বাঁকুড়া : সোনামুখী শহর থেকে বিষ্ণুপুর দিকে যেতে সবুজ বনের মধ্যে প্রায় ১১ কিলোমিটার যেতেই রাস্তার উপর সাধারণ মানুষের নজর কাড়বে প্রাকৃতিক পরিবেশে জঙ্গলের মাঝে রয়েছে একটি ইকো জিম । আধুনিক সমাজে মানবজাতির বেশ কিছু রোগ এবং শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন খাদ্যভ্যাস এবং তাদের কাজের অভ্যাসের কারণে। যে কারণে এখন বিভিন্ন বড় বড় শহরে দেখা যায় লোকেরা গাঁটের কড়ি খরচ করে জিমে গিয়ে ভর্তি হয়ে কসরত করতে । কিন্তু জিমের সুবিধাগুলো এখনও সব জায়গায় পৌঁছয়নি । কিন্তু তাই বলে শরীরচর্চা বন্ধ হতে পারে না। বরং শরীরচর্চা হবে প্রাকৃতিক পরিবেশে।
না এই জিম কোন আধুনিক সাজ-সরঞ্জাম দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে তৈরি নয় । এটা পরিবেশ দূষিত হয় সেই সমস্ত প্রত্যেকটা দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত জিনিসপত্রকে কাজে লাগানো হয়েছে এখানে । যেমন প্লাস্টিক, টায়ার, পোল, বাঁশ এইসব জিনিসকে বেশিরভাগ কাজে লাগানো হয়েছে। কৃষি প্রধান বাঁকুড়া সোনামুখীর বলরামপুর গ্রাম।
আরও পড়ুন : দাড়ির জন্য করেননি বিয়ে, আট ফুট লম্বা দাড়িকে পকেটে ভরে রাখেন এই চিরকুমার
আর এই গ্রামের বেশ কিছু যুবক এমনই এক উদ্ভাবনী চিন্তার মধ্য দিয়ে জঙ্গলের মাঝে গড়ে তুলেছেন ইকো জিম। এই জিমে রয়েছে বারবেল থেকে শুরু করে চিলিংবার, ওয়েট লিফটিং, ডাম্বেল-সহ নানা শরীরচর্চার সরঞ্জাম । তবে এই জঙ্গলে বছরভর লেগে থাকে বুনো হাতিদের আগমন, তাই তাদের পারাপারের জন্য তৈরি হয়েছে করিডোর । ঠিক এরই মাঝখানে কয়েকটা গাছে সাদা দাগ দেওয়া, পরিষ্কার একটা ফাঁকা জায়গা যা রাস্তা পারাপারকারী সব ব্যাক্তির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বাধ্য। এরই মাঝে তৈরি ৫০০ বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে এই ইকো জিম। অনেক যুবক শরীরচর্চার পাশাপাশি সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছেন । তাঁদের জন্য তৈরি হয়েছে ৪০০ মিটারের একটি রানিং ট্র্যাক।
আরও পড়ুন : ফুটবলপায়ে কাঁটাবুনি থেকে মিশিগানের পথে, মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা আদিবাসীকন্যাকে
এই ইকো জিমে শুধু পুরুষরাই শরীর চর্চা করেন না । নিয়মিত শরীর চর্চা করতে গ্রাম থেকে আসেন অনেক মহিলাও । এখন এই জিমের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬০ । শুধু শরীরচর্চা নয়, তার পাশাপাশি বেশ কিছু যুব সমাজের কর্মসংস্থানের জন্য সাহায্য করবে এই ইকো জিম, এমনটাই তাদের দাবি । সেনাবাহিনী বা দেশের বিভিন্ন সামরিক বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে শারীরিক দক্ষতা খুব প্রয়োজন হয় । এই জিমে যে সমস্ত ছেলেমেয়েরা অভ্যাস করবেন তাঁরা আগামীদিনে সমস্ত প্রতিযোগিতায় সফল হবেন বলেও দাবি করছেন এই ইকো জিমের উদ্যোক্তারা।
আরও পড়ুন : পোষা সারমেয়র আক্রমণ নিয়ে বিবাদ, ইটের আঘাতে নিহত ১
এমনকি তাদের দাবি পুলিশের বিভিন্ন বাহিনীতে পরীক্ষায় বেশ কিছু যুবক উত্তীর্ণ হয়েছেন। দশ বছর আগে শুরু হওয়া বিনামূল্যে এই ইকো জিম যথেষ্ট উৎসাহ সঞ্চার করেছে সোনামুখী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার যুবসমাজের মধ্যে। আগামী দিনে এই ইকো জিম আরও কতটা মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলে, সেটাই এখন দেখার।
( প্রতিবেদন : জয়জীবন গোস্বামী)
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।