ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হল দেশ! ৬০ ক্যাডারকে নিয়ে অস্ত্র সমর্পণ মাওবাদী শীর্ষ নেতা 'সোনু'র!
- Published by:Tias Banerjee
Last Updated:
ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কাছে এটি একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। দেশজুড়ে ২০২৬ সালের মধ্যেই নকশালবাদ নির্মূলের লক্ষ্যে পরিচালিত ধারাবাহিক অভিযানের ফল হিসেবেই এই পদক্ষেপ ধরা হচ্ছে।
মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলি জেলায় মঙ্গলবার এক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী রইল ভারত। সিপিআই (মাওবাদী)-এর পলিটব্যুরো সদস্য ও শীর্ষ নেতা মল্লোজুলা ভেনুগোপাল রাও ওরফে ‘সোনু’ অস্ত্র সমর্পণ করেছেন ৬০ জন মাওবাদী ক্যাডারকে সঙ্গে নিয়ে। এই আত্মসমর্পণ মাওবাদী সংগঠনের জন্য এক বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে খবর পাওয়া গিয়েছিল যে, তেলঙ্গানার বাসিন্দা সোনু মাওবাদী সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছেন। এক খোলা চিঠিতে তিনি তাঁর সহকর্মীদের আহ্বান জানান—“নিজেদের বাঁচাও, অকারণ আত্মত্যাগ করো না।” এই চিঠি থেকেই মাওবাদী সংগঠনের মধ্যে মতভেদ এবং অস্ত্র ত্যাগ করে মূলধারায় ফেরার প্রবণতা প্রকাশ পায়।
advertisement
advertisement
চিঠিতে সোনু লেখেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি আর সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারছেন না। তিনি স্বীকার করেন যে, মাওবাদীদের অনুসৃত পথ সম্পূর্ণ ভুল ছিল এবং তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন যে, সংগঠনের পতন রোধ করতে পারেননি। তাঁর মতে, নেতৃত্বের বারবার ভুল সিদ্ধান্ত মাওবাদী আন্দোলনের ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে এনেছে।
advertisement
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনুকে উত্তর ও পশ্চিম উপ-আঞ্চলিক ব্যুরোর মাওবাদীরা সমর্থন জানিয়েছে এবং তারাও মূলধারায় ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

পুলিশ জানায়, ১৫ আগস্ট সোনু মৌখিক ও লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন যে, তাঁরা যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত। পরে সেপ্টেম্বর মাসে আরও একটি বিবৃতি দেন, যেখানে উল্লেখ করেন যে, অস্ত্র সমর্পণের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় কমিটি ও পলিটব্যুরো পর্যায়ে আলোচনা করেই নেওয়া হয়েছে— এমনকি ছত্তিসগড়ে ২১ মে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নেতা বসবরাজুর মৃত্যুর আগেই এই সিদ্ধান্ত হয়।
advertisement
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ ও রাজ্য সরকারের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে চলা অভিযানের ফলেই নকশালবাদের বিরুদ্ধে এই ঐতিহাসিক মোড় এসেছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা।
দীর্ঘ বছর ধরে বামপন্থী চরমপন্থা বা নকশালবাদ ছিল ভারতের অন্যতম বড় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সমস্যা। ২০১০ সালে এর ভয়াবহতা চরমে পৌঁছয়— দেশের ২০০-রও বেশি জেলায় নকশাল তৎপরতা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার একাধিক কড়া পদক্ষেপ নেয়— নিরাপত্তা অভিযান জোরদার করার পাশাপাশি নকশালপ্রভাবিত এলাকায় উন্নয়নমূলক কর্মসূচিও চালু করা হয়।
advertisement
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, দেশ এখন দ্রুত নকশালবাদ সম্পূর্ণ নির্মূলের পথে এগোচ্ছে। সহিংসতার মাত্রা ও ভৌগোলিক বিস্তৃতি— দু’টিই নাটকীয়ভাবে কমেছে। ২০২৫ সালের আগস্টে সংসদে দেওয়া এক তথ্য অনুসারে, “২০১৫ সালের জাতীয় নীতি ও কর্মপরিকল্পনা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হওয়ায় সহিংসতা ও প্রভাবিত এলাকার সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পেয়েছে। ২০১০ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে এলডব্লিউই-সংক্রান্ত সহিংস ঘটনার সংখ্যা ৮১ শতাংশ এবং সাধারণ মানুষ ও নিরাপত্তা বাহিনীর মৃত্যুর সংখ্যা ৮৫ শতাংশ কমেছে।”
advertisement
এই আত্মসমর্পণ তাই শুধু একটি ঘটনার সীমায় নয়, বরং ভারতের দীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাসে নকশালবাদের অধ্যায়ের অবসানের ইঙ্গিত হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Maharashtra
First Published :
October 14, 2025 4:52 PM IST