#কলকাতা: জায়গাটার নাম সোনাপট্টি। বউ বাজারের দুর্গা পিতুরি লেনের বেশকিছু বাড়িতে তৈরি হয় সোনার গয়না। এই শিল্পের সাথে যুক্ত প্রচুর কারিগর। গত ১১ তারিখ পুরনো স্মৃতি ফের উস্কে ওঠে নতুন করে কয়েকটি বাড়িতে ফাটল ধরায়। প্রশাসনের তরফে দ্রুত এলাকা খালি করতে বলা হয়। তড়িঘড়ি জীবন বাঁচাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে হয়। হাতের কাছে যা কিছু রয়েছে সেটাকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়তে হয়। পরেও একাধিক বার সেই বাড়িতে ঢুকলেও সব কিছু উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আর এর ফলে সব চাইতে বেশি সমস্যায় পড়েছেন সোনার কারিগররা। কারণ তাঁদের পক্ষে পুরো সোনা বের করে আনা সম্ভব হয়নি। ফলে সেই সব বাড়িগুলিতে এখনও প্রচুর সোনা রয়ে গিয়েছে। নিরাপত্তার কারণে যা উদ্ধার করাও সম্ভব হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: বাড়িটা ঠিক আছে তো এখনও? স্কুল ড্রেস পরে বাড়ি দেখতে এল ছোট্ট অংশুমান
সোনার কারিগর তপন জানা বলেন, "প্রশাসনের তরফ থেকে যখন বাড়ি ছেড়ে আসার ঘোষণা করা হচ্ছিল তখন জীবন বাঁচাতে কোনও কিছু না ভেবেই বেড়িয়ে পড়তে হয়েছিল। পরে একবার ভিতরে ঢোকার সুযোগ হলে কিছু সোনা বের করে আনা গিয়েছে। কিন্তু পুরোটা বের করা যায়নি। ছোট ছোট গয়নার অংশ সব বের করে আনা কার্যত অসম্ভব। প্রথমে আমরা জীবন বাঁচাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরে মনে হয়েছে। সোনাগুলো পুরোটাই মালিককে বুঝিয়ে দিতে হবে। কারণ মালিকও দোকান থেকে সোনা ও কাজ নিয়ে আসে। তাঁকেও দোকানে সোনা বুঝিয়ে দিতে হবে। এখন সেই সোনা না পেলে আমরা কী করে দেবো সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না। আমরা সামান্য কারিগর লক্ষ লক্ষ টাকার সোনা এনে কাজ করি। সেই টাকা কীভাবে যোগাড় করব?"
আরও পড়ুন: পাতাল আতঙ্কে ঘরছাড়া শতাধিক! ভরসা দিতে বউবাজারে 'দুয়ারে কাউন্সিলর'
সোনাপট্টির আরেক কারিগর লক্ষ্মণ নায়েক বলেন, "আমাদের ব্যবসা পুরো বিশ্বাসের ওপর চলে। সোনা ফেরত দিতে না পারলে সেই বিশ্বাসযোগ্যতায় আঘাত লাগবে। কাজ পাওয়া কঠিন হবে। তাই জমি বাড়ি বিক্রি করে হলেও সোনা ঠিকই বুঝিয়ে দিতে হবে।" সোনা ব্যবসায়ী জিতেন পাল বলেন, "অনেক সোনা ওই বাড়িগুলোতে পড়ে আছে। আগেরবারও যখন এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিলো তখনও বেশকিছু সোনা ধংসস্তুপে মিশে গিয়েছিলো। অনেক ক্ষতি হয়েছিল কারিগরদের। এরপর এল লকডাউন। সেইসব ধাক্কা সামলে আবার যখন এই শিল্প উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে তখন আবার ধাক্কা লাগল। সোনা বুঝিয়ে দিতেই হবে। কেউ কোনও কথা শুনবে না। তাই নতুন করে চাপ সৃষ্টি হল সোনার কারিগরদের।
তবে এলাকার মানুষদের সব রকমের সাহায্য করার আস্বাস দিয়েছেন এলাকার কাউন্সিলর। অন্যদিকে, শুক্রবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন বিজেপির প্রতিনিধিরা। এলাকার বাসিন্দা ও সোনা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাঁরা।
UJJAL ROY
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।