কথিত ইতিহাস অনুযায়ী, রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ম কে জগন্নাথ দেব স্বপ্নাদেশ দিয়ে বলেন গরম থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য তাকে চন্দন লেপে দিতে বলা হয়। এর ঠিক ৪২ দিন বাদে রাজার কাছে আবার স্বপ্ন আসে যেখানে ঠাকুর বলেন চন্দনের জন্য তার মাথা ধরে গেছে তাই তাকে স্নান করাতে হবে। ঠাকুরের আদেশ অনুযায়ী রাজা ১০৮ টি কলসির জল দিয়ে জগন্নাথ দেবকে স্নান করান। সেই থেকেই চন্দন যাত্রার ৪৫ দিন বাদে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা উৎসব পালন হয়। এই স্নান এর পরে ঠাকুরের নাকি খুব জ্বর আসে। তাই জন্য স্নান যাত্রার পরে ১২ দিনের জন্য ঠাকুরকে গর্ভগৃহে নিভৃত বাসে রাখা হয়। ১২ দিনের মধ্যে জগন্নাথ দেব সুস্থ হয়ে ওঠেন তারপর তাকে নিয়ে রথযাত্রা শুরু হয়।
advertisement
মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন সকাল থেকেই মানুষজন ভিড় করেছিলেন চন্দন উৎসব দেখার জন্য কপালে চন্দনের প্রলেপ পরানোর জন্য এলাকার স্থানীয় মহিলারা আগের দিন রাত থেকেই চন্দন বাটতে শুরু করে দেয়। চন্দন বাটা হয়ে গেলে সেই চন্দনকে একটি বিশেষ কাপড়ে চুবিয়ে রাখা হয়, ও সেই কাপড়ের পট্টিটি চন্দন যাত্রার দিন জগন্নাথ দেবের কপালে লাগিয়ে দেওয়া হয়।
চন্দন যাত্রা অনুষ্ঠান শেষে মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের সেবাইত পিয়াল অধিকারী বলেন, উৎসব আজ থেকে শুরু হল চন্দন যাত্রা উৎসব। আজকের পর থেকে টানা ৪২ দিন ধরে চলবে চন্দনযাত্রা উৎসব। বলা হয় এই দিন থেকেই রথযাত্রা আরম্ভ হয়। তিনি আরও বলেন করোনার কারণে বিগত দুই বছর মাহেশের রথের চাকা গড়ায়নি। কিন্তু এই বছর অবশেষে চন্দন যাত্রার মধ্যে দিয়েই মাহেশের রথের শুভ আরম্ভ হল। আজ থেকে ঠিক ৪৭ দিন বাদে দু বছর বাদে আবারও মহেশের রথের চাকা গড়াবে। আবারও ভক্তবৃন্দদের ঢল নামবে মহাপ্রভু জগন্নাথ দেবের রথের টান দেওয়ার জন্য।
আরও পড়ুন: রাজস্থানের অনুকরণে, গরমে 'এই' ভাবে পথচারীদের জল দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা
জগন্নাথ দেবের রথ তৈরীর কাজ, আর মাহেশের রথের শুভ সূচনা হল চন্দন যাত্রা উৎসবের মাধ্যমে।আজ থেকে আগামী ৪২ দিন ধরে চলবে জগন্নাথ দেবের মাথায় চন্দন লেপন। তারপর হবে স্নান যাত্রা উৎসব।বলা যায় চন্দন যাত্রা দিয়ে আজ থেকে মাহেশে রথযাত্রারও সূচনা হয়ে গেল।চন্দন যাত্রায় মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরে সকাল থেকে ভক্তদের ভীড়।মন্দিরের গর্ভগৃহের দ্বার খোলার পর শুরু হয় চন্দন যাত্রা উৎসব। তিনি আরও জানান,অক্ষয় তৃতীয় হল একটি অত্যন্ত শুভ দিন। বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরামের আবির্ভাব দিবস। অক্ষয় তৃতীয়াতেই জগন্নাথের চন্দন যাত্রা উৎসব হয়। ৬২৭ বছর ধরে দারু কাঠের জগন্নাথ মূর্তি একই রকম রয়েছে।কোনো ক্ষয় নেই।এটাই মাহেশ জগন্নাথের মাহাত্ম্য।
রাহী হালদার