কথিত আছে, কয়েক শতাব্দী আগে অষ্টাবক্র মুনি মা অন্নপূর্ণাকে সঙ্গে নিয়ে কাশি থেকে বক্রেশ্বরের দিকে যাচ্ছিলেন বক্রেশ্বর নদী ধরে। অষ্টাবক্র মুনির উদ্দেশ্য ছিল বক্রেশ্বরে মাকে প্রতিষ্ঠিত করা। কিন্তু এই যাওয়ার পথে বর্তমান পুরন্দরপুর বেহিরা গ্রামে নৌকা আটকে যায় জলের অভাবে। ওই সময় আবার ওই গ্রামে তপস্যা করছিলেন ভরদ্বাজ মুনি। আর সেই মুনির আহ্বানে দেবী অন্নপূর্ণা কালী রূপে বসে যান একটি নিমগাছের তলায়। তারপর তিনি সেখানেই প্রতিষ্ঠিত হলেন, নাম হল নিম্ববাসিনী কালী। আর এই কালী মায়ের নিত্যসেবা শুরু করেন ভরদ্বাজ মুনি।
advertisement
অন্যদিকে কবি তুলসী দাস গোস্বামীর রামচরিত মানসে এক জায়গায় উল্লেখ রয়েছে 'ভরদ্বাজ মুনি বসতি প্রয়াগা'। আর এই উল্লেখ্য অনুযায়ী যে সকল উদাহরণ পাওয়া যায় তার সাদৃশ্য রয়েছে বেহিরা গ্রামে। চারিদিক গভীর ঘন জঙ্গল, নানান ধরনের জানা-অজানা গাছের সমাবেশ। কোথাও কোনো রকম কোলাহল নেই। এমনকি বর্তমান পরিস্থিতিতেও এই এলাকায় এমন নির্জনতা চোখে পড়ে।
এখানে ভরদ্বাজ মুনি এবং অষ্টাবক্র মুনির দুটি মন্দির রয়েছে। যে দুটি মন্দিরের প্রতিষ্ঠা রয়েছে শিবলিঙ্গ। মন্দিরের সামনে রয়েছে হাড়িকাঠ। এখনো মায়ের মন্দিরের পিছনে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী সেই নিমগাছটি। এছাড়াও রয়েছে বেশকিছু সমাধিস্থল, মন্দির সংলগ্ন একটি আশ্রম এবং ডোবা।
আরও পড়ুন: ১৩৫ জন কাকদ্বীপের মৎস্যজীবী আটকে ছিল বাংলাদেশের জেলে! অবশেষে জানুন কী হল তাঁদের সঙ্গে!
এখানে মন্দিরের মধ্যে এই নিম্ববাসিনী মায়ের মূর্তি প্রতিষ্ঠিত রয়েছে এক কোণে। মায়ের মূর্তি মৃণ্ময়ী এবং চার ফুটের। মায়ের পরনে থাকে বেনারসি, নাকে টানা দেওয়া নথ, মায়ের চোখ আকর্ণ। এখানে মায়ের সাথে মহাদেব অর্থাৎ শিবকে দেখা যায় না। এর পিছনে যে কাহিনী রয়েছে তা থেকে জানা যায়, কাশিতে বাবা বিশ্বনাথকে রেখে তিনি একা এসেছিলেন বলে মহাদেব নেই। তবে মহাদেব না থাকলেও পাশে রয়েছে একটি শিবলিঙ্গ।
Madhab Das