ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যালকোহল ডিনেচারড অ্যালকোহল নামেও পরিচিত। সোজা কথায়, বিশুদ্ধ ইথানল। মানুষের পানের যোগ্য নয়। ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যালকোহল পান করলে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা তো বটেই এমনকী মৃত্যুও হতে পারে। কারণ এটা মারাত্মক বিষাক্ত।
advertisement
কেরল, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব এবং উত্তর প্রদেশের রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যালকোহল থেকে অবৈধ মদ উৎপাদন করলে প্রাণহানির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না। এরপরই ২৩ অক্টোবর এই রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের নয় বিচারপতির বেঞ্চ ৮:১ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এই রায় দিয়েছে। ১৯৯০ সালের রায় বাতিল করে দেওয়া হয়েছে, যার বলে এই ক্ষমতা শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের হাতেই ছিল। আদালত ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যালকোহলকে ‘ইনটক্সিকেটিং লিকার’ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে, অর্থাৎ যা ক্ষতিকারক বা বিষাক্ত।
একমাত্র বিচারপতি বিভি নাগরত্না ভিন্ন মত পোষণ করেন। তাঁর মতে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যালকোহল মানুষের সেবনের উপযুক্ত না হলেও তাকে ‘ইনটক্সিকেটিং লিকার’-এর ক্যাটেগরিতে ফেলা উচিত নয়। পাশাপাশি তিনি এই বলে সতর্ক করেন যে রাজ্যগুলিকে এর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা দেওয়া হলে অ্যালকোহল সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের মূল উদ্দেশ্যের ভুল ব্যাখ্যা হতে পারে।
সাধারণত দুই ধরণের অ্যালকোহল হয়। ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যালকোহল এবং ইউজেবল অ্যালকোহল। ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যালকোহল বলতে আবার আইসোপ্রোপানল অ্যালকোহল এবং ডিনেচারড অ্যালকোহলকেই বোঝানো হয়। মূলত পরিস্কার বা জীবাণুমুক্ত করার কাজে ব্যবহৃত হয় আইসোপ্রোপানল অ্যালকোহল (C₃H₈O) । এছাড়া চিকিৎসাক্ষেত্রে অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে, উৎপাদন ক্ষেত্রে সলভেন্ট হিসেবে এর ব্যবহারের চল রয়েছে। ডিনেচারড ইথানল থেকে অনেক সময় অবৈধ মদ তৈরি করা হয়।
ইউজেবল অ্যালকোহল হল ইথাইল অ্যালকোহল। এটা মানুষ পান করতে পারে। বিয়ার, ওয়াইন, স্পিরিটের মতো পানীয়তে ইথাইল অ্যালকোহল মেশানো হয়। তৈরি করা হয় চিনি বা শর্করার ফার্মেন্টেশনের মাধ্যমে।
অতিরিক্ত ইথানল সবসময় বিষাক্ত। তবে অল্প বা মাঝারি মাত্রায় সেবন নিরাপদ বলে মনে করা হয়। মানবদেহ ইথানলকে বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভেঙে ফেলতে সক্ষম। তাই পরিমিত মাত্রায় সেবন করলে কোনও ক্ষতি হয় না বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।