#কলকাতা: রামপুরহাট হত্যাকাণ্ড (Rampurhat Violence), আনিস খানের মৃ্ত্যুর ঘটনা সহ রাজ্যের ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক বেশ কিছু ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখলেন বিশিষ্টজনেদের একাংশ (ntellectuals write letter to Mamata Banerjee)৷ চিঠিতে যাঁরা সই করেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, অশোক মুখোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, সুমন মুখোপাধ্যায়, শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুপম রায়, রেশমী সেন, রপম ইসলাম, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, ঋদ্ধি সেন, সোহিনী সরকার, গৌরব চক্রবর্তী সহ মোট তেইশ জন৷
চিঠির শুরুতেই রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে এই ঘটনাকে পৈশাচিক বলে উল্লেখ করেছেন বিশিষ্টজনেরা৷ ঘটনার পর রাজ্য সরকারের তৎপরতাকে স্বাগত জানিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে েলখা হয়েছে, 'সম্প্রতি মার্চ মাসে বীরভূমের রামপুরহাটে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডটিকে যে কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় পৈশাচিক আখ্যা দেবেন৷ আমরাও তার ব্যতিক্রম নই৷ ঘটনা পরবর্তীতে আপনার তত্ত্বাবধানে প্রশাসন, অনুসন্ধান এবং ক্ষতিপূরণ দানে তৎপর হয়েছে এবং এই পদক্ষেপকে নিঃসন্দেহে স্বাগত৷ কিন্তু তাও প্রশ্ন থেকে যায়, এরকম একটি ঘটনার আগে পুলিশ প্রশাসন তৎপর হল না কেন?'
আরও পড়ুন: ১০ পরিবারকে চাকরি, রামপুরহাট কাণ্ডে মৃতদের পরিবারপিছু চাকরির প্রস্তাব এল নবান্নে
রামপুরহাটের ঘটনা ছাড়াও আনিস খান, তুহিনা খাতুন, ঝালদা এবং পানিহাটির দুই কাউন্সিলর খুনের ঘটনারও প্রতিবাদ করা হয়েছে চিঠিতে৷ পাশাপাশি রাজ্যের পুরনির্বাচনে যে হিংসা ও অশান্তির ছবি সামনে এসেছে, তারও সমালোচনা করেছেন চিঠির প্রেরকরা৷
একই সঙ্গে, পুরভোটে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোট হওয়াকে উদ্বেগজনক ও নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনরা৷ এই ঘটনাগুলির তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়েও সাধারণ মানুষের মধ্যে স্পষ্ট ধারনা নেই বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে৷
আরও পড়ুন: DVC-র জলাধার সংস্কার প্রসঙ্গে কেন্দ্রের 'জবাবি চিঠি'! মিলে গেল মমতার অভিযোগ
যাঁরা চিঠিতে সাক্ষর করেছেন, তাঁরা অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোনও রাজনৈতিক স্বার্থে এই চিঠি তাঁরা লিখছেন না৷ বরং দেশের মধ্যে প্রধান বিরোধী মুখ হয়ে ওঠার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে৷ বিজেপি-র নাম না করেও ২০২১-এর নির্বাচনে রাজ্যে 'বিভাজন সৃষ্টিকারী' শক্তিকে রুখে দেওয়ার কৃতিত্বও মু্খ্যমন্ত্রীকেই দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা৷ একই সঙ্গে রাজ্যের ভুল ত্রুটি অবিলম্বে শোধরানোপ্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেছেন তাঁরা৷ একই ভাবে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে হিংসার অভিযোগ উঠেছিল, ২০২৩ সালের নির্বাচনে যাতে তার পুনরাবৃত্তি না হয়, মুখ্যমন্ত্রীকে সেই অনুরোধও করেছেন বিশিষ্টজনরা৷
চিঠির শেষ পর্যায়ে লেখা হয়েছে, 'গণতন্ত্র ও সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশপ্রেমী নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের আশা কিংবা আপনার কাছে দািব বলেত পারেন, বাংলার রাজনীতির এই দীর্ঘ ও কদর্য ঐতিহ্য বন্ধ হোক, আপনি আপনার প্রশাসনের মধ্যে দিয়ে তা সুনিশ্চিত করুন৷ রাজ্যের ও রাজ্যের মানুষের শুভার্থে এই চিঠিটি, আশা করি সেই মর্মে গৃহীত হবে৷' প্রসঙ্গত আনিস খানের হত্যাকাণ্ড বা রামপুরহাটের মতো ঘটনার পর বিদ্বজনদের একটা বড় অংশ কেন চুপ, তা নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছিল৷ সেই বিতর্কের মধ্যেই বিশিষ্টজনেদের একাংশের এই চিঠিকে মুখ্যমন্ত্রী এবং শাসক দল কীভাবে গ্রহণ করেন, সেটাও দেখার৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Mamata Banerjee