Explained: ডিজিটাল গোল্ড না কি ফিজিক্যাল গোল্ড? ভবিষ্যতের কথা ভেবে ধনতেরসের দিন কোনটা কিনবেন?

Last Updated:

সোনা হল বিনিয়োগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা। অনেকেই প্রতি বছর বা নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর বেশ কিছু পরিমাণ করে সোনা কিনে রাখেন।

#কলকাতা: আজ ধনতেরস (Dhanteras 2021)। অতীতে মূলত অবাঙালিদের মধ্যে এই উৎসব পালন করার রীতি থাকলেও বর্তমানে বাঙালিরাও এতে সামিল হচ্ছেন। দেবী লক্ষ্মীর আরাধনার পাশাপাশি কুবেরের পুজো করা হয় এই দিনে। পাশাপাশি সোনা কেনার রীতি আছে এই উৎসবে। সোনার পাশাপাশি যে কোনও ধাতুও কেনা হয়। কথিত আছে, আজকের দিনে সোনা কিনলে দেবী লক্ষ্মী প্রসন্ন হন।
আজ সকাল থেকে সোনার দোকানে দোকানে ব্যাপক ভিড়। কেউ গয়না কিনছেন আবার কেউ কয়েন কিনছেন। কিন্তু আধুনিক প্রজন্মের অনেকে আবার এসবের দিকে না গিয়ে ডিজিটাল গোল্ডের দিকে ঝুঁকছেন। করোনা পরিস্থিতিতে যেমন ভিড় এড়াতে চাইছেন অনেকে, তেমনই ডিজিটাল গোল্ড কিনলে বাড়িতে রাখার প্রয়োজন নেই। চুরি হওয়ার কোনও ভয় নেই। যদিও অনেকের আবার ডিজিটাল গোল্ড না পসন্দ। কিন্তু কোন ধরনের গোল্ড এবারের ধনতেরসে কিনলে ভালো হয়? কোন ধরনের সোনার ক্ষেত্রে লাভ বেশি? জেনে নেওয়া যাক…
advertisement
advertisement
সোনা হল বিনিয়োগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা। অনেকেই প্রতি বছর বা নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর বেশ কিছু পরিমাণ করে সোনা কিনে রাখেন। আর সোনার দাম উর্ধ্বমুখী। তাই বিনিয়োগ করেও অনেকে পরবর্তীকালে ভালো লাভ করতে পারেন। বর্তমানে মিউচুয়াল ফান্ড বা স্টক মার্কেটে অনেকে বিনিয়োগ করলেও বিশেষজ্ঞদের মত, সোনায় বিনিয়োগ অত্যন্ত সুরক্ষিত। এবং রিটার্নও অনেক বেশি পাওয়া যায়। গত দশ বছরের হিসেব দেখা গেলে জানা যাবে, সোনার দাম গত ১০ বছরে উর্ধ্বমুখী হয়েছে। খুব কম সংখ্যক লোকের ক্ষেত্রেই দেখা যায় যাঁরা সোনায় বিনিয়োগ করেছেন অথচ অত্যন্ত কম লাভ হয়েছে অথবা লোকসান হয়েছে।
advertisement
অন্য দিকে, সোনা যে শুধুমাত্র বিনিয়োগের ক্ষেত্র তা কিন্তু নয়। অনেক ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের আর্থিক সুরক্ষা দিতেও সহায়তা করে সোনা।
এটা নিশ্চিত করে বলা যায় যে সোনা থেকে ভালো রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। কিন্তু কত টাকা রিটার্ন পাওয়া সম্ভব? প্রতি বছর কত টাকা করে লাভ করা সম্ভব সোনা থেকে? এই প্রতিবেদনে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
advertisement
কত টাকা করে রিটার্ন পাওয়া সম্ভব?
সোনার ক্ষেত্রে কোনও রিটার্নের নির্দিষ্ট শতাংশ যেহেতু নেই, তাই নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় যে সোনায় বিনিয়োগ করলে প্রতি বছর কত শতাংশ করে রিটার্ন পাওয়া যায়। তবে ১০ বছর আগে ধনতেরসের দিন যদি কেউ সোনা কিনে থাকেন তাহলে আজকের দিনের হিসেবে সেই ব্যক্তি বছরে ৬.৫৬ শতাংশ হারে রিটার্ন পাবেন। যা বছরের কস্ট ইনফ্লাশন ইনডেক্স বা CII থেকে ৫.৬ শতাংশ বেশি। CII অনুসারে গত ১০ বছরে সোনার দাম ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে যাঁরা অতীতে সোনা কিনেছেন বা সোনায় বিনিয়োগ করেছেন তাঁরা বেশ উচ্চ হারে রিটার্ন পেয়েছেন।
advertisement
বিশেষজ্ঞদের মত, বিগত বছরগুলিতে মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে সোনা। গত ১০ বছরের হিসেবে দেখা গিয়েছে, যাঁরা ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সোনায় বিনিয়োগ করেছেন তাঁদের রিটার্ন ডবল ডিজিটে পৌঁছে গিয়েছে। তবে অন্য দিকে গত দুই বছরের হিসেবে দেখা যাবে সোনায় বিনিয়োগ করে যাঁরা রিটার্ন নিয়েছেন তাঁদের অনেককেই আবার লোকসানের সম্মুখীনও হতে হয়েছে।
advertisement
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক গত ১০ বছরে সোনার দাম
বছর ১০ গ্রাম সোনার দাম
২০১১ ২৬৩৫০ টাকা
২০১২ ৩১০২৫ টাকা
২০১৩ ২৯৬৫০ টাকা
২০১৪ ২৮০০০ টাকা
২০১৫ ২৬০০০ টাকা
২০১৬ ২৮৭০০ টাকা
২০১৭ ২৬৬০০ টাকা
২০১৮ ৩১৪০০ টাকা
২০১৯ ৩৫৩০০ টাকা
২০২০ ৪৮৮০০ টাকা
২০২১ ৪৮৮৫০টাকা
