দেবজ্ঞানে করা হয় পুজো, স্বাধীনতা দিবসে দেওয়া হয় সিঙারা ভোগ! রায় বাড়ির আরাধ্য কে জানেন?

Last Updated:

বহু মানুষ এসেছিলেন। আমার জেঠিমা চা আর সিঙারা তৈরি করে নেতাজিকে খাইয়িয়েছিলেন।

+
রায়

রায় পরিবারে নেতাজির আরাধনা।

পূর্বস্থলী, পূর্ব বর্ধমান, বনোয়ারীলাল চৌধুরী: পূর্ব বর্ধমানের এই জায়গায় বিশেষ দিনে ভোগ নিবেদন করা হয় নেতাজির জন্য। আজও দেব জ্ঞানে পুজো করা হয় নেতাজির ব্যবহৃত একটি চেয়ার। পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী দুই ব্লকের পূর্বস্থলী পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বৈদিক পাড়া এলাকা। এখানেই একটি বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে রায় পরিবার। ১৯৩২ সালে যে বাড়িতে এসেছিলেন স্বয়ং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।
নেতাজি বিশ্রাম নিয়েছিলেন এই বাড়িরই একটি চেয়ারে বসে। তারপর থেকে আজও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে কার্যত দেব জ্ঞানে সেই চেয়ারটিকে পুজো করে আসছেন রায় পরিবারের সদস্যরা। আর সেই পুজোতেই ভোগ নিবেদনও করা হয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৩২ সালে এই বাড়িতে আসার পর, অতিথি আপ্যায়নে নিজের হাতে সিঙারা বানিয়ে নেতাজিকে দিয়েছিলেন বাড়ির গৃহবধূ শিবভাবিনী দেবী।
advertisement
advertisement
এই প্রসঙ্গে বাড়ির বর্তমান সদস্য বিপ্লব রায় জানিয়েছেন, “১৯৩২ সালে নেতাজি এসেছিলেন এখানে । এই চেয়ারটায় বসেছিলেন। বাড়ির সামনে একটি জনসভা করেছিলেন। তারপর শ্যামসুন্দর তলায় গিয়েছিলেন। তখন রমেশচন্দ্র রায় স্বাধীনতা সংগ্রামী, তার ভাই আমার বাবা সুরেশচন্দ্র রায় স্বাধীনতা সংগ্রামী, ওঁনারা ছিলেন। এলাকার অনেক লোকজন, কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা ছিলেন। তাছাড়াও বহু মানুষ এসেছিলেন। আমার জেঠিমা চা আর সিঙারা তৈরি করে নেতাজিকে খাইয়িয়েছিলেন।
advertisement
আমার জেঠিমা ছিলেন শিবভাবিনী দেবী। স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রত্যক্ষ ভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সহযোগিতা করতেন।” রায় পরিবার সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই বাড়ির সঙ্গে নাকি প্রত্যক্ষ যোগ ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের। বাড়ির দুই সদস্য রমেশচন্দ্র রায় ও সুরেশ চন্দ্র রায় ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। পূর্বস্থলীর রায় বাড়িতে বিশ্রাম নিয়ে একটি জনসংযোগ কর্মসূচি করেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তারপর অংশ নেন পার্শ্ববর্তী শ্যামসুন্দর তলায় একটি জনসভায়।
advertisement
১৯৩২ সালের সেই স্মৃতি যেন আজও টাটকা পরিবারের প্রতিটি সদস্যের কাছে। তাঁদের কথায়, চোখে না দেখলেও ছোটো থেকে এই ঘটনার কথা শুনে আসছেন তাঁরা। তাই নিয়ম করে প্রতি বছর নেতাজির জন্মদিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস এবং স্বাধীনতা দিবসে নেতাজির ব্যবহৃত সেই চেয়ার বের করা হয়। ফুল, মালা, ধুপ সহযোগে পুজো করা হয় চেয়ারটিকে। ১৫ আগস্ট নেতাজিকে সিঙারা অর্পণ করার পর, এলাকাবাসীদের সিঙারা ও জিলিপি বিলি করা হয় রায় পরিবারের তরফে।
advertisement
আরও পড়ুন : এই সেতুতে উঠতে হবে প্রাণ হাতে নিয়ে, এদিক-ওদিক হলেই খেলা শেষ 
এই প্রসঙ্গে রায় পরিবারের সদস্য গৌতম রায় বলেন, উনি যে চেয়ারটায় বসেছিলেন সেটা আমরা বের করি। ওটা আমরা যত্ন করে রেখেছি। বিশেষ দিনে গ্রামবাসীদের সিঙারাও খাওয়ানো হয়। উনি সিঙারা খেয়েছিলেন এবং উনি নাকি তেলেভাজা খেতে ভালবাসতেন। এছাড়া বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গান, কবিতা, আবৃত্তির মাধ্যমে অনুষ্ঠান করা হয়। সকালবেলা পতাকা উত্তোলন করা হয়। এইভাবেই আমরা দিনটা পালন করি।
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
১৯৩২ থেকে ২০২৫ , মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে কয়েকটি দশক। তবু আজও নেতাজির প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা একই আছে পূর্বস্থলীর রায় পরিবারের। আজও তাঁর স্মৃতি বুকে আগলে রেখেছেন পরিবারের প্রতিটি সদস্য। স্বাধীনতা দিবস এলেই এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে যেন উৎসবে মেতে ওঠেন পূর্ব বর্ধমানের এই পরিবার। তবে আগে সিঙারা বাড়িতে বানানো হলেও, এখন স্থানীয় দোকান থেকেই অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নিয়ে আসা হয়।
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
দেবজ্ঞানে করা হয় পুজো, স্বাধীনতা দিবসে দেওয়া হয় সিঙারা ভোগ! রায় বাড়ির আরাধ্য কে জানেন?
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement