Bijon Setu Massacre: ৪৩ বছর আগে, আজকের দিনেই বিজন সেতুতে ১৭ জন আনন্দমার্গীকে হত্যা! কী ঘটেছিল সেদিন জানেন? CPIM-কে 'ইতিহাস' মনে করালেন কুণাল ঘোষ
- Published by:Suman Biswas
- news18 bangla
Last Updated:
Bijon Setu Massacre: বিজন সেতুতে আনন্দমার্গী হত্যাকাণ্ড নিয়ে ইতিহাস কী বলছে, জেনে নেওয়া যাক।
বুধবার তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছেন, ''আজ ৩০ এপ্রিল, বিজন সেতুতে ১৭ জন আনন্দমার্গী সন্ন্যাসী/সন্ন্যাসীনিকে পিটিয়ে, জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার ৪৩ বছর। সেদিন ইস্তফা দূরের কথা মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলেও যাননি। নিহতেরা ন্যায়বিচার পাননি। অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে করেছিল সিপিএম। প্রাথমিক FIR সে কথা বলছে। কিন্তু সরকারি মদতে সব ধামাচাপা এবং লোপাট। তখন কম্পিউটার ছিল না। হাতে লেখা ফাইল।''
advertisement
এখানেই শেষ নয়, কুণাল ঘোষ আরও লেখেন, ''প্রশাসনের মধ্যে যাঁরা সমর্থন করেননি, ক্ষোভ জানিয়েছিলেন, সেই দক্ষিণ ২৪ পরগণা অতিরিক্ত জেলাশাসক শের সিং, ওসি তিলজলা গঙ্গাধর ভট্টাচার্যকে কোণঠাসা করা হয়। গঙ্গাধরবাবুকে ওই ষড়যন্ত্রী মহল মুখ বন্ধ করাতে পরে খুন করে। এই সিপিএমের আজকের কমরেডরা অতীত ভুলে 'We want Justice' এর নাটক করেন কী করে? এই সিপিএম গণহত্যাকারী, নারীঘাতী, দলতন্ত্রের কাপালিক। বিজন সেতুতে সন্ন্যাসীদের গণহত্যা আজ সকলকে মনে করিয়ে দেওয়া দরকার।'' এ যদি তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের আক্রমণ, তাহলে ইতিহাস কী বলছে জেনে নেওয়া যাক।
advertisement
১৯৮২ সালের ৩০ এপ্রিল, শিক্ষাবিষয়ক সেমিনারে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দায়িত্বে থাকা আনন্দমার্গী সাধু সন্ন্যাসীর দল কলকাতার তিলজলা আনন্দমার্গ কেন্দ্রীয় আশ্রমের অভিমুখে রওনা দিয়েছিলেন। ঘড়ির কাঁটায় তখন ৭টা থেকে সাড়ে ৭টা। সন্ন্যাসীদের একটি গাড়ি তখন বিজন সেতুর উপর দিয়ে যাচ্ছিল। তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি যে কী নৃসংশ পরিণতির মুখোমুখি হতে চলেছেন তারা। তখন সেতুতেই ওৎ পেতে ছিল আক্রমণকারীদের দল। তাদের প্রত্যেকের হাতে ছিল রড,শাবল, ছোরাসহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র।
advertisement
সন্ন্যাসীদের গাড়িটি নাগালের মধ্যে পেতেই ঘিরে ধরে আক্রমণকারীরা। গাড়ি দাঁড় করিয়ে আনন্দমার্গী সাধু-সন্ন্যাসীদের একে একে গাড়ি থেকে টেনে বের করে হাতে থাকা রড দিয়ে পিটিয়ে, ছোরা দিয়ে চোখ উপড়ে ফেলে সেখানে অ্যাসিড ঢেলে, শরীর কেটে পেট্রল ঢেলে আধমরা অবস্থায় জীবন্ত জ্বালিয়ে বিজন সেতুর উপর থেকে নীচে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
advertisement
advertisement
ঘরে বাইরে চাপের মুখে পড়ে জ্যোতি বসুর নেতৃত্বাধীন সরকার তদন্ত কমিশন গঠন করতে বাধ্য হয়। কিন্তু ‘দেব কমিশন’ নামে গঠিত কমিশনের রিপোর্ট আজও প্রকাশ্যে আসেনি। আনন্দমার্গী নিয়ে বিচারপতি অমিতাভ লালার নেতৃত্বে গঠিত এক সদস্যের কমিটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন সিপিএম নেতা তথা সে সময়কার মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়৷
advertisement
আনন্দমার্গী হত্যার তদন্তের জন্য ২০১৩ সালে বিচারপতি অমিতাভ লালার অধীনে কমিটি গঠন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার৷ সেই কমিটি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কে৷ জেরার জন্য তাঁকে ডেকে পাঠানোর এক্তিয়ার প্রসঙ্গে কমিশনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়৷ তাঁর দাবি, ঘটনার সময় বিচারপতি এস সি দেবের নেতৃত্বে একটি কমিশন তৈরি হয়েছিল৷
advertisement
advertisement
দত্ত কমিশনের কাজে অবশ্য খুশি ছিলেন না আনন্দমার্গীরা। তৃণমূল রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পুনরায় ওই ঘটনায় তদন্তের আবেদন করেছিলেন তাঁরা। গঠিত হয় লালা কমিশন। সল্টলেকের ইন্দিরা ভবনে সেই কমিশনের সাক্ষ্যগ্রহণের কাজ চলে দীর্ঘদিন। সেই কমিশনেও সাক্ষ্য দিতে যান কান্তিবাবু।
advertisement