Bihar Elections 2025: লন্ডনে পড়াশোনা, ক্যানভাসে আঁকেন ছবি! বিহার নির্বাচনে তোলপাড় তুলেছেন... কে এই ‘নতুন চাণক্য’?

<span dir="auto">Bihar Elections 2025: </span>লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকস থেকে পাশ, ছবিও আঁকেন ক্যানভাসে... কিন্তু বিহার নির্বাচনের সময়ে কেন আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন এই ‘চাণক্য’? জানলে হতবাক হবেন।

বিহার নির্বাচন ২০২৫: রাজনীতির কথা উঠলে, চাণক্যের নাম অবধারিতভাবে চলে আসে— সেই চাণক্য, যিনি তাঁর রাজনৈতিক নীতিতে বদলে দিয়েছিলেন গোটা এক সাম্রাজ্য। আর এবার বিহারে ফের খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে ‘চাণক্য’-র নাম। তবে এ চাণক্য কোনও প্রাচীন কৌশলবিদ নন, এক নতুন মুখ— যিনি বেলহার বিধানসভা আসনে সাড়া ফেলে দিয়েছেন।

এই নতুন চাণক্য হলেন চাণক্য প্রকাশ রঞ্জন, জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর বাঁকা লোকসভা সাংসদ গিরধারী যাদবের পুত্র। সম্প্রতি তিনি রাজদ (রাষ্ট্রীয় জনতা দল)-এ যোগ দিয়েছেন। তাঁর এই দলবদলের পর থেকেই বিহারের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়। জল্পনা জোরদার— তিনি বেলহার বিধানসভা আসন থেকে রাজদ প্রার্থী হিসেবে লড়তে পারেন। রাজনৈতিক মহলে ধারণা, তাঁর প্রার্থীপদ প্রায় নিশ্চিত।

চাণক্য প্রকাশ রঞ্জন লন্ডনে পড়াশোনা করেছেন। লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিকস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স থেকে মাস্টার অফ পাবলিক পলিসি ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি ভারতে ফিরে আসেন এবং এখন রাজদ-এ যুক্ত হয়েছেন। এর আগে তিনি দিল্লিতে পড়াশোনা শেষ করেন এবং ২০২৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পূর্ণ করেন।

চাণক্য ২০১৬ সালে ইন্ডিয়ান সোসাইটি অফ ইন্টারন্যাশনাল ল’ থেকে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস ল’-এ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা অর্জন করেন। ২০১৫ সালে তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রামজাস কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক হন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি থিয়েটারেও যুক্ত ছিলেন। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে দিল্লি পাবলিক স্কুল থেকে।

চাণক্য সমাজসেবার ক্ষেত্রেও সক্রিয়। তিনি নিলগিরি এডুকেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েটস বোর্ড-এর সঙ্গে যুক্ত। এই সংগঠনের মাধ্যমে তিনি দীর্ঘদিন ধরে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মেয়েদের শিক্ষার জন্য কাজ করছেন। তাছাড়া, আদিবাসী শ্রমিকদের উন্নতির লক্ষ্যে তিনি TribeIbe নামের একটি সামাজিক উদ্যোগ প্রতিষ্ঠা করেন, যা কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা স্বীকৃত হয়েছে।

শুধু সমাজসেবক নন, চাণক্য একজন চিত্রশিল্পীও। উনবিংশ শতকের বিখ্যাত শিল্পীদের কাজ অধ্যয়ন করে তিনি নিজে চিত্রাঙ্কন শিখেছেন। তাঁর ছবিতে সমাজের বিভাজন, বৈষম্য এবং মানবতার বার্তা প্রতিফলিত হয়। তাঁর আঁকা ছবি ভারতের বিভিন্ন নামী গ্যালারিতে যেমন প্রদর্শিত হয়েছে, তেমনই লন্ডনের কয়েকটি জাদুঘরেও স্থান পেয়েছে। তিনি নিজের শিল্পকর্ম থেকে প্রাপ্ত অর্থ দান করেন দাতব্য সংস্থায়।

সমাজসেবা ও শিল্পের ক্ষেত্রে ধারাবাহিক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ চাণক্য পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার। ২০২০ সালে তিনি পান ন্যাশনাল ইয়াং ডেভেলপমেন্ট এনথুজিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড। এছাড়া ২০১৬ সালে ছত্তিসগড় সরকার তাঁকে সম্মানিত করে।

রাজনীতিতে চাণক্য হয়তো নতুন, কিন্তু তাঁর কর্মজীবন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত— তিনি কাজ করেছেন কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এবং আরও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।

এক কথায়, লন্ডনের ক্যানভাস থেকে বিহারের রাজনীতির ময়দান— নতুন চাণক্য প্রকাশ রঞ্জন যেন নিজের জীবনে গেঁথে তুলছেন এক আধুনিক রাজনীতির চিত্র।