TRENDING:

Teacher Student Relationship: প্রিয় শিক্ষকের বদলি রুখতে কেঁদে ভাসাল পড়ুয়ারা! করজোড়ে নিবেদন অভিভাবকদের

Last Updated:

Teacher Student Relationship: এ ঘটনা হাওড়ার বাগনান ১নং ব্লকের দীপমালিতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
রাকেশ মাইতি, হাওড়া: একজন দু’জন নয়, এক সঙ্গে চার জন শিক্ষকের বদলি রুখে গেল অভিভাবক ও ছাত্রদের করজোড়ে আবেদন নিবেদনে। মাঝে মধ্যেই রাজ্যজুড়ে সরকারি স্কুলে নানা অভিযোগ সামনে আসছে। আবার জেলায় ছাত্র শাসন করলে শিক্ষক পিটুনির মতো ঘটনা ঘটে। সেই জেলাতেই এবার উল্টো ছবি। দেখা গেল সরকারি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
advertisement

প্রধান শিক্ষক নিয়োগে হাওড়া ডিপিএসসি থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। স্কুলের চার শিক্ষক আবেদনের মনস্থির করেন। শিক্ষকদের বদলির খবর শুনে স্কুলে হাজির অভিভাবক গ্রামবাসী থেকে জনপ্রতিনিধি। প্রবীণ শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ সাঁতরা, অভিলাষ ঘোষাল, অমিতাভ মান্না, প্রভাস মণ্ডল পরে অন্য স্কুলে প্রধান শিক্ষক হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বদল করেন।

চার শিক্ষকের মধ্যে শুরুতেই স্কুলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে শিক্ষকমণ্ডলী রবীন্দ্রনাথবাবুকে স্কুলে থেকে যাওয়ার অনুরোধ করেন। তাই তিনি স্কুলের থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে বাকি তিনজন শিক্ষক আবেদন জানান। প্রিয় শিক্ষকের বদলির খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে ছাত্রছাত্রীরা। অন্যদিকে ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্কুলে পৌঁছে যান অভিভাবক থেকে গ্রামবাসীরা। প্রিয় শিক্ষকদের স্কুলে থাকার করজোড়ে আবেদন করেন গ্রামবাসী, ছাত্র-ছাত্রী ও জনপ্রতিনিধি।এ ঘটনা হাওড়ার বাগনান ১নং ব্লকের দীপমালিতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

advertisement

গ্রামে ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বিদ্যালয়। বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২৬২ জন। শিক্ষক ৬ জন এবং শিক্ষিকা ১ জন। এই বিদ্যালয়ে গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের ছেলেমেয়ের লেখাপড়া করেন। এমন বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী রয়েছে যাদের মা অথবা বাবা এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন। এলাকার অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ এবং শ্রমিক শ্রেণীর মানুষ।

বর্তমানে নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের শিক্ষিত করতে স্থানীয় পরিবারগুলি ভরসা রেখেছেন গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়েই। একটি বেসরকারি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও এই স্কুলের পঠনপাঠনের মানের কাছে হার মেনে বন্ধ হয়ে যায় স্কুলটি। প্রায় ৭ দশক স্কুলের প্রতিষ্ঠা হলেও, শেষ দু দশক ধরে স্কুলে আমূল পরিবর্তন। যেমন লেখাপড়ায় উন্নতি, তেমনই খেলাধুলা ও শরীরচর্চা হয় স্কুলে। ছাত্রছাত্রীদের নিজেদের সন্তানের মতোই যত্ন করেন স্কুলের শিক্ষক- শিক্ষিকারা। গুরু শিষ্য অর্থাৎ ছাত্র শিক্ষকের যে স্নেহের সম্পর্ক, তা এই বিদ্যালয়ে না এলে বোঝার উপায় নেই।

