আরও পড়ুন: ডিজিটাল গোল্ড না কি ফিজিক্যাল গোল্ড? ভবিষ্যতের কথা ভেবে ধনতেরসের দিন কোনটা কিনবেন?
অনান্য বছরের মতো এই বছরেও ডেঙ্গুতে অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। এবং তাঁদের মধ্যে অনেকের পরিস্থিতি মারাত্মক হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়েছিল যে অনেককে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের অনেকের বক্তব্য, ডেঙ্গুর DENV 2 ভ্যারিয়ান্ট সব থেকে মারাত্মক ও শক্তিশালী। DENV-2-এর জন্যই অনেকের পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে।
advertisement
ডেঙ্গু এবং কোভিডের ক্ষেত্রে দু'টি ভিন্ন সমস্যা হলেও দু'টির উপসর্গ অনেক ক্ষেত্রে একই। ডেঙ্গু এমন একটি সমস্যা যা কোনও ভাবে অবজ্ঞা করা উচিত নয়। যদি কারও অতীতে কোনও শারীরিক সমস্যা থেকে থাকে এবং তিনি যদি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তাহলে তাঁর ক্ষেত্রে একটু বেশি সতর্ক থাকা উচিত। কারণ ডেঙ্গু তাঁর ক্ষেত্রে তুলনামূলক কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। এবং উপসর্গ প্রকাশের পর যত দ্রুত সম্ভব বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: Horoscope: দীপাবলিতে কেমন উপহার দিলে মঙ্গল হবে প্রিয়জনের? জেনে নিন কী বলছে রাশিচক্র!
কখন ডেঙ্গু মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করে?
ডেঙ্গুতে আক্রমণ হলেই যে পরিস্থিতি মারাত্মক জটিল হবে এমনটা ভাবা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ সবার ক্ষেত্রে যে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে ওঠে এমনটা দেখা যায় না। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক পরিস্থিতি জটিল হয় এবং দ্রুত খারাপ হয়। সাধারণ ডেঙ্গু ইনফেকশন যখন ডেঙ্গু হেমারেজিক ফিভারে (Dengue Hemorrhagic Fever) এবং ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে (Dengue Shock Syndrom)-এ পরিণত হয় তখন পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। এটা প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশু উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকী, সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে অনেকে ডেঙ্গুর কোনও একটি নির্দিষ্ট স্ট্রেনের ক্ষেত্রে প্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে তুললেও তিনি অন্য কোনও স্ট্রেনের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি মূলত দেখা দেখা দেয়। এছাড়াও যাঁদের অতীতে কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল তাঁরাও এই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন।
ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে আরও একটি অন্য সমস্যা হল সঠিক সময়ে উপসর্গ প্রকাশ না হওয়া। দেখা গিয়েছে কোনও ব্যক্তি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলেও তাঁর উপসর্গ প্রকাশ হতে ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগছে। এর ফলে চিকিৎসা শুরু করতে সময় লাগছে। এবং রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।
ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে আরও একটি সমস্যা হল প্লেটলেট কমে যাওয়া। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির শরীর থেকে অতি দ্রুত প্লেটলেট কমে যায়। এর জন্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীকে প্লেটলেট দেওয়ার প্রয়োজন হয়। সঠিক সময়ে প্লেটলেট না দিলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
আরও পড়ুন: Post Office Scheme: ১৫০০ টাকা প্রতি মাসে জমা করে পেয়ে যাবেন ৩৫ লক্ষ টাকা
শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা-
কোভিডের মতো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলেও শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডেঙ্গু আক্রমণের ফলে আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাকে অ্যাকিউট ইনফ্লমেশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর ফলে দ্রুত শ্বাস নেয় আক্রান্ত রোগী। পাশাপাশি শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা, শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়া, বুকে ব্যথা সহ একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। এই ধরনের কোনও সমস্যা দেখা দিলে অতি দ্রুত রোগীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা প্রয়োজন।
ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা গিয়েছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের কোনও অঙ্গ ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকী সেই অঙ্গ নিজের কার্যক্ষমতা হারায়। এই পরিস্থিতি তৈরি হলে রোগীকে সচেতন থাকতে হবে। যদি রোগী বুঝতে পারেন যে তাঁর শরীরের কোনও অঙ্গ কার্যক্ষমতা হারিয়েছে তাহলে তাঁর দ্রুত চিকিৎসের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অনেক ক্ষেত্রে হার্টেও ব্যাপক প্রভাব ফেলে ডেঙ্গি। হার্ট সঠিক ভাবে কার্যক্ষমতা হারায়।
আরও পড়ুন: এই দিওয়ালিতে মেয়েকে বানান লক্ষপতি, মাত্র ১ টাকা সেভিংস করে পেয়ে যাবেন ১৫ লক্ষ টাকা
রক্ষক্ষরণ-
ডেঙ্গুর ফলে শরীরের থাকা রক্তের ভেসেলগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর এর ফলে রক্ত ক্ষরণ হতে থাকে। এই ধরনের সমস্যা তৈরি হয় কারণ, কোনও ডেঙ্গুর মশা শরীরে কামড়ানোর সময় শরীরের ভিতর ভাইরাস প্রবেশ করে। এবং সেই ভাইরাস রক্ত প্রবাহের জন্য শিরা ও ধমনীর মধ্যে দিয়ে গিয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এবং রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, শরীরের বাইরে থেকে দেখলেও অনেক সময় বোঝা যায় যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে কি না। কারণ রক্তক্ষরণ শুরু হলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ লাল বর্ণ ধারণ করে।
পেট ব্যথা-
ডেঙ্গু আক্রান্তদের এটি একটি সাধারণ সমস্যা। পাকস্থলীতে ভীষণ ব্যথা হতে পারে। পাশাপাশি পেটে টান ধরতে পারে। এবং এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে সাধারণত বমি হওয়ার প্রবণতা থাকে। শুধু পেটে ব্যথা নয়, ব্যথা শুরু হলে শরীরে রক্তক্ষরণও শুরু হয়। খুব গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের চারিদিকে এই রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। তাই ডেঙ্গুর সময় পেটে ব্যথা বা এই জাতীয় কোনও সমস্যা দেখা দিলে তা ফেলে রাখা উচিত নয়। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মানসিক স্বাস্থের অবনতি-
ডেঙ্গুতে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে মানসিক স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি হয়। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গু ভাইরাস ব্রেন পর্যন্ত পৌঁছতে সক্ষম। তাই সেক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থের অবনতি দেখা দেয়। এক্ষেত্রে যেহেতু ডেঙ্গু ভাইরাস রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয় তাই সেক্ষেত্রে রক্তের মাধ্যমে ব্রেনে পৌঁছে যায়। ডেঙ্গু রোগীদের হতাশায় ভোগার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে ভুলে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
ব্লাড প্রেশার কমে যাওয়া
ডেঙ্গু আক্রান্তদের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে রক্তচাপ অতি দ্রুত কমে যাওয়ার সমস্যাও। এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে রোগীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। কারণ রক্তচাপ কমে গেলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ডেঙ্গু থেকে বাঁচার জন্য বেশ কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথমত বাড়ির আশেপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখতে হবে। কোনও জায়গায় যেন জল না জমে সেই দিকে নজর রাখতে হবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর বাড়িতে থাকা জলাশয়, ফুলদানি, অ্যাকোরিয়াম ইত্যাদিতে থাকা জল পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়াও মশারি টাঙিয়ে শোয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।