আগেকার দিনে ডিটারজেন্ট ছিল না ! কিন্তু পোশাক থাকত ঝলমলে! রইল রহস্যের সমাধান

Last Updated:

Technique for washing clothes in the past : এটা একটা বড় রহস্য কিন্তু! তাই না? আর আজ সেই রহস্যের বিষয়টা নিয়েই কথা বলা হবে।

#কলকাতা : কখনও কি কেউ ভেবে দেখেছেন যে, আগেকার দিনে তো সাবান কিংবা ডিটারজেন্টের তেমন চল ছিল না! তা-সত্ত্বেও রাজা-রানিদের পোশাক-আশাক কেমন করে ঝলমলে থাকত! এটা একটা বড় রহস্য কিন্তু! তাই না? আর আজ সেই রহস্যের বিষয়টা নিয়েই কথা বলা হবে।
উনিশ শতকের শেষের মুখে ভারতে কাপড় কাচা-ধোওয়ার সাবান এবং ড্রাই ক্লিনিংয়ের মতো প্রযুক্তির প্রচলন ছিল না। আবার এটাও ঠিক যে, সেই সময় সাধারণ ভারতীয়দের কাছে এখনকার মতো খুব বেশি সংখ্যক পোশাকও থাকত না। কয়েকটি মাত্র জামা-কাপড়েই দিন গুজরান করতে হত। সেগুলোই কেচে-ধুয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ব্যবহার করতেন তাঁরা। তবে রাজা-রাজড়াদের ব্যাপারটা খানিক আলাদা ছিল। তাঁদের কাছে থাকত দামি কাপড়ের পোশাক-আশাক। কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে, কীভাবে ধোওয়া হত সেই কাপড়চোপড়! আর রাজা-রাজড়াদের পোশাক-পরিচ্ছদ যে-ভাবে ধোওয়া হত, তা পরিষ্কার তো হতই, সঙ্গে ঝলমলে ভাবটাও বজায় থাকত! আসলে সেই সময় কাপড়চোপড় পরিষ্কার করতে অর্গানিক উপায়ই অবলম্বন করা হত। তাতে শরীরের ত্বকে কোনও খারাপ প্রভাবও পড়ত না।
advertisement
advertisement
সেই প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে এক বার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক প্রথম সাবান বাজারে আসার ইতিহাসে। সেই অনুযায়ী, ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ১৩০ বছরেরও বেশি সময় আগে ভারতে আধুনিক সাবানের প্রচলন ঘটেছিল। আর তা ঘটেছিল লিভার ব্রাদার্স ইংল্যান্ডের হাত ধরেই। প্রথমে ব্রিটেন থেকে সাবান আমদানি করে তা ভারতের বাজারে বিক্রি করা হত। এর পর ভারতীয়রা যখন সাবান ব্যবহার করতে শুরু করলেন, তখনই প্রথম এখানে সাবানের কারখানা স্থাপন করা হয়েছিল। আর এই কারখানায় গায়ে মাখার সাবান এবং কাপড় কাচার সাবান তৈরি করা হত। প্রসঙ্গত, ১৮৯৭ সালে নর্থ ওয়েস্ট সোপ কোম্পানি মেরঠে দেশের প্রথম সাবান প্রস্তুতকারী কারখানা তৈরি করে। এর পর ধীরে ধীরে এই ব্যবসার প্রসার ঘটে। আর তার পরেই জামশেদজি টাটা প্রথম ভারতীয় সংস্থা হিসেবে এই ব্যবসায় যোগ দেন।
advertisement
কিন্তু এর আগে সাবানের প্রচলন ছিল না, এমনকী সোডা এবং তেল ব্যবহার করে সাবান তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কেও অবগত ছিল না মানুষ। তাই দেখে নেওয়া যাক, সেই সময়কার কাপড় কাচার প্রক্রিয়া।
ব্যাপক হারে ব্যবহার করা হত রিঠা:
advertisement
ভারত সব সময়ই উদ্ভিদ এবং খনিজে সমৃদ্ধ একটি দেশ। আর এখানে রিঠা গাছও হয়ে থাকে। আর কাপড় পরিষ্কার থেকে চুল ধোওয়ার জন্য রিঠার মতো উপাদানের জুড়ি মেলা ভার! শোনা যায়, আগেকার দিনে রাজাদের প্রাসাদে লাগানো হত রিঠা গাছ, এমনকী রিঠার বাগানও তৈরি করা হত। আসলে দামি সিল্কের কাপড় সাফাই এবং জীবাণুমুক্ত করার জন্য রিঠা এখনও সেরা জৈব পণ্য। এখানেই শেষ নয়, মাথা ঘষার জন্যও রিঠা দারুন উপাদান। এখনও শ্যাম্পুর উপাদান হিসেবে রিঠা ব্যবহার করা হয়। এমনকী শ্যাম্পু হিসেবেও ভীষণই জনপ্রিয় রিঠা। শোনা যায়, প্রাচীন কালে রানিরাও নিজেদের বড় চুল পরিষ্কার করতেন এই রিঠা দিয়েই। তাই একে ‘সোপ বেরি’ বা ‘ওয়াশ নাট’-ও বলা হত।
advertisement
জল ফুটিয়ে কাপড় সেদ্ধ করা হত:
যখন সাবান ছিল না, তখন মানুষ সাধারণত দুই ভাবে কাপড় পরিষ্কার করত। সেই সময় আম-নাগরিকরা জল গরম করে ফুটিয়ে তাতে ময়লা কাপড় ফেলে সেদ্ধ করে নিতেন। এর পর তা গরম জল থেকে বার করে কিছুক্ষণ ঠান্ডা করার পর কাপড়টিকে কোনও পাথরের উপর কেচে নিতেন, ফলে সমস্ত ময়লাই বেরিয়ে গিয়ে কাপড়টি পরিষ্কার হয়ে যেত। আর তার জন্য প্রয়োজন হত বড় পাত্র ও চুল্লির। শুধু তখনই নয়, আজও কাপড় ধোওয়ার জন্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। ভারতে যেখানে বড় বড় কাপড় ধোপা ঘাট রয়েছে, সেখানে এখনও এই দেশীয় উপায়ে কাপড় কাচা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতির ক্ষেত্রে কোনও সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হয় না।
advertisement
দামি কাপড়ের পোশাক ধোওয়ার জন্য রিঠার ব্যবহার:
দামি এবং মখমলের নরম কাপড়ের পোশাক পরিষ্কার করার জন্য এক এবং অব্যর্থ দাওয়াই ছিল রিঠাই। জল ফুটিয়ে যোগ করা হত। ফেনা হতে থাকলে তাতে কাপড় ভিজিয়ে তা পাথর বা কাঠের উপর রেখে ব্রাশ অথবা হাত দিয়ে ঘষলে কাপড় তো পরিষ্কার হতই। সেই সঙ্গে তা জীবাণুমুক্তও হয়ে যেত।
advertisement
একটি বিশেষ সাদা পাউডারও ব্যবহৃত হত:
কাপড়-জামা পরিষ্কার করার আর একটি জনপ্রিয় উপায় ছিল। গ্রামাঞ্চলে খালি জমি, নদী-পুকুরের ধারে কিংবা মাঠের পাশে সাদা রঙের গুঁড়ো দেখা যায়, একে 'রেহ'ও বলা হয়। এটি ভারতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। জলে এই পাউডার মিশিয়ে কাপড় ভিজিয়ে রাখা হয়। এর পর কাঠের বেলন আকৃতির সরঞ্জাম ব্যবহার করে ঘষে-ঘষে কাপড় পরিষ্কার করা হয়। ‘রেহ’ একটি মূল্যবান খনিজ। এতে সোডিয়াম সালফেট, ম্যাগনেশিয়াম সালফেট এবং ক্যালসিয়াম সালফেট রয়েছে। এ-ছাড়াও এতে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইটও থাকে, যা কাপড়কে জীবাণুমুক্ত করতে সাহায্য করে।
নদীর এবং সামুদ্রিক সোডা দিয়েও কাপড় কাচা হত:
নদী এবং সমুদ্রের জলে যখন সোডা পাওয়া যাওয়ার কথা সামনে এসেছিল, তখন তা কাপড় ধোওয়ার জন্য ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত করা হত।
বাংলা খবর/ খবর/পাঁচমিশালি/
আগেকার দিনে ডিটারজেন্ট ছিল না ! কিন্তু পোশাক থাকত ঝলমলে! রইল রহস্যের সমাধান
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement