবাক্য মনে করে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য উদ্যোগী হয় । গ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার কাজ তিনি শুরু করেন ১৯৬০ সাল নাগাদ । জানান, প্রথমদিকে অনেকেই মনে করতেন শিক্ষা শুধুমাত্র ধনী মানুষদের জন্য । তাই প্রথম দিকে আগ্রহ না দেখালেও পরবর্তী সময়ে গ্রামের বহু সাধারণ মানুষ তাঁর সঙ্গ দেয়। মায়ের কথা মতোই স্কুল প্রতিষ্ঠা গড়তে উদ্যোগী হন শিক্ষক।
advertisement
আরও পড়ুন : তীব্র গরমে চরম তেষ্টাতেও ডাবের জল পান এখন বিড়ম্বনা! কেন?
তিনি জানান, ‘‘গ্রামের সাধারণ মানুষ তাঁর সঙ্গ দেওয়ায় সম্ভব হয়েছে মায়ের ইচ্ছা বাস্তবায়ন করতে । ১৯৬৪ সালে গ্রামে গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দির স্কুল সরকারি স্বীকৃতি লাভ করে । পরবর্তীতে বালিকা বিদ্যামন্দির, মহাবিদ্যামন্দির কলেজ এবং সরকারি অনুমোদিত বিএড,ডিএড, এমএড কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন । এর পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত জওহর নবোদয় স্কুলকে জমি ও বিল্ডিং হস্তান্তর করে তাদের KUCT এর পক্ষ থেকে গ্রামে নিয়ে আসা হয় ।
আরও পড়ুন : এগিয়ে আসছে আষাঢ়ের পুণ্য লগ্ন, মহিষাদলে জোরকদমে চলছে রথযাত্রার প্রস্তুতি
সন্তোষ বাবু জানান, ‘‘প্রায় ছয় দশক আগে যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গ্রামে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, তাতে শিক্ষার প্রসারে শুধু যে গঙ্গধরপুর গ্রামে ঘটেছে তা নয় পার্শ্ববর্তী বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শিক্ষার প্রসার ঘটেছে । স্কুল কলেজ সংস্কৃত-সাহিত্য চর্চার প্রতিষ্ঠান রয়েছে । গ্রামে এ বার প্রয়োজন ইউনিভার্সিটি ৷ সেই লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে আগামীতে । তিনি জানান, ‘‘আগামী দিনে গ্রামে ইউনিভার্সিটি, হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে । তার অবর্তমানে KUCT এর সদস্যরা এবং তার দেবপ্রসাদ দাস এই কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিয়ে যাবেন । এলাকায় শিক্ষা পৌঁছেছে অধিকাংশ পরিবারে । বর্তমানে শিক্ষিত সমাজে অর্থনীতির সমস্যা দারুণভাবে । প্রয়োজন টেকনিক্যাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেখানে ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা কোর্স করে স্বনির্ভর হতে পারবেন ছেলেমেয়েরা । গ্রামীণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি রক্ষা করার দায়িত্ব আগামী প্রজন্মের ।’’ তিনি মনে করেন শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঠিক রাখার প্রয়োজন ৷ তাই তিনি গ্রামে হাসপাতাল ও খেলাধুলো বজায় রাখতে গড়েন ফুটবল অ্যাকাডেমি।
( প্রতিবেদন : রাকেশ মাইতি)