অকারণেই কমছে ওজন? ডায়াবিটিসের লক্ষণ, এখনই সতর্ক হোন!

Last Updated:

টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ফলে শরীরে কী কী প্রভাব পড়ে? জেনে নিন

আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী ব্যবস্থা (Immune system) যখন অগ্ন্যাশয়ের (Pancreas) ইনসুলিন হরমোন প্রস্তুতকারক কোষগুলিকে ধ্বংস করে দেয়, তখন তাকে টাইপ-১ ডায়াবেটিস (Type 1 Diabetes) বলা হয়। খাবারের মাধ্যমে আমাদের শরীরে গ্লুকোজ সরবরাহ হয় এবং ইনসুলিন নামের হরমোন এই গ্লুকোজকে দেহের কোষে-কোষে পৌঁছে দেয়। এই কোষগুলি গ্লুকোজ থেকে শরীর পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপন্ন করে। ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তদের শরীরে এই হরমোন উৎপাদন কমে যায়। টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ইনসুলিন নিঃসরণ প্রায় একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়, ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অত্যধিক রকম বেড়ে যায়। সাধারণত শিশু, তরুণ, যুবক বা ৪০ বছরের কম বয়স্করা টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন। এই কারণে একে ‘জুভেনাইল ডায়াবেটিসও’ (Juvenile Diabetes) বলা হয়ে থাকে। মোট আক্রান্ত রোগীর মাত্র ৫ শতাংশের শরীরে টাইপ-১ ডায়াবেটিস দেখা যায়।
টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে উপসর্গগুলি কী কী?
  • অতিরিক্ত তেষ্টা পাওয়া
  • হঠাৎ করে খিদে বেড়ে যাওয়া (বিশেষ করে খাবার খাওয়ার পর)
  • মুখের ভেতরে শুষ্কতা
  • পেট খারাপ এবং বমি
  • ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ অনুভব করা
  • নিয়মিত খাওয়ার পরেও আচমকা ওজন কমতে শুরু হওয়া
  • অবসাদ বা ক্লান্তির ভাব আসা
  • দৃষ্টিশক্তি অস্পষ্ট হয়ে যাওয়া
  • দ্রুত শ্বাস ফুলে যাওয়া
  • ত্বক, মূত্রনালী বা যোনিপথে ঘন ঘন সংক্রমণ
  • মেজাজে পরিবর্তন আসা
advertisement
advertisement
টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক উপসর্গগুলি কী কী?
  • শরীরে কাঁপুনি শুরু হওয়া
  • মতিভ্রম বা বিভ্রান্তি আসা
  • শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বৃদ্ধি পাওয়া
  • নিঃশ্বাসে ফল জাতীয় গন্ধ আসা
  • অতিরিক্ত পেট ব্যথা
  • অজ্ঞান হয়ে যাওয়া (এই পরস্থিতি খুব কম দেখা যায়)
টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ফলে শরীরে কী কী প্রভাব পড়ে?
advertisement
ডিহাইড্রেশন:
ডায়বেটিস টাইপ-১ রোগীর শরীরে ইনসুলিনের ঘাটতি থাকায় গ্লুকোজ কোষগুলিতে পৌঁছতে পারে না, ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। এই অতিরিক্ত গ্লুকোজকে আমাদের শরীর প্রস্রাবের মাধ্যমে বর্জন করে এবং এই কারণেই রোগীর ঘন ঘন প্রস্রাব পায়। অতিরিক্ত প্রস্রাব হওয়ায় গ্লুকোজের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জল শরীরের বাইরে বেরিয়ে যায়। যার ফলে দেহে জলের উপস্থিতি কমে যায়।
advertisement
প্রস্রাবের সঙ্গে জল এবং গ্লুকোজের পাশাপাশি ক্যালোরিও বাইরে যায়। এক দিকে শরীরে জলের ঘাটতি এবং অন্য দিকে ক্যালোরি কমে যাওয়া-- এই দুইয়ের কারণে ব্লাড সুগারে আক্রান্ত রোগীদের ওজন কমে যায়।
advertisement
ডায়াবেটিক কেটোঅ্যাসিডোসিস:
শক্তি উৎপন্ন করার জ্বালানি হিসেবে পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্লুকোজ না-থাকায় আমাদের শরীর ফ্যাট কোষগুলিকে ব্যবহার করে। এই কোষগুলি কিটোন নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ তৈরি করে, যা রক্তে মিশে যায়। দেহে ইনসুলিন না-থাকায় খাবার থেকে পাওয়া গ্লুকোজকে শক্তি উৎপন্ন করার জন্য ব্যবহার করা যায় না, ফলে অতিরিক্ত পরিমাণ গ্লুকোজ রক্তেই থেকে যায়। টাইপ ১ ডায়াবেটিসে শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হরমোন থাকা সত্ত্বেও লিভার শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করার জন্য গ্লুকোজ তৈরি করে। উপযুক্ত হরমোনের অভাবে এটিও রক্তেই থেকে যায়। ফলস্বরূপ দেখা যায় যে, রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজের উপস্থিতি, বারবার প্রস্রাবের কারণে শরীরে জলের অভাব এবং অ্যাসিডিক কিটোন মিলে ‘কিটোঅ্যাসিডোসিস’ (Ketoacidosis) নামে একটি ভয়ঙ্কর শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করে। সময়মতো চিকিৎসা না-করলে ডায়াবেটিস ঘটিত এই রোগ মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
advertisement
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্থায়ী ক্ষতি:
রক্তে থাকা অতিরিক্ত গ্লুকোজ মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গের স্থায়ী ক্ষতি করে। উচ্চ গ্লুকোজের মাত্রা চোখ, কিডনি এবং হৃদয়ের স্নায়ু এবং ছোট রক্তনালীগুলির ক্ষতি করতে পারে। ডায়াবেটিস টাইপ-১ আক্রান্তদের ধমনী দৃঢ় (Hardened Arteries) বা অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস (Atherosclerosis) হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে, যার কারণে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে।
advertisement
ডায়াবেটিস ঘটিত চোখের এই সমস্যা প্রায় ৮০% প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়, যাঁরা ১৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। সঠিক সময়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ না-নিলে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির কারণে অন্ধ যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগ কী ভাবে প্রতিরোধ করা যাবে?
ডায়াবেটিসে যাঁরা আক্রান্ত, তাঁদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক মানুষের টাইপ-১ ডায়াবেটিস দেখা যায়। বৈজ্ঞানিক ভাবে এই রোগ প্রতিরোধ করার সঠিক কোনও উপায় নেই এবং ঠিক কী কারণে এই রোগ হয় তারও কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যাঁদের পরিবারে টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ইতিহাস আছে, তাঁদের পরবর্তী প্রজন্মের এই রোগ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
সমস্ত টাইপ-১ রোগীদের ব্লাড সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয়। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সঠিক ডায়েট, ইনসুলিন এবং নিয়মিত শারীরিক কসরত করলে দীর্ঘ দিন সুস্থ জীবনযাপন করা যায়।
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
অকারণেই কমছে ওজন? ডায়াবিটিসের লক্ষণ, এখনই সতর্ক হোন!
Next Article
advertisement
West Bengal Weather Update: ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে ! দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে
ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে ! দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে
  • ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে !

  • দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে

  • কলকাতা-সহ বাকি অংশে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে রবিবার পর্যন্ত

VIEW MORE
advertisement
advertisement