হাওড়া আমতা-বাগনান রোডের পাশে পূর্ব গাজিপুর এলাকায় কয়েক বছর আগে একটি কারখানা গড়ে ওঠে। এলাকায় কারখানা গড়ে উঠছে দেখে সেই সময় স্থানীয়রা খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু সেই কারখানা যে এমন বিপদ ডেকে আনতে পারে তা ভাবতে পারেননি। কারখানার পাশ দিয়েই বয়ে গেছে একটি খাল। এই খালের জলেই পূর্ব গাজিপুর, মুক্তিরচক, রানপাড়া সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েকশো বিঘা জমির চাষবাস হয়। জল সেচের ক্ষেত্রে ওই খালের জলই কৃষকদের একমাত্র ভরসা। সেই খালের জলই এখন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে, যা চাষের উপকারের বদলে অপকার করছে বেশি।
advertisement
আরও পড়ুন: অবশেষে মাদক পাচারের মূল মাথা গ্রেফতার
কৃষকদের অভিযোগ, কারখানার রাসায়নিক মিশ্রিত দূষিত জল পরিশোধন না করেই সরাসরি খালে ফেলা হচ্ছে। এর ফলে খালের জল যেমন দূষিত হয়ে পড়েছে তেমনই তা থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। খালের ওই জল চাষের কাজে ব্যবহার করায় বিঘের পর বিঘে জমির ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি খালের জল পুকুরের মেশায় ত্বকেরও সমস্যা দেখা দিচ্ছে গ্রামবাসীদের। সেইসঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষ বড় বড় পাম্প বসিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার ভূগর্ভস্থ জল তুলে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ওই কারখানা কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের ফলে এলাকার ভূগর্ভস্থ জলস্তর অনেকটাই নিচে নেমে গিয়েছে বলে গ্রামের মানুষের দাবি। ফলে নলকূপ দিয়ে ঠিক করে জল বেরোচ্ছে না। এরই প্রতিবাদে গ্রামবাসীরা সরাসরি কারখানার গেটের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হলেন। কারখানার গেটের সামনে অস্থায়ী ছাউনি খাটিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে এলাকার কৃষকদের পাশাপাশি গ্রামের সাধারণ মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁরা কারখানার গেট ঘিরে রেখেছেন, সেখানে কাউকে ঢুকতে বা বেরতে দিচ্ছেন না। এর জেরে কারখানায় কার্যত অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিক্ষোভরত চাষিদের দাবি, অবিলম্বে তাঁদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে। নাহলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।
রাকেশ মাইতি