ইস্তানবুল: গতকাল ভোররাতে তুরস্ক- সিরিয়ায় প্রবল কম্পনের পর ধ্বংসস্তূপের ছবি দেখে অনেক বিশেষজ্ঞই আশঙ্কা করেছিলেন, এটিই শতাব্দীর অন্যতম ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প৷ যত সময় যাচ্ছে, সেই আশঙ্কাকে সত্যি করেই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা৷ দুই দেশ মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই চার হাজার ছাড়িয়েছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংখ্যার আশঙ্কা, ভয়াল ভূমিকম্পের জেরে তুরস্ক এবং সিরিয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংখ্যার এই আশঙ্কাকে একেবারে অমূলক বলা চলে না৷ কারণ ভূমিকম্পের পর কমবেশি চব্বিশ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও উদ্ধারকাজের অনেকটাই বাকি৷ কারণ বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ঘর, বাড়ি, বহুতল ভেঙে তৈরি হওয়া ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও অসংখ্য মানুষ চাপা পড়ে রয়েছেন৷ যত সময় যাচ্ছে, তাঁদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও কমছে৷
আরও পড়ুন: মেঝেয় রাখা সার সার দেহ, প্রিয়জনদের জন্য হাহাকার, ভূমিকম্পের পরে সিরিয়া যেন শ্মশান
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওতকে জানিয়েছেন, সেদেশে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৭৯৷ আহতের সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি৷ অন্যদিকে সিরিয়ায় সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ১৪৪৪৷ সেখানেও আহতের সংখ্যা কয়েক হাজার৷ যদিও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বেশি বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ সিরিয়ায় ভূমিকম্প কবলিত একটি বড় অংশ রয়েছে বিদ্রোহীদের হাতে। সেখানে সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।কিন্তু সেই সমস্ত এলাকাতেও ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফলে ওই এলাকায় হতাহতের সংখ্যা এখনও পাওয়া যায়নি। সরকারি মতে, সিরিয়ায় আহতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার।
আরও পড়ুন: মৃত্যুপুরী তুরস্ক-সিরিয়া, মৃতের সংখ্যা ১৪০০ পার! উদ্ধারকারী দল পাঠাচ্ছে ভারত
এরই মধ্যে উদ্ধারকাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তীব্র ঠান্ডা। তুরস্কের পাশে দাঁড়িয়ে ইতিমধ্যেই ভারত সহ একাধিক দেশ উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে। কিন্তু প্রবল ঠান্ডার মধ্যে প্রত্যাশিত গতিতে উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। মনে করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ট থেকে ১৮ কিলোমিটার গভীরে এই কম্পনের উৎসস্থল ছিল৷ গতকাল স্থানীয় সময় ভোর ৪.১৭ মিনিটে প্রথমবার তুরস্কে কম্পন অনুভূত হয়৷ রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.৯৷ ভোররাতে ভূমিকম্প হওয়ায় ঘুমের মধ্যেই ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়েন অসংখ্য মানুষ৷ গাজিয়ানটেপ শহরে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের বাস৷ প্রায় গোটা শহরটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে৷ এর পরে একাধিকবার জোরালো কম্পনে গতকাল কেঁপে উঠেছে তুরস্ক৷ লেবানন, গ্রিনল্যান্ড, গ্রিস, সাইপ্রাস সহ বিভিন্ন দেশেও কম্পন অনুভূত হয়েছে৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।