স্থানীয় সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ির বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা নন্দীর সঙ্গে গত দু বছর আগে বিয়ে হয়ে আসে হুগলিতে। তার নতুন ঠিকানা হয় পোলবার গোস্বামী মালিপাড়ার। স্বামীর নাম সুচিন্ত নন্দী। মৃত প্রিয়াঙ্কা কমিউনিটি হেলথ অফিসার পদে ২০২১ সালে পোলবা হাসপাতালে যোগ দেয়। তার আগে চুঁচুড়া হাসপাতালে স্টাফ নার্স এর পদে কর্মরত ছিলেন। স্বামী সুচিন্ত শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট হিসেবে কাজ করেন। গত ৫ সেপ্টেম্বর চুঁচুড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে শিশু পুত্রের জন্ম দেয় প্রিয়াঙ্কা। তারপরেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে প্রিয়াঙ্কার।
advertisement
তড়িঘড়ি তাকে চুঁচুড়া হাসপাতালের আই সি ইউ তে ভর্তি করা হয়। সেখানেও অবস্থার অবনতি ঘটে। ওই রাতেই প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৯:৩০ মিনিট নাগাদ মৃত্যু হয় তার। তার সহ কর্মীরা জানান, অত্যন্ত নম্র ও ভদ্র স্বভাবের মেয়ে ছিলেন প্রিয়াঙ্কা। ভালো আবৃত্তি পাঠ করতে জানতেন। তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পোলবা হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রিয়াঙ্কার শ্বশুর স্বপন নন্দী জানান, বৌমাকে মেয়ের মতো ভালবাসতেন তারা। তাদের বৌমা হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন ছেলে ফোন করে জানিয়েছিল বাবা তুমি গোপাল চেয়েছিলে তোমার গোপাল এসেছে। প্রথমে পরিবারের মধ্যে খুশির হাওয়া উঠলেও তা ঝড়ের আগে নিস্তব্ধতার মত স্তব্ধ হয়ে যায়। এরপরই ফোন আসে সব শেষ হয়ে গেছে তাদের বাড়ির লক্ষী আর বাড়ি ফিরবে না।
আরও পড়ুনঃ পুজোর আগে শাড়ির মেলায় উপচে পড়া ভিড় মহিলা গ্রাহকদের
গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা পরিবারের উপর। পরিবারের অভিযোগ, ডাক্তারের গাফিলতি এবং নার্সিংহোমে অপারেশন থিয়েটারের ভালো ব্যবস্থা না থায়ায় প্রিয়াঙ্কার এই পরিণতি। অপারেশন করার আগে যে সমস্ত পরীক্ষা করা হয় তাও সঠিক ভাবে করা হয়নি। তাদের অনুমান ডাক্তার ভুল ট্রিটমেন্ট করেছেন। হুগলি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভূঁইয়া জানান, পরিবারের তরফে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয় তার কাছে।
আরও পড়ুনঃ ডাকাত সন্দেহে গাছে বেঁধে বেধড়ক মারধর এক যুবককে
সেই মর্মে ঘটনার তদন্তের জন্য একটি তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। ওই হাসপাতালটিকে শোকজ করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। কমিউনিটি হেলথ অফিসার প্রিয়াঙ্কার মৃত্যুতে তিনি দুঃখ প্রকাশ ও করেন। তিনি বলেন, শেষ একটি প্রোগ্রামে ওনাকে টেস্ট করা হয়েছিল। সেখানে নিজেদেরকেও চেকআপ করার কথা বলা হয়েছিল সেখানে দেখা গিয়েছিল প্রিয়াঙ্কার শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম ছিল। তবে মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য আবেদন করলে সেটা আমরা সব সময় দিয়ে থাকি।
Rahi Haldar