আরও পড়ুন: থিমের প্যান্ডেল গড়তে এঁরাই জোগান সাজানোর সামগ্রী
ভদ্রেশ্বর তেলেনিপাড়া দক্ষিণপাড়ার বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজোর সূচনা হয়েছিল ১৯৪৩ সালে। এই বাড়ি তিনখিলান বিশিষ্ঠ দুর্গা দালান আজও ঐতিহ্যের সাক্ষী বহন করে চলেছে। তৎকালীন সময়ে পাড়ার বহু বারোয়ারি পুজো আসতে আসতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। তাই নিজেদের বাড়িতেই পুজো করার সিদ্ধান্ত নেন বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পুরুষরা। সেই সময় দাঁড়িয়ে কুড়োরাম বন্দোপাধ্যায় তাঁর মায়ের অনুমতি নিয়ে বাড়িতেই শুরু করেন দুর্গা প্রতিমা তৈরি ও পুজোর কাজ। প্রথম দিকে প্রতিপদ অর্থাৎ প্রথমা থেকেই পুজো শুরু হয়ে যেত। দশদিন ব্যাপী পুজো চলতো। প্রথা ও নিয়ম নিষ্ঠা মেনেই বৈষ্ণব মতে পুজো হয়ে আসছে তেলেনিপাড়ার বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে। কিন্তু সেই পুজোর জৌলুস আগের থেকে একটু হলেও ফিকে হয়েছে। এখন পুজো শুরু হয় ষষ্ঠী থেকে, কিন্তু আগেকার নিয়ম নিষ্ঠা সবই বহন করে আসছেন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম।
advertisement
বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির নিয়ম হল প্রতিমা বাড়িতেই তৈরি হবে। সেই মত বাড়ির সদস্যরাই প্রতিমা তৈরি থেকে প্রতিমা সাজানো সবটা নিজেরাই করেন। এমনকি পুজোয় ঢাকও বাজান বাড়ির সদস্যরাই। আগে অষ্টমী ও নবমীর দিন পাঁঠা বলি হত। এখন পাঁঠা বলি বন্ধ হয়েছে, তবে চালকুমড়ো বলি হয়। এই বাড়ির পুজোর বৈশিষ্ট্য হল, নবমীর দিন অন্ন ভোগ রান্না করা হয় এবং সেই বাসী ভোগ দশমীর পুজোর পর দধিকর্মার সঙ্গে ঠাকুরকে নিবেদন করা হয়। তারপরে দশমীর দিন অঞ্জলির মধ্যে দিয়ে পুজোর সমাপ্তি হয়।
পুরনো ঐতিহ্যকে ধরে রেখে ঠাকুর দালান সংস্কার করা হয়েছে। আগের থেকে পুজোর জৌলুস কিছুটা কমলেও এখনো পুজোর পাঁচটা দিন হইহই করে কাটে এলাকার সকলের। সমস্ত আত্মীয়-স্বজন একসঙ্গে হন পুজোর কদিন। বাইরে থেকেও লোক আসেন প্রতিমা দর্শন করতে। সর্বোপরি পুজোর পাঁচটা দিন আনন্দে মেতে ওঠেন বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ি ও গোটা এলাকা।
রাহী হালদার