advertisement

প্রায় দু’ দশক ধরে স্কুলের দারুণ উন্নতি ঘটেছে। বিদ্যালয়ে ২ টি বিল্ডিংয়ে মোট ১২ টি শ্রেণীকক্ষ। ছাত্রছাত্রীদের প্রকৃত শিক্ষাদানে আধুনিক ভাবে সাজানো কক্ষ। কক্ষের চার দিকে শিক্ষামূলক নানা ছবি ফুটে উঠেছে। স্কুলের সাফল্যে একাধিক পুরস্কার মিলেছে সরকারি তরফে। রূপনারায়ণ নদের কোলে এই স্কুল শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার উপযুক্ত স্থান। সেই সঙ্গে শিক্ষক শিক্ষিকার প্রচেষ্টায় যেভাবে স্কুল সেজে উঠছে, তেমনই শিক্ষা এবং প্রকৃত জ্ঞানে সমৃদ্ধ হচ্ছে ছাত্র ছাত্রীরা।

advertisement

আগামী দিনে ছাত্র-ছাত্রীদের ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষার দেওয়ার চেষ্টায় শিক্ষকরা। শিক্ষিকা কিরণ বাঙ্গালের চেষ্টায় নাচ গান আবৃত্তির রেওয়াজও চলে। স্কুলের পরিকাঠামো বা কক্ষ সংস্করণে শিক্ষক-শিক্ষিকার অর্থনৈতিক সহযোগিতায় কিছু কাজ এগিয়েছে আবার নতুন কিছুর পরিকল্পনাও রয়েছে। শিক্ষক শিক্ষিকার  প্রচেষ্টা এবং ঐক্যবদ্ধতার জেরেই স্কুলের উন্নয়ন বলেই মনে করেন গ্রামবাসী।

অভিভাবক গ্রামবাসীরা মনে করেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে বর্তমান শিক্ষক শিক্ষিকাদের সকলকে প্রয়োজন। কিন্তু এর মাঝে একইসঙ্গে চারজন শিক্ষক, সহ-শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষকের মর্যাদায় পেতে সরকারি নিয়ম মোতাবেক বদলির আবেদন জানান। এই খবর যেন দুঃসংবাদের মতই গ্রামবাসী এবং ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছয়। চলে বহু চেষ্টা, আবেদন নিবেদন। শিক্ষকদের বদলিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ছাত্রছাত্রী এবং গ্রামের মানুষ।

advertisement

তাঁদের চোখের জল, কাকুতি মিনতি, আবেদন নিবেদনে সাড়া দিয়ে সিদ্ধান্ত বদলান শিক্ষকরা। গ্রামের প্রান্তিক পরিবারগুলির ছেলে-মেয়েদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে শিক্ষকরা তাদের স্বার্থ ত্যাগ করেই এই স্কুলে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।

এ প্রসঙ্গে অভিভাবকরা জানান, ‘‘স্কুলে যেভাবে উন্নতি ঘটছে, সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকার অবদান রয়েছে। আমরা চাই সকলেই এই বিদ্যালয়ে থাকুক। তাতে গ্রামের শিক্ষার মান উন্নত হবে। ছাত্রছাত্রীরা প্রকৃত শিক্ষা লাভ করতে পারবে।’’

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
শেষ সুবর্ণ সুযোগ! হাতছাড়া হলে কেঁদে কুল পাবেন না...
আরও দেখুন

শিক্ষক শিক্ষিকার ঐক্যবদ্ধতার জেরেই বিদ্যালয়ের উন্নয়ন। ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকের মধ্যে স্নেহের সম্পর্ক প্রান্তিক গ্রামের পরিবারগুলিতে আরও বেশি করে শিক্ষার আলো পৌঁছন বা প্রসার ঘটার দারুন সম্ভাবনা। এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মূল লক্ষ্যই হল ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে শিক্ষা এবং প্রকৃত জ্ঞানে সমৃদ্ধ করা।

বাংলা খবর/ খবর/হাওড়া/
Teacher Student Relationship: প্রিয় শিক্ষকের বদলি রুখতে কেঁদে ভাসাল পড়ুয়ারা! করজোড়ে নিবেদন অভিভাবকদের
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল