আলোর উৎসবে আজও ওরা 'ঘরছাড়া', বউবাজারের ক্ষতিগ্রস্তদের 'অন্ধকার' দীপাবলি!

Last Updated:

প্রতিশ্রুতি পালনের ক্ষেত্রে গুরুতর অভিযোগ। কবে ফিরতে পারব নিজেদের ভিটে মাটিতে? প্রশ্ন আছে, উত্তর অজানা।

বউবাজারের ক্ষতিগ্রস্তদের 'অন্ধকার' দীপাবলি!
বউবাজারের ক্ষতিগ্রস্তদের 'অন্ধকার' দীপাবলি!
#কলকাতা:  আলোর উৎসবেও ওরা আজও 'ঘরছাড়া'। ভেবেছিলেন এবার দীপাবলিতে ফিরতে পারবেন নিজেদের ভিটে মাটিতে। কিন্তু ফের নতুন করে বিপর্যয় সেই আশায় জল ঢেলে দিল।  ২০১৯-এ  বউবাজার মেট্রো বিপর্যয়ে রাতারাতি ঘরছাড়া হতে হয়েছিল বেশ কয়েকটি পরিবারকে। সেই সময় প্রাথমিকভাবে শহরের বেশ কিছু হোটেলে ঠাঁই হয়েছিল সেই সমস্ত ঘরছাড়াদের।
নতুন করে ফের বিপর্যয়। প্রথম বিপর্যয়ের পর ক্ষতিপূরণ এবং ঘরছাড়াদের চুক্তি মোতাবেক হোটেলের ঠিকানা বদলে ঘরছাড়া পরিবারদের আপাতত অস্থায়ী ঠিকানা হিসেবে কেএমআরসিএল  কর্তৃপক্ষ ঘরছাড়া পরিবারদের রাখার জন্য বিভিন্ন ফ্ল্যাট-বাড়ির ব্যবস্থা করে। কিছু ক্ষেত্রে মেট্রো কর্তৃপক্ষ নিজেই সেই সমস্ত বাড়ির বা ফ্ল্যাট মালিকদের সঙ্গে বাড়ি ভাড়ার চুক্তি করে। কিছু ঘরছাড়াদের নির্দিষ্ট চুক্তিপত্র বানিয়ে ভাড়া বাড়ির মালিকদের সঙ্গে ঘরছাড়াদের চুক্তিপত্র ( Non judicial stamp paper ) মোতাবেক বাড়ি ভাড়ার টাকা মেটানোর আশ্বাস দেয় মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।
advertisement
আরও পড়ুন: প্রতি মাসে ১০০ টাকা ডোনেশন দিতে হবে পড়ুয়াদের, কর্নাটক সরকারের নিয়মে বিতর্ক
আশ্বাস মতো ২০১৯ থেকে ঘরছাড়া এমন সমস্ত পরিবারদের বাড়ি ভাড়া আজও মিটিয়ে আসছে তারা। কিন্তু সেই চুক্তিপত্রে স্পষ্ট লেখা আছে, ১১ মাসের যে এগ্রিমেন্ট সেই  এগ্রিমেন্ট পুনর্নবীকরণ-এর সময় যা বাড়ি ভাড়া তার ১০ শতাংশ করে প্রতি ১১ মাস অন্তর বাড়ি ভাড়া বাড়াতে হবে। আর এরপর থেকেই শুরু সমস্যা। ঘোর বিপদে পড়েছেন ঘরছাড়াদের অনেকেই। চুক্তিপত্র মেনে কোন পরিবারকে ১৮ হাজার বা কোন পরিবারকে তারও বেশি বাড়িভাড়া কেএমআরসিএল মেটালেও এগ্রিমেন্ট পুনর্নবীকরণের পর যে বর্ধিত বাড়িভাড়া তা মেটাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মাসের-পর-মাস সেই বর্ধিত বাড়ি ভাড়া নিজেদের পকেট থেকে দিতে হচ্ছে ঘরছাড়াদের।
advertisement
advertisement
যেমন নন্দী পরিবার। বউবাজারের 92B, bb ganguli st. এর  এই পরিবার ২০১৯-এর মেট্রো বিপর্যয়ের পর থেকে আজও ঘরছাড়া। বর্তমানে এই পরিবারের ঠিকানা 41c , bechu chatterjee st.  ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই বহুতল আবাসনে তাদের এখন অস্থায়ী ঠিকানা। দু'হাজার কুড়ি সালের ১৫ নভেম্বর থেকে চুক্তিপত্র মোতাবেক প্রতি মাসে ১০ শতাংশ  বর্ধিত বাড়ি ভাড়া এই পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যকে  মেটাতে হচ্ছে বাড়ির মালিককে। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে বারবার আবেদন-নিবেদন করেও আজও বর্ধিত বাড়ি ভাড়া দিচ্ছে না তারা বলে অভিযোগ।
advertisement
