১৯৫১, ১৯৫৭, ১৯৬২, ১৯৬৭, ১৯৬৯, ১৯৭১ সালে বরানগর কেন্দ্র থেকেই জয়ী হন তিনি। তবে, ১৯৭২ সালে বরানগর বিধানসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময়, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোট লুটের অভিযোগে জ্যোতি বসু ওই বছর নির্বাচন শুরুর কিছু সময় পরেই প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। তারপর থেকে বরানগর কেন্দ্রে সিপিএম আর প্রার্থী দেয়নি। পরবর্তীতে বিভিন্ন নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে বামেদের তরফে আরএসপিকেই প্রার্থী দিতে দেখা গিয়েছে। দীর্ঘ প্রায় ৫২ বছর পর ২০২৪ সালে এই বিধানসভার উপনির্বাচনে আবারও ফের প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম। ফল ঘোষণার আগে তাই অনেকটাই আবেগ তাড়িত সিপিএম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য-সহ বাম কর্মী সমর্থকরা।
advertisement
আরও পড়ুনঃ ক্যালসিয়ামের পাওয়ার হাউজ, আয়রনের আঁতুরঘর, পুষ্টিতে ঠাসা এই বীজ সপ্তাহে ২-৩দিন মাস্ট
বামেদের সদস্যরা জানিয়েছে, এই বিষয়টি তাদের কাছে গর্বের। পাশাপাশি ‘কাস্তে হাতুড়ি তারা’ প্রতীকের মর্যাদা রক্ষারও লড়াই বলে মনে করছেন অনেকে। নির্বাচনের দিন বিধানসভা এলাকার এ প্রান্ত-সে প্রান্ত ঘুরে ভোট পরিচালনা করতে দেখা গিয়েছে সিপিএম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্যকে। প্রয়োজনে রুখেও দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে তাকে। যা দেখে অনেকেই বলেছেন ‘বুড়ো হারে যেন বাঘের বাচ্চা’।
এক সময় যে কংগ্রেসের জন্য প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু, আজ সেই কংগ্রেসের সমর্থনেই সিপিএম প্রার্থী হিসেবে লড়াই বিষয়টি নিয়ে তন্ময় ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করলে, তার জবাব- ‘কংগ্রেস দলের সবচেয়ে হিংস্র অংশ তৃণমূল’। প্রগতিশীল অংশ রয়ে গিয়েছে কংগ্রেসেই। ফলে সেই প্রগতিশীল অংশ, যারা ধর্ম নিরপেক্ষতার পক্ষে এবং যারা দেশের সংবিধানের পক্ষে রয়েছে, তাদের সঙ্গে দেশের সংবিধান ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে বাঁচানোর জন্য একসঙ্গে চলা বলে আমরা বিশ্বাস করি। আর তাই বামফ্রন্টের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব বসে এবং জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করে কোন আসনে কে লড়বে সেটা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই হিসেবে এই কেন্দ্রে সিপিএম লড়বে এটা ঠিক হয়েছে এবং দল আমাকে প্রার্থী করেছে।’
যদিও ২০১১ সালের পর থেকে এই বিধানসভা কেন্দ্রে বামেরা সংখ্যালঘু হয়ে, ফোটে ঘাসফুল। যদিও সেই সময় থেকে পরবর্তী নির্বাচন গুলিতে পর্যায়ক্রমে বামেদের ভোট সংখ্যা অনেক অংশেই বেড়েছে এই বিধানসভা এলাকায়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে, উপ নির্বাচনে এবার ত্রিমুখী লড়াই তৃণমূল ও বিজেপির সঙ্গে। তবে জ্যোতি বসুর প্রতীক চিহ্নে ভোট দিয়ে, বাম কর্মী সমর্থকরা পুরনো লাল দুর্গ ফেরতের লড়াইয়ে যথেষ্টই আশাবাদী। অপেক্ষা আর মাত্র কিছু ঘণ্টার। বরাহনগর বিধানসভায় কি আবারও উড়বে লাল পতাকা নাকি ফুলের দাপটে পিছিয়ে পড়বে কাস্তে হাতুড়ির দল, তা জানতে অপেক্ষায় রাজ্যবাসী।
Rudra Narayan Roy