পৌষ মেলার ইতিহাসে যাবত চারবার এই মেলার আয়োজন করা হয়নি। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে পৌষ মেলার আয়োজন করা হয়নি দুর্ভিক্ষের কারণে এবং ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে মেলা বন্ধ ছিল সাম্প্রদায়িক অশান্তির কারণে। এই দু'বছর ছাড়া করোনার কারণে ২০২০ এবং ২০২১ সালে বন্ধ থাকে মেলা। তবে এই বছর বিশ্বভারতীর তত্ত্বাবধানেই পৌষ মেলার আয়োজন করা হবে এমনই আশার আলো জাগতে শুরু করেছে।
advertisement
আরও পড়ুন: উদ্বোধনের দিন সেজে উঠেছে শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন? কেমন লাগছে দেখুন ছবিতে...
মেলার প্রস্তুতি নিয়ে বিশ্বভারতীর কর্মী পরিষদের যুগ্ম কিশোর ভট্টাচার্য, মহুয়া ব্যানার্জি, গৌতম সাহা, বাপি দাস শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে সম্প্রতি একটি চিঠি দেয় এই বছর পৌষ মেলার আয়োজন যাতে করা হয় তার জন্য। চিঠি পেয়ে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার জানান, \"এই বছর মেলা না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই। যদিও বর্তমানে করোনা গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী, তবে মনে করা হচ্ছে মেলা আসতে আসতে সেই গ্রাফ স্থিতিশীল হয়ে যাবে। কর্মী পরিষদের তরফ থেকে মেলার আয়োজন করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।"
আরও পড়ুন: সপ্তাহের প্রথমদিন কেমন থাকবে আবহাওয়া? কোন কোন জেলা ভাসবে বৃষ্টিতে? জানুন...
বিশ্বভারতী কর্মী পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, "গত দু'বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে মেলা আয়োজন বন্ধ ছিল। তবে এই বছর আমরা সকলের সহযোগিতা নিয়ে মেলার আয়োজন করতে চাইছি। মেলার আয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের সহযোগিতার জন্য উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর রাজ্যের মুখ্য সচিবকে একটি চিঠি দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীকেও একটি চিঠি দেওয়া হবে। কারণ বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় হলেও পৌষ মেলার আয়োজনের ক্ষেত্রে পৌরসভা থেকে শুরু করে রাজ্য সরকারের অনেক ভূমিকা রয়েছে। মেলার আয়োজন নিয়ে এটি প্রাথমিক পর্যায়। আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে সমস্যা মিটিয়ে মেলার আয়োজন করতে রাজি বিশ্বভারতী।"
মেলার এই আয়োজনের আভাস মিলতেই খুশির হাওয়া বোলপুর এবং শান্তিনিকেতনের সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে। ব্যবসায়ীদের তরফ থেকে আমিনুল হুডা জানিয়েছেন, "পৌষ মেলার উপর নির্ভর করে এখানকার ব্যবসায়ীদের মোটা অংকের একটি মুনাফা হয়ে থাকে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। যে কারণে মেলার আয়োজন হবে এই আভাস মিলতেই কিছুটা হলেও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।"
প্রসঙ্গত, ২০২০ এবং ২০২১ সালে পরপর দু'বছর পৌষ মেলা বন্ধ থাকলেও গত বছর শান্তিনিকেতনের ব্যবসায়ীরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় ডাকবাংলো মাঠে বিকল্প একটি পৌষ মেলার আয়োজন করে। সেই পৌষ মেলাতেও উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। পৌষ মেলার চাহিদা যে বছরের পর বছর রয়ে গেছে তার প্রমাণ দেয় এই বিকল্প পৌষ মেলা। তবে এই বছর বিশ্বভারতী যদি মেলার আয়োজন করে থাকে তাহলে আর বিকল্প পৌষ মেলার কোন প্রয়োজন হবে না বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।
Madhab Das