সাহ্ণিক ঘোষ, কলকাতা: "২০১৯ এর বিপর্যয়ের পরে ওরা বলেছিল সারিয়ে দেবে, সেই সারানোয় কোনো কাজই হয়নি। এখন যা অবস্থা হয়েছে বাড়ি যে কোনো সময়েই ভেঙে পড়তে পারে", মেট্রোর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন ১৯ নম্বর দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দা ছবি সাহু।
প্রায় ১৪-১৫ টি পরিবারের বসবাস এই ঠিকানায়। প্রায় ৭০ ঘণ্টা আগে বাড়ি ছেড়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। তখন যে ফাটলগুলি একেবারে সামান্য ছিল, প্রত্যেকটির অবস্থা বর্তমানে ভয়াবহ।
সিলিং, মেঝে, দেয়ালগুলো প্রায় দুভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টির জল ঢুকে সব ঘর জলময়। হাইড্রোলিক সাপোর্ট সিস্টেম ব্যবহার করে সাময়িকভাবে সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে কড়ি বর্গার সিলিংকে।
আরও পড়ুন- রবীন্দ্র সরোবরে পেট্রোলচালিত স্পিড বোট! 'কাণ্ড' দেখে অবাক পরিবেশপ্রেমীরা
নিজের ঘরে সহায় সম্বলটুকু নিতে দিনে একবার আসেন বাসিন্দারা। ঘরের অবস্থা দেখে চোখের জল বাঁধ মানছে না। শনিবার দুপুরে KMRCL-এর তরফে আধিকারিকরা গোটা জায়গা ঘুরে দেখলেন। বাড়িগুলোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করলেন।
যাঁরা বাড়িতে জিনিস নিতে এসেছেন, তাঁদের জানানো হল, "আপনারা হোটেলে থাকুন কদিন। আমরা বাড়ি সারিয়ে দেবো, ফিরে আসবেন তখন।" কিন্তু বাসিন্দারা নারাজ। ২০১৯ -এর পর এই রকম অবস্থা দেখে আতঙ্কিত সবাই।
বাসিন্দারা বলছেন, বাড়ির যা পরিস্থিতি, আগেরবারের মতো সারালে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যাবে। পরিবার নিয়ে এই বাড়িতে থাকার ঝুঁকি নিতে চান না কেউই।
শনিবার দুপুরে স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দেকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িগুলি দেখতে আসেন KMRCL-এর জেনারেল ম্যানেজার এ কে নন্দী। যে বাসিন্দারা হোটেলে বসবাস করছেন, তাঁরাও এই সময় আসেন বাড়িতে।
মূলত হোটেলের পরিষেবাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন এ কে নন্দী। স্থানীয়রা পরিষেবা নিয়ে তাঁর কাছে ক্ষোভ উগড়ে দিলে তিনি জানান, "আমরা হোটেলগুলোতে টাকা দিচ্ছি। আপনাদের অভিযোগ থাকলে অবশ্যই জানাবেন, আমরা ব্যবস্থা নেবো।"
এছাড়াও এলাকাবাসীদের সমস্যা শোনার জন্য সোমবার থেকে দুর্গা পিতুরী লেনের সামনে অস্থায়ী কাউন্টারে তাঁদের তরফে লোক থাকবে বলে জানান এ কে নন্দী। তবে কিএমআরসিএ- এর তরফে কথা বলা হলেও তাঁদের ভূমিকায় এখনও খুশি নন এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন- ছেড়ে আসা বাড়িতে পড়ে লক্ষ লক্ষ টাকার সোনা!ঘুম উড়েছে দুর্গা পিতুরি লেনের কারিগরদের
বাসিন্দাদের দাবি, বাড়ি সঠিকভাবে না ঠিক করা হলে তাঁরা ফিরবেন না দুর্গা পিতুরী লেনের ঠিকানায়। কারণ ভবিষ্যতে বড় দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি থেকেই যাবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bowbazar House Collapse, Bowbazar metro, Bowbazar Tragedy