আরও পড়ুন: ছত্তীসগঢ়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নার্সকে বেঁধে রেখে গণধর্ষণ, ধৃত ৩ জনের এক নাবালক!
এই অবস্থায় চরম আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন সৌমিক নন্দী। অসহায় অবস্থায় নিরুপায় হয়ে অন্যত্র মাথা গুঁজে থাকলেও এদের সবারই মন পড়ে আছে বউবাজারে। প্রথম প্রথম কী সমস্যা কী প্রয়োজন এসবের খোঁজ নিলেও এখন আর মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ কোন খোঁজখবর নেয় না। সমস্যার কথা জানালেও নিরুত্তর থাকে।  কথা দিয়েও এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী বর্ধিত বাড়ি ভাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ না মেটানোয়  হিমশিম অবস্থা। বাড়িতে অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা-মা ও অন্যান্য পরিবার পরিজন নিয়ে কী করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না সৌমিক বাবু। তবে শুধু এই পরিবারই নয়, এইরকম ভুরিভুরি অভিযোগ সামনে আসছে।
advertisement
যেমন দুর্গা পিটুরি লেনে যে ঠাকুরদালান ছিল সেখানকার দেবদেবীদেরও আজ ঠাঁই হয়েছে অন্যত্র। বিপর্যয়ের সময় মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ বলেছিল, ঠাকুরদালানেরও অস্থায়ী পুনর্বাসন দেওয়া হবে। কিন্তু কথা রাখেনি তারা। ঠাকুরদালানের দেখভাল করা  ঘরছাড়া আবাসিকদের অস্থায়ী ফ্লাট বাড়ির  টাকা চুক্তি অনুযায়ী মেটালেও একদিকে যেমন বর্ধিত বাড়ি ভাড়া মিলছে না অন্যদিকে, এই সমস্ত বিভিন্ন ঠাকুর দেবতার জন্য দুটি ফ্ল্যাটের ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে  ৪১ হাজার ৫০০ টাকা নিজেদের পকেট থেকে বাড়ির মালিককে মেটাতে হচ্ছে। অথচ সেই সময় অস্থায়ী ঠাকুরদালানের বন্দোবস্ত করার কথা বলা হলেও আজ সে ব্যাপারে নীরব ভূমিকা। একদিকে যেমন কবে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারবেন? বাড়িতে থাকা  জিনিসপত্রের কী হবে? আদৌ নিজেদের ভিটেমাটিতে ফিরতে পারবেন কিনা? ভবিষ্যৎ কী? প্রতি মুহূর্তে এই সমস্ত প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ঘরছাড়াদের মনে।
advertisement
তখন এই চুক্তিপত্রে প্রতি ১১ মাস অন্তর এগ্রিমেন্ট এর পুনর্নবীকরণ হয়ে ১০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির উল্লেখ থাকলেও তা মিলছে না। সব মিলিয়ে এক চরম অনিশ্চয়তাকে  সঙ্গী করেই দিন গুজরান করছেন  আজ বহু পরিবার। শক্তির আরাধনা ও আলোর উৎসবে কার্যত অন্ধকারেই দিন কাটছে অনেক পরিবারের। অনেকেই ভেবেছিলেন এবারের দীপাবলিটা অন্তত নিজের ঘরেই কাটাতে পারবেন। কিন্তু নতুন করে সম্প্রতি ফের বউবাজারের মেট্রো বিপর্যয় সব হিসেব-নিকেশ উল্টে পাল্টে দিল। কবে ফিরতে পারবো নিজেদের বাড়িতে? প্রশ্ন আছে, উত্তর জানা নেই ঘরছাড়াদের।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
আলোর উৎসবে আজও ওরা 'ঘরছাড়া', বউবাজারের ক্ষতিগ্রস্তদের 'অন্ধকার' দীপাবলি!
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement