#নয়াদিল্লি: করোনাভাইরাসের (Coronavirus) ওমিক্রন প্রজাতি (Omicron Variant) বিশ্ব জুড়ে ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে। মাত্র এক মাসের কিছু বেশি সময়ে বিশ্বের বহু দেশে থাবা বসিয়েছে মারাত্মক সংক্রামক এই প্রজাতি। ভারতেও ওমিক্রন সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সর্বত্রই চিন্তিত যে, কোভিডের সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার (Health Systems) উপর বিপুল চাপ আসতে চলেছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মতো পরিস্থিতি হতে পারে যদি না-সংক্রমণের গতি রোখা যায়। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় এই ছবি ভারতে দেখা গিয়েছিল।
কিন্তু এখনও অবধি যা জানা গিয়েছে, তাতে ওমিক্রনের প্রভাবগুলি কম গুরুতর। ওমিক্রনের কারণে হালকা সংক্রমণ হচ্ছে, বেশির ভাগ সংক্রমিতকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন ওমিক্রন প্রজাতি অত্যন্ত সংক্রমণযাগ্য হলেও ডেল্টার (Delta Variant) মতো বিপজ্জনক নয়। এটি তুলনায় হালকা সংক্রমণ সৃষ্টি করছে। যাই হোক, এটি বলা যায় যায় না যে, জটিলতাগুলি একেবারেই হবে না। ওমিক্রনের উপসর্গগুলি যতটা ক্ষতিকারক, তার চেয়েও বেশি বিরক্তিকর হতে পারে। যদি সময়মতো চিকিৎসা না-করা হয়, তবে এটি শ্বাসকষ্টের অন্যান্য জটিলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
ওমিক্রনের উপসর্গগুলিকে কি হালকা ভাবে নেওয়ার ঝুঁকি নিতে পারি?
ওমিক্রন সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত পর্যন্ত জ্বর, কাশি, সর্দি এবং শরীরে ব্যথা-সহ ঠান্ডা লাগার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। বেঙ্গালুরুর অ্যাস্টার আরভি হাসপাতালের চিকিৎসক পবন যাদবের (Pavan Yadav) মতে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ওপিডি স্তরেই রোগীদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। ওমিক্রনের ক্ষেত্রে অক্সিজেনের মাত্রা (Oxygen Levels) কমে যাওয়ার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনা প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় কম। তবে তিনি কোমর্বিডিটি থাকা বয়স্ক ব্যক্তিদের এই প্রজাতির বিরুদ্ধে সতর্ক করছেন এবং বয়স্কদের অতিরিক্ত যত্ন নেওয়ার কথা বলেছেন।
মণিপাল হাসপাতালের (Manipal Hospital) চিকিৎসক রাজেন্দর সাইনি (Rajender Saini)-র মতে, ওমিক্রনের উপসর্গ যতই হালকা হোক না-কেন, সুরক্ষায় ঢিলেমি দিলে হবে না। একটা ভাইরাসের প্রজাতির তীব্রতা সম্পর্কে খুব তাড়াতাড়ি ভবিষ্যদ্বাণী করা ঠিক নয়। এটাও অনুমান করা ঠিক নয় যে, আগামী দিনেও ওমিক্রনের কারণে হালকা সংক্রমণ হবে। কাশি হল সব কোভিড প্রজাতির জন্য একটি সাধারণ উপসর্গ: কোভিড একটি শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতা, যার কারণে হালকা থেকে মাঝারি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, সংক্রমণের তীব্রতার হার বেশি হতে পারে। যার ফলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, অনেকের মৃত্যু পর্যন্ত হয়। যতটা জানা গিয়েছে, তাতে বলা হচ্ছে যে, নতুন করোনাভাইরাস প্রজাতি ওমিক্রন এখনও পর্যন্ত এটি উপরের শ্বাসযন্ত্রের সিস্টেমকে প্রভাবিত করে। যার ফলে চুলকানি, গলা ব্যথা এবং কাশির (Cough) মতো উপসর্গ দেখা দেয়। শুষ্ক কাশি কোভিডের সাধারণ উপসর্গ। ল্যানসেট-র (Lancet) গবেষণা অনুসারে, ৬০-৭০ শতাংশ উপসর্গযুক্ত করোনাভাইরাস রোগীদের মধ্যে প্রাথমিক উপসর্গ হিসাবে শুষ্ক কাশি দেখা যায়। যেহেতু ওমিক্রন গলায় বহুগুণ বেড়ে যায়, তাই এটি গুরুতর নিউমোনিয়া সৃষ্টি করবে না। ওমিক্রনের উপসর্গগুলি ডেল্টার তুলনায় হালকা, তবে তুলনায় ৭ গুণ সংক্রমণযোগ্য। এর অর্থ এটি সম্ভবত বেশি লোককে সংক্রমিত করতে পারে, তবে গুরুতর সংক্রমণ, হাসপাতালে ভর্তি বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে না। তবে, এই বিষয়ে আরও জানতে অনেক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
শুষ্ক, ক্রমাগত কাশি মোকাবিলা করার উপায়:
কাশি অবশ্যই অস্বস্তিকর ও কষ্টদায়ক হতে পারে। কাশি হল শ্বাস-প্রশ্বাসের পথ পরিষ্কার করার জন্য শরীরের প্রক্রিয়া। শ্লেষ্মা, পরাগ, ধোঁয়া বা অ্যালার্জেনের মতো বিরক্তিকর উপাদানগুলিকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষামূলক ক্রিয়া। ডাক্তারি চিকিৎসা এবং প্রাকৃতিক, উভয় উপায়েই এর চিকিৎসা করা যেতে পারে। ডাক্তার সাইনির মতে, শুষ্ক ও ক্রমাগত কাশির ক্ষেত্রে অন্যান্য ফ্লু ভাইরাসের (Flu virus) মতোই চিকিৎসা করা যেতে পারে। গার্গলের সাহায্যে, অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ওষুধ ব্যবহার করে কেউ স্বস্তি পেতে পারে এবং শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য উপসর্গগুলি থেকে মুক্তি পেতে পারে। হাইড্রেটেড থাকা (শরীরে জলীয় ভাব), পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং পরিপূরকগুলির সাহায্যে অনাক্রম্যতা বৃদ্ধি করা কাশির চিকিৎসায় কিছু প্রাকৃতিক উপায়। যাইলহোক, গুরুতর ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা ইনহেলার/ডিকনজেস্ট্যান্ট লজেন্সের মতো ওষুধের পরামর্শ দেন।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, Omicron