বাজার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন কোভিড পরিস্থিতি কেটে যাওয়ার পর সোনার দামের ক্ষেত্রে সামান্য উন্নতি হয়েছে। কারণ গ্লোবাল ইকোনমি বা বিশ্বের অর্থনীতি কোভিড পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিল। সেই পরিস্থিতি কিছুটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। আর সেই কারণে সোনার দামের ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা লাভের মুখ দেখা গিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ এই বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন। কয়েকজন বলেছেন, সোনায় অতিরিক্ত বিনিয়োগ করা লাভজনক নয়। তবে বাজারের অস্থিরতা সামাল দিলে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সোনায় বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
advertisement
এটা লক্ষ্য করা গিয়েছে অর্থনীতি বা দেশের বাজার যখনই খারাপ হয়েছে অথবা টালমাটাল হয়েছে তখনই সোনার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, গত কয়েক বছরের সোনার দাম নিয়ে যদি একটি পর্যালোচনা করা যায় তাহলে দেখা যাবে সোনার দাম নিয়মিত বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু বছরের রিটার্ন খুব একটা ভালো পাওয়া যায়নি। চলতি বছরে সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকেও সোনায় রিটার্ন কম পাওয়া গিয়েছে। অনেকেই হয় তো প্রতি বছর বিভিন্ন উৎসবের সময় সোনার গয়না কেনেন বা সোনায় বিনিয়োগ করেন। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মত, মোট ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানের ১০ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ করা উচিত নয়। তাঁদের পরামর্শ, ফিজিক্যাল গোল্ডের পরিবর্তে গোল্ড এক্সচেঞ্জ ট্রেডে বিনিয়োগ করা লাভদায়ক। সোনার আরও একটি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। তা হল ডিজিটাল গোল্ড।
ডিজিটাল গোল্ড কী?
ডিজিটাল গোল্ড হল ফিজিক্যাল গোল্ডের ডিজিটাল ভার্সন। কোনও একজন বিনিয়োগকারী দোকানে গিয়ে যে ভাবে সোনা কেনেন এবং নির্দিষ্ট অর্থের বদলে যে পরিমাণ সোনা গ্রহণ করেন ডিজিটাল গোল্ডের ক্ষেত্রেও বিষয়টি অনেকটা একই। তবে শুধুমাত্র ডিজিটাল গোল্ডের ক্ষেত্রে দোকানে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। বাড়ি থেকে অনলাইনে সোনা কিনতে পারেন এক্ষেত্রে জনৈক ব্যক্তি।
ডিজিটাল গোল্ড কী ভাবে কেনা সম্ভব?
বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বা ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ডিজিটাল গোল্ড কেনা সম্ভব। এক্ষেত্রে ক্রেতা যে পরিমাণ সোনা কিনতে ইচ্ছুক সেই টাকা লিখে অথবা পরিমাণ লিখে সাবমিট করতে হবে এবং টাকা মেটাতে হবে। টাকা মেটানো হলেই সেই পরিমাণ সোনা ওই ব্যক্তির নামে নথিভুক্ত হয়ে যাবে। এবং যে সংস্থার মাধ্যমে কেনা হচ্ছে সেই সংস্থার নিজস্ব ভল্টে ওই সোনা মজুত থাকবে। ইচ্ছা হলে ক্রেতা ওই সোনা হোম ডেলিভারি নিতে পারেন। অথবা বিক্রি করে দিতে পারেন।
ডিজিটাল গোল্ডের সুবিধা কী কী?
অনলাইনের মাধ্যমে কেনা ও বিক্রি করা সম্ভব।
ফিজিক্যাল গোল্ড যেহেতু সংস্থার ভল্টে রাখা থাকে তাই চুরি হওয়ার ভয় নেই।
যখন ইচ্ছা, তখন বিক্রি করে দেওয়া সম্ভব।
২৪ ক্যারাট ৯৯৯.৯ বিশুদ্ধতায় সোনা পাওয়া সম্ভব।
আজ যেহেতু ধনতেরস চলছে তাই সোনা কেনার হিড়িক চোখে পড়ার মতো। তবে অন্য দিকে ডিজিটাল গোল্ডও এই সব সুবিধার কারণে ক্রেতাদের টানছে।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/ব্যবসা-বাণিজ্য/
Explained: ডিজিটাল গোল্ড না কি ফিজিক্যাল গোল্ড? ভবিষ্যতের কথা ভেবে ধনতেরসের দিন কোনটা কিনবেন?
Next Article
advertisement
Success Story: বেঙ্গালুরুর দুই বোনের কাজ দেখে দোকানদাররা হাসতেন, এখন তাঁরাই ১০০ কোটি টাকার ব্যবসা পরিচালনা করছেন
বেঙ্গালুরুর দুই বোনের কাজ দেখে দোকানদাররা হাসতেন, এখন তাঁদেরই ১০০ কোটি টাকার ব্যবসা !
  • বেঙ্গালুরুর দুই বোনের কাজ দেখে দোকানদাররা হাসতেন

  • এখন তাঁদেরই ১০০ কোটির ব্যবসা !

  • জেনে নিন তাঁদের সাফল্যের কাহিনি

VIEW MORE
advertisement
advertisement