হাওড়া জেলার অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী বিভূতি ভূষণ ঘোষের উদ্যোগে বাগনানের বাঙালপুর গ্রামে শুরু হল সর্বজনীন কালীপুজো। মাঝে কেটে গিয়েছে একশো বছর। দেশ স্বাধীন হয়েছে, সময়ের স্রোতে কালের অমোঘ নিয়মে অনেকেই হারিয়ে গিয়েছেন, যুগ পাল্টেছে, কিন্তু বিভূতি বাবুদের হাত ধরে শুরু হওয়া সেই কালীপুজো আজও ঐতিহ্য মেনে সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয়। বাঙালপুর বয়েজ ক্লাবের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই কালীপুজো এবার শতবর্ষে পদার্পণ করল।
advertisement
আরও পড়ুন: বাড়িতেই চলছিল দেহ-ব্যবসা! মধুচক্রে ফিল্মি কায়দায় পুলিশি অভিযান! ভয়াবহ কাণ্ড!
শতবর্ষে তাদের ভাবনা 'মাটির টানে'। উদ্যোক্তাদের কথায়, গ্রাম বাংলার মানুষের সাথে মাটির নিবিড় সম্পর্ক। মাটিকে আঁকড়ে ধরেই বড়ো হওয়া। আবার মাটিকে কেন্দ্র করেই শিল্পীর স্বপ্ন দেখা। মাটির প্রতি এই নিবিড় টানকেই এবার পুজোয় থিমের আকারে তুলে ধরছেন বয়েজ ক্লাবের সদস্যরা। বেশ কিছুদিন আগে থেকেই মণ্ডপ তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে। মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহার করা হচ্ছে মাটি, খড়, কাঠের মতো বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব সামগ্রী। পাশাপাশি, ভাবনাকে তুলে ধরতে শিল্পীর ভাবনায় তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন মডেল।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এবার শতবর্ষে তাদের বাজেট প্রায় সতেরো লক্ষ টাকা। চন্দননগর থেকে আনা হচ্ছে হরেক রকমের আলো। বাঙালপুর বয়েজ ক্লাবের অন্যতম কর্তা দীপঙ্কর ঘোষ জানান, এবার শতবর্ষ। তাই ভাবনার পাশাপাশি আয়োজনেও থাকছে শতবর্ষের বিভিন্ন ছোঁয়া। তিনি জানান, বিগত প্রায় দশ বছর ধরে আমরা থিমের পুজো করছি। তবে এবার বাজেটটা অনেকটাই বেশি। মণ্ডপে থিমের ছোঁয়া থাকলেও প্রাচীন রীতি মেনে আজও ক্লাবের মাঠেই তৈরি হয় সাবেকিপ্রতিমা। পুজোর পাশাপাশি বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির, চশমা প্রদান, বস্ত্র উপহার প্রদান, শিশুদের চারাগাছ প্রদান সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে এই সংগঠন। পাশাপাশি, শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রকাশিত হবে বিশেষ পত্রিকা। বাঙালপুর গ্রাম তো বটেই, আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের অজস্র মানুষ এই পুজোয় সামিল হন। এবার শতবর্ষে পুজোর স্রষ্টাদের পরিবারের উত্তরসূরীদেরকে সম্মান জানাবে বাঙালপুর বয়েজ ক্লাব। আর কয়েক'টা দিন, তারপরই শতবর্ষের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে বাঙালপুর বয়েজ ক্লাবের কালীপুজো প্রাঙ্গণ, এখন তারই শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে।
রাকেশ মাইতি