প্রসঙ্গত, বালুরঘাট ব্লকের বোল্লা এলাকায় এখনও একাধিক পরিবার এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছে। কাঠের আসবাবপত্র পরিবর্তন হয়ে শহরে গৃহস্থের ঘরে ঠাঁই নিয়েছে প্লাস্টিকের চেয়ার, টুল। তবে,গ্রাম বা শহরে কোথাও কোথাওএখনও চাল মাপার পাশাপাশি অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য মাপতে বেতের তৈরি কাঠা ও ধামার প্রচলন রয়েছে। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও কাঠার ব্যবহার হয়ে থাকে। ফলে সারা বছরই কমবেশি চাহিদা থাকে কাঠা থেকে ধামার। মেলার মরশুমে চাহিদা বেশি থাকে। তখন পরিবারের সকলে মিলে বেতের কাঠা তৈরিতে হাত লাগান। তবে, বাকি সময় বাড়ির বয়স্করা শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখেন। নতুন প্রজন্মের সকলেই পরবর্তীতে পাড়ি দেয় ভিন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে। সেখানে গিয়েও হাতের কাজই করেন।
advertisement
বেতের উৎপাদন জেলা কিংবা পার্শ্ববর্তী এলাকায় না থাকার ফলে নিয়ে আসতে হয় ভিনরাজ্য অসম থেকে। সেক্ষেত্রেও সমস্যা অনেক পরিবহণের। খরচ বেড়েছে দামের ক্ষেত্রেও। সবমিলিয়ে হারিয়ে যাওয়া এই কুটির শিল্পকে কোনক্রমে আজও বাঁচিয়ে রেখেছেন বোয়ালদার গ্রামের ছ’টি পরিবার। উল্লেখ্য, বালুরঘাট ব্লকের বোল্লা এলাকায় বেত শিল্পীদের বাড়িতে গেলেই বোঝা যায় অভাব প্রতিটি জায়গা থেকে উঁকি মারছে।
এক সময়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে ছিলেন বেত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রচুর শিল্পী। পাশাপাশি, এই সমস্ত শিল্পীদের তৈরি করা জিনিসপত্রের কদরও ছিল অনেক। কিন্তু সেই চাহিদা কালক্রমে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সেভাবে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সরকার। শিল্পীদের পক্ষ থেকে জানা যায়, বিগত কয়েক বছর আগে বেতের একটি বোঝা যা দাম ছিল, বর্তমানে তার দাম প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। কিন্তু একইভাবে রয়ে গেছে বেতের তৈরি করা জিনিসপত্রের দাম। বিশেষ বাড়েনি বললেই চলে। এমনকি শিল্পী কার্ড পর্যন্ত হয়নি বলে আক্ষেপ এই সমস্ত বেত শিল্পীদের। তবে তারা সেই তকমার পরোয়া করেন না।
জীবন জীবনের মতই এগিয়ে চলে, তারা তাদের শিল্পী পরিচয়কে বাঁচিয়ে রাখেন তাদের ভাঙা ঘরের দাওয়ায় বসে আজও।