এ দিকে পরিবারের তরফ থেকে শুরু করে দেওয়া হয়েছিল বিয়ের সমস্ত আয়োজন। পরিবারের লোকেরা নিমন্ত্রণ করতে বেরিয়ে পড়েছিলেন আত্মীয় স্বজনের বাড়ি। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা সমস্ত কিছু জানতে পেরে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। খবর দেওয়া ধনিয়াখালী থানায় এবং স্থানীয় প্রশাসনকে। স্কুলে আসে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকরা।
আরও পড়ুনঃ হু হু করে নামছে পারদ, ৪৮ ঘণ্টায় একেবারে বদলে যাবে পুরুলিয়ার আবহাওয়া, জানুন পূর্বাভাস
advertisement
পুলিশের তরফ থেকে স্কুল থেকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয় ওই ছাত্রীকে এবং বিয়ের বয়স না হওয়া পর্যন্ত তাঁর যাতে বিয়ে দেওয়া না হয় তা সতর্ক করা হয় পরিবারের সদস্যদের, অন্যথা আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের তরফ থেকে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পারাম্বুয়া জগদ্ধাত্রী উচ্চ বিদ্যালয় ক্লাস নাইনের ছাত্রী ওই নাবালিকার দেখাশোনার পর্ব মেটে সরস্বতী পুজোর দিন।বিয়ের দিনও ঠিক হয়ে যায় আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ৩ তারিখে। শেওড়াফুলির বছর ৩৫-এর এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ের ঠিক করে বাড়ির লোক। যদিও বিয়ের কথা যখন চলছিল তখন থেকেই বিয়ে করবে না বলে পরিবারকে বার বার জানায় ওই নাবালিকা। পরিবারের তরফ থেকে তার কথা না শোনায় অবশেষে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দ্বারস্থ হয় নাবালিকা।
আরও পড়ুনঃ মেঝে হবে আয়নার মতো ঝকঝকে, শুধু 'এই' পন্থা মানুন, ম্যাজিক হবে নিশ্চিত
খবর পেয়ে স্কুলে আসে ধনিয়াখালি থানার পুলিশ। স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে নাবালিকার বাড়িতে এসে প্রশাসনের তরফ থেকে বোঝানো হয় ১৮ বছরের নিচে নাবালিকার বিয়ে দেওয়া আইনত অপরাধ। একইসঙ্গে পুলিশের তরফ থেকে নাবালিকার এই সাহসিকতার জন্য বিশেষ পুরস্কার ঘোষণা করেন পুলিশ অধিকর্তারা।
পুলিশে প্রশাসনের বোঝানোর পর নিজের ভুল স্বীকার করে নেয় নাবালিকার মা ডলি রায়। তিনি জানান, তাঁদের অভাবের সংসার, সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়, সেই কারণেই মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে চাইছিলেন। এখন তিনি তার ভুল বুঝতে পেরেছেন আগামীতে যতদিন না মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হচ্ছে ততদিন তার বিয়ে নিয়ে জোর যার করবে না।অন্যদিকে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিকাশ কুমার মুখোপাধ্যয় তাঁর স্কুলের ছাত্রীর এই সাহসিকতার প্রশংসা করেন এবং ছাত্রীর সাহসিকতার পুরস্কার ঘোষণা করেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য প্রসেনজিৎ কোনার জানান, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বার বার সচেতনতা প্রচারের ফল ছাত্রীর এই সাহসিকতা।
রাহী হালদার