কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত মোট সাড়ে তিনশো কোটি টাকার লেনদেনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে৷ এই পরিমাণ আরও বাড়বে বলেই আদালতে দাবি করেন ইডি-র আইনজীবী। এ দিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে ধৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে পেশ করে এমনই দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট৷ শান্তনুকে ফের হেফাজতে চেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক চাঞ্চল্যকর অভিযোগও এনেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷ আদালতে ইডি-র আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি শান্তনু মোবাইল দু'টি মোবাইল ফোনকে সোনার খনি বলেও উল্লেখ করেন৷ এর ব্যাখ্যাও দেন ইডি-র আইনজীবী৷
কয়েকদিন আগেই নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে হুগলির জেলা পরিষদ সদস্য এবং তৃণমূলের যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি৷ এ দিন আদালতে ইডি-র আইনজীবী দাবি করেন, শান্তনুর আই ফোন থেকে এসএসসি-র চাকরিপ্রার্থী প্রায় তিনশো জনের অ্যাডমিট কার্ডের ছবি পাওয়া গিয়েছে৷ অনেকের ছবিও মিলেছে শান্তনুর মোবাইলে৷ তাঁদের অনেকেই শেষ পর্যন্ত প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পেয়েছিলেন বলে আদালতে দাবি করে ইডি৷ আদালতে ইডি-র এ দিন আরও চাঞ্চল্যকর দাবি, শান্তনুর বাড়িতে তল্লাশি করে এবং জেরা করে যে তথ্য মিলেছে, তাতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও যোগসূত্র মিলেছে।
আরও পড়ুন: শূন্য হয়ে গেল ৫৭, গ্রুপ সি নিয়োগে অকল্পনীয় দুর্নীতি! এসএসসি-র তালিকাতেই পর্দা ফাঁস
কুন্তলের বিপুল সম্পত্তি বৃদ্ধি এবং তিনি কতটা প্রভাবশালী, তাও এ দিন বিচারকের সামনে তুলে ধরেন এসএসসি-র আইনজীবী৷ তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৫ সালে ছোট একটি মোবাইলের দোকান ছিল শান্তনুর৷ সেখান থেকে আজ তিনি রেস্তোরাঁ, রিসর্ট, একাধিক বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি, সংস্থার মালিক৷ কোন জাদুতে মাত্র কয়েক বছরে শান্তনুর এই কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি হল, সেই প্রশ্নও তোলেন ইডি-র আইনজীবী৷ শান্তনুর সম্পত্তির তুলনা করতে গিয়ে ইডি-র আইনজীবী কটাক্ষের সুরে বলেন, 'পুরুলিয়ার টিলা পাহাড় থেকে তা হিমালয়ে পরিণত হয়েছে৷'
ইডি-র পক্ষ থেকে এ দিন আরও দাবি করেন, তিন মাস আগে তদন্তকারীদের মনে হয়েছিল, নিয়োগ দুর্নীতির পরিমাণ ১১১ কোটি টাকার আশেপাশে। কিন্তু গত তিন মাসে নিয়োগ দুর্নীতিতে মোট সাড়ে তিনশো কোটির লেনদেনের খোঁজ মিলেছে। ফিরোজ এডুলজি বিচারকের সামনে আরও দাবি করেন, এই মামলার কেস ডায়েরিতে যা যা তথ্য রয়েছে এবং যাঁদের নাম রয়েছে, তা দেখলে বিচারকও চমকে উঠবেন৷
ইডি-র আইজীবী আরও প্রশ্ন তোলেন, এনআইএ আদালতের বিচারকরা দু' জন করে করে পিএসও বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য অফিসার পান সরকারের থেকে৷ হুগলি জেলার একজন নেতা শান্তনুরও দু' জন পিএসও ছিল বলে আদালতে জানান ইডি-র আইনজীবী৷ কেন শান্তনুক দু জন পিএসও দেওয়ার প্রয়োজন পড়ল, সেই প্রশ্নও তোলেন ফিরোজ এডুলজি৷
ইডি-র আইনজীবী দাবি করেন, এর থেকেই বোঝা যায় শান্তনু কতটা প্রভাবশালী৷ শান্তনুর আয়ের উৎস জানতে এবং দুর্নীতি কাণ্ডে আরও তথ্য হাতে পেতে তৃণমূল নেতাকে ১১ দিনের জন্য হেফাজতে চায় ইডি৷
এ দিন অবশ্য আদালতে প্রবেশের সময় শান্তনু অবশ্য দাবি করেন, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড কুন্তল ঘোষ৷ এজেন্টদের দিয়ে কুন্তল অন্য রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা সরিয়ে দিচ্ছেন বলেও দাবি করেছেন শান্তনু৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: ED, Santanu Banerjee, Tet Scam