Exclusive: দেশের প্রথম, এশিয়ার বৃহৎ সাইকেল কারখানা আজ ইতিহাস

Last Updated:

সেই স্বদেশী আন্দোলনের সময় ইউরোপের রালে সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে তিনি ভারতবাসীকে পরিচয় করিয়েছিলেন সাইকেলের সঙ্গে।

+
সেন

সেন রালের অন্যতম জনপ্রিয় মডেল রবিনহুড।

#আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান: কর্মঠ ভারতবাসীর অন্যতম প্রতীক সাইকেল। একটা সময় সাইকেলই ছিল সাধারণ ঘরে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে, ধীরে ধীরে গুরুত্ব কমেছে সাইকেলের। আবার এই একবিংশ শতাব্দী যত আধুনিক হচ্ছে, ততই আবার প্রাসঙ্গিকতা বাড়ছে সাইকেলের। সাইকেলে আসছে নিত্য নতুন ডিজাইন। বাজারে দেখা পাওয়া যাচ্ছে ব্যাটারি চালিত সাইকেলের। সাইকেল যেমন পরিবেশবান্ধব, তেমনি স্বাস্থ্যবান্ধব। কিন্তু আপনারা কি জানেন, ভারতবাসীকে কে প্রথম সাইকেলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে ছিলেন? কোথায় গড়ে উঠত ভারতের প্রথম সাইকেল? আজ বিশ্ব বাইসাইকেল দিবসে তাঁর সঙ্গে পরিচয় করাব আপনাদের।
সুধীর কুমার সেন। যিনি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তার প্রায়ই যাতায়াত ছিল ইউরোপ, জার্মানিতে। স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে স্বদেশী আন্দোলন চলার সময় সঙ্গ দিয়েছিল প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, বিধানচন্দ্র রায়ের। সেই স্বদেশী আন্দোলনের সময় ইউরোপের রালে সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে তিনি ভারতবাসীকে পরিচয় করিয়েছিলেন সাইকেলের সঙ্গে। এই সাইকেল হয়ে উঠেছিল কর্মব্যস্ত ভারতবাসীর যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম প্রথমদিকে ১৯১২ সালে হাজার খানেক সাইকেল তিনি রপ্তানি করেন ইউরোপ থেকে। ভারতবাসীকে পরিচয় করান সাইকেলের সঙ্গে। পরবর্তী ক্ষেত্রে সুধীর কুমার সেন রালে সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এনে এদেশের মাটিতেই শুরু করেন সাইকেল প্রস্তুতি। ধীরে ধীরে ভারতবাসীর কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সাইকেল। তখন প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের সহযোগিতায় ভারতবর্ষে গড়ে ওঠে সেন রালে বাইসাইকেল কারখানা। অবিভক্ত ভারতবর্ষে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সেন রালে সাইকেল। তারপর স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিধানচন্দ্র রায়ের সহযোগিতায় আসানসোলের কন্যাপুর গড়ে ওঠে সম্পূর্ণভাবে দেশের মাটিতে তৈরি সাইকেল কারখানা। সেন রালের আকার, বিক্রি আরও বৃদ্ধি পায়। সাইকেলের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পায়। বেড়ে যায় সাইকেল বিক্রি সংখ্যা। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভারত ছাড়াও, বাংলাদেশ এবং আশপাশের দেশগুলিতে এই সাইকেল রপ্তানি করত এই সংস্থা।
advertisement
advertisement
কিন্তু ইতিহাসের সাক্ষী থাকা এই সংস্থা আজ চলে গিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। পঞ্চত্বপ্রাপ্তি হয়েছে সুধীর কুমার সেন, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, বিধানচন্দ্র রায়ের স্মৃতি বিজড়িত এই সেন রালে সাইকেল ফ্যাক্টরি। শুরুর পর থেকেই সাইকেল ফ্যাক্টরির আকার-আকৃতি বাড়তে থাকে। বাড়তে থাকে চাহিদা, উৎপাদন। কিন্তু কালের নিয়মে আস্তে আস্তে শুরু হয় কারখানার অবক্ষয়। ১৯৭৫ সালে এই কারখানার দায়িত্বভার গ্রহণ করে ভারত সরকার। সংস্থার নাম পরিবর্তন করা হয়। নাম হয় সাইকেল কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া। কিন্তু রুগ্ন অবস্থা থেকে হাল ফেরানো যায় না এই সংস্থার। অবশেষে ২০০৩ সালে পুরোপুরিভাবেই সংস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই ভারতের প্রথম সাইকেল উৎপাদনকারী সংস্থার বাজার কাঁপানো সমস্ত মডেলগুলি হারিয়ে যেতে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাস হয়ে যেতে শুরু করে কারখানা থেকে শুরু করে কারখানার অধীনে থাকা বিপুল সম্পত্তি।
advertisement
সংস্থার প্রাক্তন কর্মচারী এবং ইতিহাস নিয়ে নাড়াচাড়া করলে জানা যায়, সেন রালে সংস্থায় একটা সময় চার হাজারের বেশি কর্মচারী নিযুক্ত ছিলেন স্থায়ী কর্মচারীর পাশাপাশি বহু শ্রমিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করতেন। আসানসোলের কন্যাপুরের বিশাল এলাকা জুড়ে ছিল কারখানা এবং তার বিপুল সম্পত্তি। কারখানার পাশাপাশি ছিল কর্তৃপক্ষের প্রায় ৭০০ কোয়ার্টার। তৈরি হয়েছিল সেন রালে ক্লাব, সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কারখানা বন্ধ হওয়ার পর, সময় যত এগিয়েছে, ততই সমস্ত কিছু ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আজ কারখানা চত্বরে শুধুই আগাছার জঙ্গল। কোথাও কোথাও রুগ্ন চেহারা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দু-একটি ইটের দেওয়াল। কিছু কিছু পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে এখনও প্রাক্তন কর্মীরা বসবাস করেন। কিন্তু চোখের সামনে ইতিহাসের সাক্ষী থাকা কারখানাকে, ইতিহাস হতে দেখার আক্ষেপ তারা এখনও ভুলতে পারেন নি। সংস্থার বাজার কাঁপানো হাম্বার, রবিনহুড মডেলগুলিকে স্মৃতি হিসেবে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন তারা।
advertisement
Nayan Ghosh
view comments
বাংলা খবর/ খবর/পশ্চিম বর্ধমান/
Exclusive: দেশের প্রথম, এশিয়ার বৃহৎ সাইকেল কারখানা আজ ইতিহাস
Next Article
advertisement
Maharashtra Doctor Death Update: কী চলত সরকারি হাসপাতালে, কেন নিজেকে শেষ করে দিলেন মহারাষ্ট্রের তরুণী চিকিৎসক? বিরাট কেলেঙ্কারি ফাঁস
কী চলত সরকারি হাসপাতালে,কেন নিজেকে শেষ করলেন মহারাষ্ট্রের তরুণী চিকিৎসক? কেলেঙ্কারি ফাঁস
  • মহারাষ্ট্রে তরুণী চিকিৎসকের আত্মহত্যার ঘটনায় এবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলল নির্যাতিতার পরিবার৷ মৃতার এক সম্পর্কিত ভাইয়ের অভিযোগ, ওই চিকিৎসককে ময়নাতদন্তের ভুয়ো রিপোর্ট তৈরি করতে বাধ্য করা হত৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement