বোলপুরের ইলামবাজারের কাছে রয়েছে রাইপুর গ্রাম। এই গ্রামের মূল আকর্ষণ রাইপুর জমিদারবাড়ি। বোলপুরে স্টেশনে নেমে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে গেলেই পৌঁছে যাবেন এই জমিদার বাড়িতে। স্টেশনে নেমে মাত্র ১৫০-২০০ টাকার বিনিময়ে পৌঁছে যাবেন এই গা ছমছম পরিবেশে। পরিত্যক্ত এই জমিদার বাড়ি আপনার শান্তিনিকেতন ট্রিপের অংশ হয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুনঃ আপনার নামের প্রথম অক্ষর ‘S’? কেমন ধরনের মানুষ হন তাঁরা? জেনে নিন অবশ্যই
advertisement
বর্গী আক্রমণের সময় মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা থেকে লালচাঁদ সিংহ তার তিন পুত্রকে নিয়ে আসেন। সেই লালচাঁদের ছোটপুত্র শ্যাম-কিশোর সিংহ যার নামে বর্তমানে শ্যামবাটি বলে একটি জায়গা রয়েছে বোলপুরে। এই শ্যাম কিশোর সিংহ যখন নিজের ব্যবসা ধীরে ধীরে বাড়াতে শুরু করে তখন এই বাড়ির প্রতিষ্ঠা শুরু হয়। সেই সময়টা আনুমানিক ১৭৮০ কিংবা ১৭৯০ সাল তখন থেকেই এই বাড়ির কাজ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে পরিবারের সদস্য সংখ্যা যত বেড়েছে, বাড়ির এলাকা ততটাই বেড়েছে।
বর্তমানে এই জমিদার বাড়িটি ৬৩ বিঘা জমির ওপর। এলাকার মধ্যে পাঁচটি পুকুর রয়েছে। এই জমিদার বাড়িতে প্রায় শতাধিক ঘর রয়েছে। বর্তমানে মূলত জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর এবং অর্থনৈতিক অভাব এবং তার সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিশাল আকারের এই জমিদার বাড়ির অবস্থা ভগ্নপ্রায়। রায়পুরের বাসিন্দা অঙ্কুশ দাস জানান, ২০১৮ সাল থেকে রায়পুর যুব সংঘ যারা বর্তমানে স্থানীয় সিংহ পরিবারের সদস্য এবং এই যে বিভিন্ন অংশ অর্থাৎ সাত বিঘা জমির মধ্যে যাদের যাদের মালিকাধীন রয়েছে তাদের সাথে আলোচনা করে এই ভগ্ন প্রায় রাজবাড়ির পরিবেশগত রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন।
বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে রায়পুর যুব সংঘ এই ভগ্নপ্রায় বাড়িটি সংস্কারের চেষ্টা করছে। আগামী দিনে এই রাজবাড়িটিকে মিউজিয়ামে পরিবর্তন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রত্যেক দিন এখানে পর্যটক দের ভিড় থাকে তবে মূলত শনি এবং রবিবার পর্যটকদের ভিড় থাকে বেশি। তবে আপনি এখানে ঘুরতে এলেন আপনাদের থাকতে হবে শান্তিনিকেতন কিংবা বোলপুরের যে কোনও লজে। তবে এই রাজবাড়িতে প্রবেশ করতে আপনাকে কোন টাকা খরচ করতে হবে না। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই রাজবাড়ী আপনি ঘুরে যেতে পারেন। পটনা থেকে রাজবাড়িতে আগত এক পর্যটক জানান, যখন রাজবাড়িতে প্রবেশ করলাম শিহরণ অনুভব করেছি। তবে এত বড় প্রসাদের এমন ভগ্নপ্রায় অবস্থা খুবই দুঃখের।
সৌভিক রায়