হানা দেওয়ার পর সিবিআই আধিকারিকরা ব্যাঙ্ক অফিসারদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে তাদের কথায় বেশ অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। তারা কিছুতেই সিবিআইকে কোন প্রকার সাহায্য করতে রাজি ছিল না। পরবর্তীতে সিবিআই যখন তাদের সকলকে গ্রেফতারের হুমকি দিলে ভীত হয়ে তারা সেসব অ্যাকাউন্টের নথিপত্র সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেন বলে জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন - পারলেন না হৃদয়ের টান অগ্রাহ্য করতে, ঋষভ পন্থকে দেখতে হাসপাতালেই! ছবি শেয়ার উর্বশী রাউতেলার
advertisement
এই তদন্তের প্রধান মাথা হলেন সুশান্ত ভট্টাচার্য। গরু পাচার মামলায় তদন্ত করার স্বার্থেই সিউড়ির এই বীরভূম ডিস্ট্রিক্ট কোঅপারেটিভ ব্যাংকের কীর্তিকলাপ উঠে আসে। সুশান্ত ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে মোট তিন সদস্যের আধিকারিকরা হানা দেয় এই ব্যাঙ্কে। প্রথম পর্বে ১৭৭ টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের হদিস পান তারা। প্রায় তিন ঘন্টা তল্লাশির পর উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ওই ১৭৭ টি অ্যাকাউন্টে স্বাক্ষর মাত্র একজন ব্যক্তির এবং এই অ্যাকাউন্টগুলির সঙ্গে কেমন যেন গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে অনুব্রত মণ্ডলের যোগসূত্রের।
আরও পড়ুন - Weather Alert: ধাঁইধাঁই করে নামছে তাপমাত্রা প্রবল শীতে কলকাতার হাড় হিম! তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির কোঠায়
এই কটি অ্যাকাউন্ট মিলে প্রায় ১০ কোটি টাকা মত পাওয়া গেছে এখনও অবধি। সব কটি অ্যাকাউন্টের নথি সংগ্রহ করে সিবিআই আধিকারিকেরা প্রায় সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে বেরোন। যদিও এই অ্যাকাউন্টগুলিতে ঠিক কার সই রয়েছে, সেটি এখনো প্রকাশ্যে আনেন নি সিবিআই আধিকারিকরা। তবে এই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যে রাজ্যের খাদ্য দফতরের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে, তা জানা গিয়েছে।
অনুমান করা হচ্ছে যে, গরীব মানুষদের কাছ থেকে কম টাকায় ধান কিনে খাদ্য দফতরের কাছে তা চড়া দামে বিক্রি করে যে কালো টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল, সেই টাকাই সাদা করবার জন্য ব্যবহার করা হত এই অ্যাকাউন্টগুলি। এছাড়া গরু পাচারের সময় যে সমস্ত টাকা আদান-প্রদান হয়েছে, সেই টাকাগুলি এই অ্যাকাউন্টগুলির মাধ্যমে সাদা করা হতো বলে মনে করা হচ্ছে।
তদন্ত সূত্রের খবর যে, এই অ্যাকাউন্টগুলি মূলত ২০২০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যেই খোলা হয়েছিল। যখন ব্যাঙ্কের ম্যানেজার পদে নিযুক্ত ছিলেন ইয়াং গুরুং নামে এক ব্যক্তি। যেহেতু এর আগেও সিবিআই বেশ কয়েকবার ব্যাঙ্কে হানা দিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল এবং তার মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের অ্যাকাউন্টগুলি পরিদর্শনের জন্য, তাই এইবারও সেই সূত্রেই হয়তো তারা হানা দিলেন সিউড়ির এই ব্যাঙ্কে।
ব্যাঙ্কের বর্তমান ম্যানেজার অভিজিৎ সামন্ত সংবাদ মাধ্যমের কাছে জানালেন যে, হঠাৎই তাদের না জানিয়ে সিবিআই আসেন তাদের ব্যাঙ্কে। সিবিআইয়ের কথা মত তারা যথেষ্ট তাদেরকে সাহায্য করেন তদন্তে। সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি ও সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেন তারা। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান।
নুরুল ইসলাম কোন প্রকার অভিযোগ মানতে চাননি। তার মতে বোর্ড ব্যাংকের লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে কখনোই মাথা ঘামায় না। তাই ব্যাঙ্কের মারফত যদি কোন ভুয়ো লেনদেন বা অ্যাকাউন্ট মারফত কোন কালো টাকার লেনদেনের খবর আসতো, তবে তারা অবশ্যই সেই মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করত। কিন্তু তারা এখনো পর্যন্ত এরকম কোন অভিযোগ পাননি। তাই এই বিষয়ে তিনি তেমন কিছু বলতে পারবেন না।
Madhab Das