Paschim Medinipur News: পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলের বাড়িতে বাড়িতে পালিত 'আভড়াপুনেই'
- Published by:Soumabrata Ghosh
Last Updated:
রবিবার কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার দিনে দক্ষিণ পশ্চিম সীমান্তবাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিশেষ করে সুবর্ণরেখার উভয় তীরেপালিত হয় "আভড়াপুণেই" বা অব্যূঢ়া পূর্ণিমা (অব্যুঢ়া ব্রত)। এই লিঙ্গবৈষম্য হীন লৌকিক উৎসব অবিবাহিত ছেলেমেয়েদের জন্য।
#পশ্চিম মেদিনীপুর : রবিবার কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার দিনে দক্ষিণ পশ্চিম সীমান্তবাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিশেষ করে সুবর্ণরেখার উভয় তীরেপালিত হয় "আভড়াপুণেই" বা অব্যূঢ়া পূর্ণিমা (অব্যুঢ়া ব্রত)। এই লিঙ্গবৈষম্য হীন লৌকিক উৎসব অবিবাহিত ছেলেমেয়েদের জন্য। উৎকল সংস্কৃতি বা ওড়িশার রীতি প্রভাব এই উৎসবে লক্ষ্য করা যায়। ওড়িশার "কুমার পূর্ণিমা"র প্রভাব এই "আভড়াপুণেই" উৎসবে পরিলক্ষিত হয়। এই উৎসবে মা, ঠাকুমা, দিদিমারা অবিবাহিত ছেলেমেয়েদের মঙ্গল কামনা করেন। তাঁদের অবিবাহিত সন্তানরা যাতে ভবিষ্যৎ এ ভালো জীবনসঙ্গী বা জীবন সংগিনী পায় সেই কামনা করা হয়।
এদিন বাড়িতে পিঠে,পায়েস, লুচি, সুজি, ক্ষীর থেকে শুরু করে নানা নিরামিশ পদ তৈরি হয়। এদিন সারাদিন অবিবাহিত ছেলেমেয়েদের "ভুজা" বা মুড়ি খাওয়া বারণ। মুড়ি খেলে এই ব্রত "বুড়ি যাওয়া"র (ডুবে যাওয়া) বা ডিসকনটিনিও হওয়ার ভয় থাকে। এদিন স্নান করে নতুন পোশাক বা নিদেন পক্ষে নতুন রেশম (ঘুনশী) কোমরে পরতে হয়। স্নানের পরে মায়েরা অবিবাহিত সন্তানের মঙ্গল কামনায় কপালে চন্দনের মঙ্গল টীকা পরিয়ে দেন।
advertisement
অনেক অবিবাহিত ছেলেমেয়েরা ,যাদের বয়স একটু বেশি তারা অনেক ক্ষেত্রে নিজের ভবিষ্যৎ জীবনে কার্তিকের মত স্বামী বা লক্ষ্মী প্রতিমার মতো স্ত্রী পাওয়ার লক্ষ্যে সরাদিন উপবাস রেখে ব্রত করেন। আবার কারো কারো মতে চাঁদের মতো সুন্দর জীবন সঙ্গী বা জীবনসঙ্গীনি পাওয়া এই ব্রতর লক্ষ্য। পূর্ণিমার চাঁদ উদয় হওয়ার পর এই ব্রত শেষ হয় তুলসী গাছে জল ঢেলে। ছেলে মেয়েদের মঙ্গল কামনায় অনেক ক্ষেত্রে মা তুলসী গাছে জল ঢালেন।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুনঃ প্রতিটি জেলার সঙ্গে সাড়ম্বরে পূজা কার্নিভাল মেদিনীপুর-খড়গপুরে
ব্রত শেষে আজ কাল তুলসী গাছে জল ঢালার রীতি প্রায় হারিয়ে গেছে। এই উৎসবে ছেলে মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে সমান। এই নিয়ে আগের দিনে মা-ঠাকুমারা অবিবাহিত ছেলেমেয়েদের আশীর্বাদ করে বলতেন “পো মেনেকার নিশ বাঢ়ু" অর্থাৎ ছেলেদের গোঁফ বাড়ুক ,আর বলতেন "ঝি মেনেকার আইস বাঢ়ু" অর্থাৎ মেয়েদের আয়ু বাড়ুক। আজকের আধুনিক জীবনের ছোঁয়ায় "আভড়াপুণেই" এর জৌলুষ বা আচার অনেকটা ফিকে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ সমাজ ও সংস্কৃতির অবক্ষয়ের দিকটিকে স্বচ্ছতার মাধ্যমে তুলে ধরতে কাঁচের প্রতিমা গড়েছেন শিল্পী
এই রীতি মেনেই ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের আমরদা গ্রামে নাতনি (মেয়ের মেয়ে) সম্প্রীতির আভড়াপুণেই পালন করলেন তার দিদিমা মৃদুলা রানী ভূঞ্যা। গোপীবল্লভপুর-২ নং ব্লকের জুনশোলা গ্রামে রিদম পালের ও অলিভিয়া পালের আভড়াপুণেই পালন করলেন যথাক্রমে রিদমের মা রূপশ্রী পাল অলিভিয়া মা মৌয়া পাল। লোকসংস্কৃতি বিষয়ে অনুসন্ধিৎসু চুয়াডাঙ্গা হাইস্কুলের শিক্ষক সুদীপ কুমার খাঁড়ার মতে, এই লৌকিক উৎসব গুলোর সাথে দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতির শেকড়ে যোগ রয়েছে। তাঁর আক্ষেপ এগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।
advertisement
Partha Mukherjee
view commentsLocation :
First Published :
October 10, 2022 10:21 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/পশ্চিম মেদিনীপুর/
Paschim Medinipur News: পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলের বাড়িতে বাড়িতে পালিত 'আভড়াপুনেই'