এই মেলা বিশেষ, তার কারণ এই মেলা শুধুমাত্র মাছের মেলা। দূর-দূরান্ত থেকে মাছ ব্যবসায়ীরা রুই, কাতলা, ভেটকি, শোল নানা ধরনের মাছের সম্ভার নিয়ে বসেন মেলায় বিক্রি করতে। প্রায় ৫১৭ বছরের প্রাচীন এই মেলা সপ্তগ্রামের 'মাছের মেলা' নামেই পরিচিত স্থানীয়দের কাছে।
আরও পড়ুন: খাবার ডেলিভারি দিতে গিয়ে কুকুরের তাড়ায় ৩ তলা থেকে লাফ! মর্মান্তিক মৃত্যু
advertisement
কথিত আছে, ওই এলাকার জমিদার ছিলেন গোবর্ধন গোস্বামী। তাঁরই ছেলে রঘুনাথ সংসার ত্যাগ করেন সন্ন্যাস নেবেন বলে। তিনি পানিহাটিতে মহাপ্রভু চৈতন্যের পারিষদ নিত্যানন্দের কাছে দিক্ষা নেবেন বলে তাঁর কাছে যান। তবে তাঁর বয়স তখন মাত্র ১৫ হওয়ায় তাঁকে তিনি দিক্ষা দেননি। তবে তাঁর ভক্তির পরীক্ষা নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন নিত্যানন্দ। দীর্ঘ ৯ মাস পর বাড়ি ফেরেন তিনি। সেই আনন্দে বাবা গোবর্ধন গোস্বামী গ্রামের মানুষকে খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
গ্রামের মানুষ তাঁর ভক্তির পরীক্ষা নেওয়ার জন্য কাঁচা আমের ঝোল ও ইলিশ মাছ খাওয়া আবদার করেন। তিনি ভক্তদের বলেন, বাড়ির পাশে আম গাছ থেকে জোড়া আম পেড়ে আনতে এবং পাশের জলাশয়ে জাল ফেলতে। সেই ইচ্ছে অনুযায়ী জাল ফেলতেই জালে ওঠে জোড়া ইলিশ। সঙ্গে আম নিয়ে আসায় অবাক হয়ে যান গ্রামের মানুষজন। সেই থেকে প্রতি বছর ভক্তরা রাধাগোবিন্দ মন্দিরে পুজো দেওয়ার পাশাপাশি মাছের মেলার আয়োজন করে আসছেন।
আরও পড়ুন: মিড ডে মিলের টাকায় 'দুয়ারে সরকার' ক্যাম্প! ফের বড় দুর্নীতির 'হদিশ' শুভেন্দু অধিকারীর
বর্তমানে এই মাছ মেলায় শুধু ইলিশ নয়, স্থান পেয়েছে রুই, কাতলা, ভেটকি-সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। বিক্রেতারা দূরদূরান্ত থেকে মাছ নিয়ে আসেন এই মেলায় বিক্রি করার জন্য। শুধু বিক্রি নয়, এই মেলায় আয়োজন থাকে জ্যান্ত মাছ কিনে সেখানেই ভেজে খাওয়ার। আদি সপ্তগ্রামের কৃষ্ণপুরে মাঘ মাসের প্রথম দিনটিতেই সকাল থেকে বহু মানুষের ভিড় জমে 'মাছ মেলা' দেখতে ও স্বাদ নিতে। বাজারের ব্যাগ ভরে ভরে মাছও কিনে নিয়ে যান গ্রামবাসীরা।
রাহী হালদার