Coronavirus Affects Brain: প্রভাব পড়ে মারাত্মক, করোনাভাইরাস কীভাবে ক্ষতি করছে আক্রান্তের মস্তিষ্কের?

Last Updated:

Corona Affects Brain: এই ভাইরাস মস্তিষ্ক সহ শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে বলে জানা গিয়েছে গবেষণায়।

#নয়াদিল্লি: নাক দিয়ে ঢুকে মস্তিষ্কে ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলছে করোনাভাইরাস, চিন্তা বাড়ছে চিকিৎসকদের। সদ্য প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে বেশ কিছু স্নায়ুর সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অন্তত এমনই বার্তা দিচ্ছে নেচার নিউরোসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত নয়া গবেষণা।
করোনাভাইরাস কান দিয়ে মানুষের মস্তিষ্কের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। ফলে গন্ধ, স্বাদের ক্ষমতা হ্রাস, মাথাব্যথা, অবসন্নতা, বমি বমি ভাব এবং স্নায়ুবিক কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। গুরুতর বা হালকা কোভিড ১৯ (COVID-19) সংক্রমণ মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করতে পারে মারাত্মকভাবে।
মারণ করোনাভাইরাসের প্রভাব সরাসরি ফুসফুসে পড়ে সে কথা আগেই প্রমাণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার নতুন তথ্য সামনে এল এই রোগ নিয়ে। গবেষকরা সতর্ক করে জানিয়েছেন যে করোনাভাইরাসের জেরে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন- উপসর্গহীন সংক্রমণও কি নিয়ে যেতে পারে লং কোভিডের দিকে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
গবেষকরা এও জানিয়েছে নতুন প্রমাণ হিসাবে প্রস্তাবিত কোভিড–১৯ সাইকোসিস এবং প্রলাপ সহ গুরুতর স্নায়বিক জটিলতার কারণ হতে পারে। গবেষণা বলছে, কোনও নির্দিষ্ট রোগীর ন্যাসো ফ্যারিংস্কে কিছু ভাইরাসের উপাদান মিলেছে। যা তাঁর মস্তিষ্কেও পাওয়া গিয়েছে।
এমনভাবে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস কতদিন থাকতে পারে? শরীরে ভাইরাসের পরিমাণ এবং ধরনের ওপর নির্ভর করছে এই রোগ কতদিন টিকে থাকবে।
advertisement
করোনাভাইরাসের মস্তিষ্কে প্রভাব
যদিও সার্স-কোভ-২ (SARs-COV-2) ভাইরাস শ্বাসযন্ত্রের ক্ষতি করে অসুস্থতা বৃদ্ধি করে শরীরের, এই ভাইরাস মস্তিষ্ক সহ শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে বলে জানা গিয়েছে গবেষণায়।
এটি মস্তিষ্কে হালকা থেকে গুরুতর প্রদাহ, স্ট্রোক এবং খিঁচুনি সৃষ্টি করে, যা স্নায়বিক রোগের সৃষ্টি করে। রোগীরা তাদের সুস্থতার পরেও মানসিক বিভ্রান্তি, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা এবং ঝাপসা দৃষ্টির মতো লক্ষণগুলির শিকার হয়।
advertisement
বলা হচ্ছে এন্ডোথেলিয়াল ও স্নায়বিক কোষের মধ্যে দিয়েই ভাইরাসের প্রভাব পড়ছে মস্তিষ্কেও। গবেষণায় দেখা গিয়েছে স্নায়ুতন্ত্রের বহু জায়গায় সার্স কোভিড ছড়িয়ে পড়ছে। মেডুলা অবলংগাটা সহ একাধিক জায়গায় এটি ছড়াতেই বিপদ ঘটছে। এখনো পর্যন্ত দেখা গিয়েছে করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্কে এই ভাইরাসের গভীর প্রভাব পড়ে।
মস্তিষ্কের সংকোচন এবং টিস্যুর ক্ষতি
advertisement
ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ডের গবেষকরা ইউকে বায়োব্যাঙ্ক থেকে সংগৃহীত ডেটা দেখেছেন। তাঁরা ব্রেন ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (MRI) স্ক্যান এবং ৫১ থেকে ৮১ বছর বয়সী ৭৮৫ জন মানুষের মস্তিষ্কের কার্যকারিতার পরীক্ষাগুলির ফল নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন।
মোট রোগীদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় ৪০১ জন কোভিডে সংক্রামিত হয়েছিল। যার মধ্যে ১৫ বা প্রায় ৪ শতাংশ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
advertisement
তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে যারা সংক্রামিত হয়েছিল তাঁদের মস্তিষ্কের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে এবং গ্রে ম্যাটার সঙ্কুচিত হয়েছিল। যা মস্তিষ্কের আয়ু কমিয়ে দেয়।
প্রভাব কেমন ছিল?
নেচার জার্নালে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গিয়েছে যাঁরা এই ভাইরাসের জন্য পরীক্ষা করেছিলেন তাঁরা প্যারাহিপোক্যাম্পাল গাইরাসের অতিরিক্ত ১.০৮ শতাংশ হারিয়েছেন। যার ফলে স্মৃতি এবং গন্ধ ও স্বাদের যথার্থ উপলব্ধি করতে পারে না রোগী। এই গুরুত্বপূর্ণ অরবিফ্রন্টাল কর্টেক্স মানুষের শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
advertisement
যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা গন্ধ হ্রাসের মতো লক্ষণগুলি জানিয়েছেন গবেষণায়। মানসিক ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত মস্তিষ্কের কোষ বা টিস্যুর একটি বৃহত্তর ক্ষতি এই ভাইরাস করে।
লন্ডন কলেজ ইউনিভার্সিটির গবেষকদের সমীক্ষাতে বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে যে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত ৪৩ জন রোগীর ক্ষেত্রে অস্থায়ীভাবে তাঁদের মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে, স্ট্রোক, স্নায়ুর ক্ষতি অথবা অন্য কোনও মস্তিষ্কের প্রভাব দেখা দিয়েছে। গবেষণায় এটা নতুনভাবে যুক্ত করা হয়েছে যে এই মারণ রোগ মস্তিষ্কে ক্ষতি করে।
আরও পড়ুন- অতীতে ধ্বংস হয়েছে হিউম্যান করিডর! এবার কি রক্ষা পাবেন ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকরা?
কানাডার ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুবিজ্ঞানী আদ্রিয়ান ওয়েন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‌কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত লক্ষাধিক মানুষকে নিয়ে চিন্তার কারণ রয়েছে। এক বছরের মধ্যে যদি ১০ মিলিয়ন মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং তাঁদের মধ্যে যদি তখন জ্ঞানের ঘাটতি থাকে তবে সেটার প্রভাব পড়বে তাঁদের কাজে এবং দৈনন্দিন জীবনে তাঁদের কার্যক্রমের ওপর।'‌
ইউসিএলের এই সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল ব্রেনে। এই সমীক্ষার জন্য ৯ জন রোগীকে পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাঁদের মস্তিস্কের প্রদাহজনিত তীব্র প্রসারিত এনকেফালোমিলাইটিস বা অ্যাডেম নামক একটি বিরল অবস্থার সঙ্গে সনাক্ত করা হয়েছিল যা সাধারণত শিশুদের মধ্যে দেখা যায় এবং তা ভাইরাল সংক্রমণের মাধ্যমে হয়।
গবেষকদের দল জানান যে লন্ডন ক্লিনিকে অ্যাডেম রয়েছে এমন একজন প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর দেখা সাধারণত পাওয়া যায়। কিন্তু সমীক্ষার সময় এক সপ্তাহে এই অ্যাডেম রোগীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে, যা গবেষকরা উদ্বেগজনক বৃদ্ধি বলে বিশ্লেষণ করেছেন।
সমীক্ষায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই উপসর্গগুলি বয়স্ক ব্যক্তিদের এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি ছিল। হালকা থেকে উপসর্গহীন সংক্রমণও একইভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। যদিও এই বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
গন্ধ পাচ্ছেন না অনেকেই, অনেকের ক্ষেত্রেই এই অনুভূতি ফিরে আসতে সময় লাগছে। বা কেউ সেরে গিয়ে কোভিড নেগেটিভ হওয়ার পরও গন্ধের অনুভূতি ফিরে পাননি মাস দুই-তিন পরেও।
কারও ক্ষেত্রে স্বাদের সমস্যা হচ্ছে। কোভিড এনকেফালাইটিসের রোগী ২ থেকে ৩ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের কোষ থেকে কোভিড ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। কোভিড রক্তে ছড়িয়ে পড়লে যে কোনও জায়গায় যেতে পারে, তাই প্রভাব পড়ছে মস্তিষ্কেও।
সরাসরি মস্তিষ্কে সংক্রমণ হতে পারে বা প্যারা ইনফেকশন কমপ্লিকেশন হতে পারে। তবে শুধু সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম বা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র এবং পেরিফেরাল নার্ভাস সিস্টেমেও প্রভাব পড়তে পারে কোভিডের জন্য।
মানসিক বিভ্রান্তি, অ্যালজাইমার্স
মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত এই রোগের সবচেয়ে সাধারণ দীর্ঘমেয়াদী লক্ষণগুলির মধ্যে অন্যতম মানসিক বিভ্রান্তি। আলজাইমার্স এবং পারকিনসন রোগ কোভিডের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবগুলির মধ্যে অন্যতম।
খুব মাথা ব্যথা, আচমকা স্ট্রোক, কোনও কো-মর্বিডিটি নেই, ডায়াবিটিস-হাইপারটেনশন-ওবেসিটি নেই, বয়স একেবারেই অল্প, এমন করোনা-আক্রান্ত রোগীরও সন্ধান মিলেছে লকডাউনে। এক জনের বয়স ২৫, অনেকেরই বয়স ৪০-এর নিচে। রুটিন চেক-আপের সময় ধরা পড়েছে কোভিড। কারও ক্ষেত্রে শুরুতে স্ট্রোক ছিল, রুটিন চেক-আপে কোভিড এসেছে।
কেউ নিউমোনিয়া নিয়ে এসেছেন, করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে, হাসপাতালে ৭-১০ দিন পর স্ট্রোক হয়েছে, এমনও তথ্য পাওয়া গেছে গবেষণায়। অল্পবয়সিদের ক্ষেত্রেও তাই একইরকম সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
মস্তিষ্কের শিরা ও ধমনীর ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলছে এই ভাইরাস। এর থেকে রক্তপ্রবাহ সংকোচন হলে রক্ত চলাচলে সমস্যা হচ্ছে, অক্সিজেনের সরবরাহ কমে যাচ্ছে। সে জন্য দ্রুত প্রভাব পড়ছে মস্তিষ্কে। কোভিডের সঙ্গে স্ট্রোকে তাই প্যারালাইসিসের পরিমাণও অনেক বেশি। তাই কোনও রকম সমস্যা হলে করোনা আবহে প্রথমেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছেন গবেষকরা।
গবেষণার আর এক সহ-নেতৃত্বদানকারী গবেষক রস প্যাটারসন বলেন, ‘‌এই রোগটি কয়েক মাস ধরেই মানুষকে সংক্রমিত করছে বলে জানি, তবে আমরা এটা জানি না যে কোভিড-১৯ কত দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করতে পারে।'‌ তিনি আরও বলেন, ‘‌সম্ভাব্য স্নায়বিক প্রভাব সম্পর্কে চিকিৎসকদের সচেতন থাকতে হবে, প্রাথমিক রোগ নির্ণয় রোগীর ফলাফল উন্নতি করতে পারে।'‌
ওয়েন জানিয়েছেন যে উদীয়মান প্রমাণগুলি স্নায়ু এবং মনোবিদ জটিলতা কতটা সাধারণ ছিল তা নির্ধারণের জন্য বৃহত্তর, বিশদ গবেষণা এবং বিশ্ব জুড়ে ডেটা সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
মস্তিষ্কে প্রভাবে ড্রপলেটের ভূমিকা
ন্যাশভিল-এর ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম শ্যাফনারের মতে, রোগাক্রান্ত মানুষের হাঁচি-কাশির ড্রপলেট বায়ুতে ঘুরে বেড়ায়।
রোগীর কাছাকাছি থাকা সুস্থ মানুষের নাক, মুখ ও চোখের মাধ্যমে তার শরীরে প্রবেশ করে এই ড্রপলেট। শরীরে এসেই ভাইরাসের অণুগুলো দ্রুত নাসাপথের পিছন দিকে বা গলার ভিতরের দিকে মিউকাস মেমব্রেনের ভিতরে গিয়ে সেখানকার কোষে হানা দেয়। সেই কোষই তখন হয়ে যায় গ্রাহক বা রিসেপ্টর কোষ।
করোনাভাইরাসের দেহতল থেকে উঠে আসা বা স্পাইকের আকারে অবস্থান করা প্রোটিনকণাগুলো কোষের আস্তরণকে আঁকড়ে ধরে ভাইরাসের জিনগত উপাদানকে সুস্থ মানুষটির দেহকোষে প্রবেশ করতে সাহায্য করে।
ভাইরাসের এই জিনগত উপাদানগুলি কোষের বিপাক ক্ষমতার উপর একপ্রকার দখল নিয়ে কোষকে নির্দেশ দেয় ‘ভুলভাল’ কাজ করার জন্য। ‘ভুলভাল’ কাজ মানে? কোষকে নিয়ন্ত্রণ করেই সে তাকে দিয়ে সেই ভাইরাসের বৃদ্ধি ও বেড়ে ওঠায় সাহায্য করতে কোষকে বাধ্য করে।
বাংলা খবর/ খবর/Explained/
Coronavirus Affects Brain: প্রভাব পড়ে মারাত্মক, করোনাভাইরাস কীভাবে ক্ষতি করছে আক্রান্তের মস্তিষ্কের?
Next Article
advertisement
'আমি শিবভক্ত, সব বিষ গিলে নিই...', অসমের জনসভায় বললেন মোদি, তাঁর 'রিমোট কন্ট্রোল' কে? চিনিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী!
'আমি শিবভক্ত, সব বিষ গিলে নিই...', 'রিমোট কন্ট্রোল' কে? অসমের জনসভায় চিনিয়ে দিলেন মোদি
  • অসমের জনসভায় কংগ্রেসকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী

  • মোদি বলেন, জনগণই তাঁর আসল প্রভু এবং তাঁর ও ‘রিমোট কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রক’

  • অসমের দরং ও গোলাঘাটে ১৮,৫৩০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন

VIEW MORE
advertisement
advertisement