সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের আগের সেই অবস্থা আর নেই বললেই চলে। অবস্থা নেই বলে কি এতদিনের পুজো বন্ধ হয়ে যাবে? এর পর মনহলি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা একত্রিত হয়ে চাঁদা তুলে বারোয়ারি মতে পুজো করে আসছে বিগত প্রায় ১৫ বছর ধরে। বারোয়ারি মতে পুজো হলেও আজও সেই দুর্গাপুজো জমিদারবাড়ির পুজো বলেই খ্যাত রয়েছে।
advertisement
উল্লেখ্য, বর্ধমানের কাটোয়া অঞ্চলের সিংগি গ্রাম থেকে বর্ধমান মহারাজার নির্দেশে দিনাজপুরের মহারাজার এলাকায় এরিয়া ডেভেলপমেন্টের কাজে এসেছিলেন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার। তারাচাঁদ বন্দোপাধ্যায় তার হাত ধরেই পরবর্তী সময়ে তপন ব্লকের মনহলি অঞ্চলে শুরু হয় এলাকা উন্নয়নের কাজ।
প্রথম অবস্থায় ডাকাতদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এই মনহলি এলাকায় ধীরে ধীরে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের প্রভাব বাড়তে শুরু করে।বিভিন্ন ব্যবসার মাধ্যমে প্রভূত টাকার মালিক হয়ে ওঠেন এই পরিবারের সদস্যরা। ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে ১৮৩০ সালে জমিদারি শুরু হয় মনহলি গ্রামে। এরপর দীর্ঘ সময় পেরিয়েছে, কালের নিয়মে ধ্বংস হয়ে গেছে।তবে, জমিদারির অনেক কিছুই পুরনো ইতিহাসকে সাক্ষী করে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, মনহলি জমিদার পরিবারের রাজবাড়ির সেই জাঁকজমক আর নেই। চণ্ডীমণ্ডপ থাকলেও সেখানে আর পূজা আরাধনা হয় না বললেই চলে।
বর্তমান প্রজন্মের জমিদার বংশের অমর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, দুর্গা পুজোর এই পাঁচ দিন জমিদার পরিবারের নানা অনুষ্ঠান হত। বসত নহবতখানা, এখন গ্রামবাসীদের পক্ষে সেটা মেনে চলা সম্ভব নয়। বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের পুজোয় প্রতিদিনই বলি প্রথার আয়োজন থাকত।
এছাড়াও বিশেষ পূজা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে লোকজনকেও খাওয়ানো হত পুজোর কদিন। এখন আর সে আর্থিক সামর্থ্য জমিদার পরিবারের নেই। দেখভালের অভাবে জমিদার বাড়ি ভেঙে পড়েছে। হয়ে উঠেছে ভুতুড়ে বাড়ি।
শুধুমাত্র একজনই জমিদার পরিবারের সদস্য, অমর বন্দোপাধ্যায় মনহলিতে থাকেন এবং একাই বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন জমিদার পরিবারের শেষ স্মৃতিটুকু।





